খোলা বাজার থেকে ঋণ নেওয়ার সুযোগ বাড়াতে সংশ্লিষ্ট আইনটিই সংশোধনের পথে হাঁটছে রাজ্য সরকার। এজন্য ২০১০ সালের আর্থিক শৃঙ্খলা ও বাজেট ঘাটতি নিয়ন্ত্রণ আইনের একটি সংশোধনী আজ রাজ্য বিধানসভায় পাশ হয়। এই সংশোধনী আইনে পরিণত হলে রাজ্য সরকার রাজ্যের মোট আভ্যন্তরীণ উৎপাদনের ৪ শতাংশ পর্যন্ত ঋণ নিতে পারবে। সংশোধনীর কড়া সমালোচনায় সরব বিরোধীরা।
বিলের সংশোধনী সংক্রান্ত আলোচনায় অংশ নিয়ে রাজ্যের অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য জানান পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রকই রাজ্যের গড় অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গতি রেখে বাজার থেকে ঋণ নেওয়ার ঊর্ধ্বসীমা বাড়ানোর ছাড়পত্র দিয়েছে। তবে ঊর্ধ্বসীমা বাড়লেও রাজ্য বাজার থেকে বেশি ঋণ নেবে এমন কোন কথা নেই। যদিও বালুরঘাটের বিজেপি বিধায়ক বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ অশোক লাহিড়ী জানান, এতদিন পর্যন্ত রাজ্য ৩ শতাংশ পর্যন্ত ঋণ নিতে পারত। কিন্তু বাস্তবে এই ঋণের পরিমাণ ছিল তার চেয়ে বেশি।
অর্থমন্ত্রী জানান কেন্দ্রীয় সরকারের ছাড়পত্র অনুযায়ী রাজ্য সরকার চলতি আর্থিক বছরের প্রথম ৬ মাসে বাজার থেকে ৬১ হাজার ১৮১ কোটি টাকা ঋণ নিতে পারত। কিন্তু ১০ই সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ঋণ নেওয়া হয়েছে ১৬ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। পাশাপাশি গড় অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের পরিমাণ বাড়ায় রাজ্যের ঋণের বোঝাও কমেছে বলে দাবি করেন তিনি। ২০২১-২২ অর্থবর্ষে রাজ্যর ঋণের পরিমাণ ৫ লক্ষ ২৮ হাজার কোটি টাকা। চলতি আর্থিক বছরের শেষে এই ঋণের পরিমাণ হতে পারে ৫ লক্ষ ৮৬ হাজার কোটি।
বিলের ওপর আলোচনায় অংশ নিয়ে বিরোধী সদস্যরা রাজ্যের বেহাল আর্থিক অবস্থা নিয়ে সরকারের কড়া সমালোচনা করেন। তাঁদের অভিযোগ, সংকট রাজ্য সরকারের নয়, রাজ্যের অর্থনীতির। বিলের বিরোধিতা করে বিজেপি বিধায়ক অশোক লাহিড়ী জানান, চপশিল্প থেকে যদি আর্থিক উন্নয়ন হয় তবে তা শিক্ষণীয়।
২০১০ সালে রাজ্য সরকার আর্থিক শৃঙ্খলা ও বাজেট ঘাটতি আইন এনেছিল। কিন্তু কার্যক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে সেই আইনের একটিও লক্ষ্য পূরণ হয়নি। তিনি অভিযোগ করেন, টাকা দিতে গিয়ে দেখা যাচ্ছে রাজকোষে অর্থ নেই। সে কারণেই খোলা বাজার থেকে রাজ্যকে বারবার ঋণ নিতে হচ্ছে। এমনটা চলতে থাকলে আগামী দিনে সরকারি কর্মচারীদের পেনশন ও বেতন দিতেও সরকারের কাছে টাকা থাকবে না