Placeholder canvas
কলকাতা শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪ |
K:T:V Clock

Placeholder canvas
CBI Investigation: কেন্দ্রে নিরপেক্ষ সিবিআই, রাজ্যে নিরপেক্ষ পুলিশ, কেউ কি চায়?
শুভাশিস মৈত্র Published By:  • | Edited By:
  • প্রকাশের সময় : বুধবার, ৬ এপ্রিল, ২০২২, ০৩:০৭:৪৬ পিএম
  • / ৫৬৩ বার খবরটি পড়া হয়েছে
  • • | Edited By:

ভারতের প্রধান বিচারপতি নুথালাপতি বেঙ্কট রমাণা (এন ভি রামাণা) সম্প্রতি সিবিআই-এর একটি অনুষ্ঠানে বলেছেন, সিবিআই অফিসারদের এবং রাজ্যে রাজ্যে পুলিশ বাহিনীকেও, অপরাধ দমনে এবং তদন্তের ব্যাপারে নিরপেক্ষতা বজায় রাখার স্বার্থে রাজনৈতিক নেতাদের সঙ্গে তাদের সম্পর্ক (নেক্সাস) ছিন্ন করতে হবে। এই ‘নেক্সাস’ শব্দটি ভালো অর্থে ব্যবহার করেননি তিনি। সিবিআই, ইডি সহ কেন্দ্রীয় গোয়ান্দা সংস্থাগুলি এবং সব রাজ্যের পুলিশ, সবার বিরুদ্ধেই প্রতিনিয়ত অভিযোগ উঠছে নিরপেক্ষতা ভুলে শাসকদলের এজেন্ট হিসেবে কাজ করার। এন ভি রামাণা মনে করিয়ে দিয়েছেন, শাসকদল আসবে, যাবে, কিন্তু প্রতিষ্ঠান থাকবে। তাই প্রতিষ্ঠানকে রক্ষা করতে হবে গণতন্ত্রের স্বার্থে। প্রধান বিচারপতির পরামর্শ, সিবিআই, ইডি সহ এই ধরনের সংগঠনগুলিকে একটি ছাতার তলায় নিয়ে আসা দরকার। এবং তারা যাতে স্বাধীন ভাবে কাজ করতে পারে তার জন্য নতুন আইন দরকার।

কিন্তু এই কাজ করবে কে? যেমন কোনও রাজ্য সরকার চাইবে না শাসকদলের নেতা মন্ত্রীদের কথায় নয় পুলিশ কাজ করুক স্বাধীন ভাবে, তেমনই কেন্দ্রের কোনও শাসকদলও চাইবে না সিবিআই, ইডির মতো সংস্থাকে কাজের ব্যাপারে আরও স্বাধীনতা দেওয়া হোক। প্রধান বিচারপতি এন ভি রামাণার সিবিআই সম্পর্কে মন্তব্য যে ঠিক নয়, তা যেমন কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী কিরণ রিজিজু বিবৃতি দিয়ে জানিয়ে দিয়েছেন, তেমনই পশ্চিমবঙ্গের বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদারও বলে দিয়েছেন এন ভি রামাণা ঠিক বলছেন না। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অবশ্য এন ভি রামাণার রাজ্যের পুলিশ নিয়ে করা মন্তব্য এড়িয়ে গিয়ে সিবিআই, ইডি বিষয়ে করা মন্তব্যকে সমর্থন জানিয়ে একাধিক বিবৃতি ইতিমধ্যেই দিয়েছেন।

 

সিবিআইকে যে দলীয় স্বার্থে বিরোধীদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা যায়, সেটা আমাদের প্রথম চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছিলেন ইন্দিরা গান্ধী এবং তাঁর পুত্র সঞ্জয় গান্ধী জরুরি অবস্থার সময়। জরুরি অবস্থা উঠে গেল, ইন্দিরা হেরে গেলেন। জনতাপার্টির সরকার হল। মোরার্জি দেশাই প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রিসভায় আদবাণী-বাজপেয়ী। জনতাপার্টির সরকার জরুরি অবস্থার বাড়াবাড়ি নিয়ে দোষীদের চিহ্নিত করতে সুপ্রিম কোর্টের প্রাক্তন প্রধান বিচারপতি জয়ন্তিলাল ছোটালাল শাহ-র নেতৃত্বে শাহ কমিশন গঠন করলেন। বিচারপতি শাহ তাঁর রিপোর্টে সিবিআইকে স্বাধীন সংস্থা তৈরি করার ব্যাপারে নির্দিষ্ট মতামত দিলেন, যাতে ভবিষ্যতের ইন্দিরা গান্ধীর মতো আর কোনও শাসকদলের নেতা-নেত্রী সিবিআইকে বিরোধীদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করতে না পারে। কিন্তু দেখা গেল, সেসবে কান না দিয়ে জনতা পার্টিও সিবিআইকে নানা ভাবে ব্যবহার করা শুরু করে দিল। যদিও জনতাপার্টি সরকার শাহ কমিশনের পরামর্শ মেনে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিব লালন প্রসাদ সিংয়ের নেতৃত্বে একটি কমিটি তৈরি করেছিল সিবিআই সহ এই ধরনের গোয়েন্দাসংস্থাগুলিকে স্বাধীনতা দেওয়ার ব্যাপারে রিপোর্ট তৈরি করার জন্য। যেটা এল পি সিং রিপোর্ট নামে খ্যাত। বলা হয় সেটা একটি অতি উঁচু মানের রিপোর্ট হয়েছিল। কিন্তু সেই রিপোর্ট স্বরাষ্ট্র দফতরের আলমারি থেকে কেউই কোনও দিন বের করেনি। তার পর কত সরকার এল গেল, কেউই হাত দেয়নি ওই ফাইলে। জনতাপার্টির সরকার বেশি দিন টিকল না। ফের ক্ষমতায় ইন্দিরা। আর তাঁর হাতে আগের মতোই অস্ত্র ‘সিবিআই’।

ইন্দিরা গান্ধী এবং তাঁর পুত্র সঞ্জয় গান্ধী

আরও পড়ুন- Rampurhat Violence: কেন অভিযোগের আঙুল প্রতিটি ক্ষেত্রে শাসকদলের দিকে?

বিজেপি নেতারা আজ সিবিআইয়ের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে হলেও যখন তারা ক্ষমতায় ছিলেন না তখন তাদের এই বিষয়ে ভিন্ন মত ছিল। ২০১৩ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর, রাজ্যসভার বিরোধীদলনেতা অরুণ জেঠলি প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংকে (২০০৫ সালের শোহরাবউদ্দিন ভুয়ো সংঘর্ষ ও হত্যা মমলা প্রসঙ্গে) একটি চিঠি লিখে বলেছিলেন, কংগ্রেস রাজনৈতিক ভাবে বিজেপির সঙ্গে লড়াই করতে অক্ষম, আর তাই ঘুরপথে বিজেপির মোকাবিলা করার চেষ্টা করছে সিবিআইকে দিয়ে। ২০১৩ সালে, বিজেপি তখন নরেন্দ্র মোদীকে মুখ করে ২০১৪-এর লোকসভা ভোটের জন্য তৈরি হচ্ছে। বিজেপির অভিযোগ ছিল, ঠিক সেই কারণেই, ২০০৫ সালের শোহরাবউদ্দিন ভুয়ো সংঘর্ষ ও হত্যা মমলায় অমিত শাহকে ‘জড়িয়ে’ মোদীকে অস্বস্তিতে ফেলতে চায় কংগ্রেস। আর সিবিআই সেই কাজের ‘হাতিয়ার’। কিছু দিন আগেই প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদাম্বরমের গ্রেফতার, গ্রেফতারের পদ্ধতি, সিবিআইয়ের অতি সক্রিয়তা নিয়ে আজকের ক্ষমতাচ্যুত কংগ্রেসকেও অরুণ জেঠলির ভাষাতেই কথা বলতে দেখা গিয়েছিল বিজেপির বিরুদ্ধে।
অরুণ জেঠলি ঠিক বলেছিলেন কী ভুল বলেছিলেন, সেটা বড়ো কথা নয়। বড়ো কথা হল, ক্ষমতার বাইরে থাকাকালীন দেশের কোনও রাজনৈতিক দলই সিবিআইকে নিরপেক্ষ, বিশ্বাসযোগ্য প্রতিষ্ঠান মনে করছে না। ক্ষমতায় এলে তাদের মত বদলে যায়।

অরুণ জেঠলি ও প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং

আজ নরেন্দ্র মোদী-অমিত শাহদের বিরুদ্ধে সিবিআইকে রাজনৈতিক কারণে ব্যবহার করার যে অভিযোগ উঠছে, বাজপেয়ী-আদবাণীর বিরুদ্ধে এই অভিযোগ ওঠেনি। জরুরি অবস্থার পর তাঁরা একটা চেষ্টা করেছিলেন এর থেকে বেরিয়ে আসার। কংগ্রেস অবশ্য সেই চেষ্টাটাটাও কখনও করেনি। সিপিএম বিভিন্ন সময়ে কংগ্রেস সরকারকে বাইরে থেকে সমর্থন করেছে কিন্তু তারাও কখনও সিবিআইয়ের মতো সংস্থাকে স্বাধীন দায়িত্ব দেওয়ার কথা বলেনি বা এর জন্য কংগ্রেসের উপর চাপ সৃষ্টি করেনি। করেনি কারণ তখনই প্রশ্ন আসবে পুলিশকেও শাসকদলের রাজনৈতিক নেতাদের খপ্পর থেকে মুক্তি দেওয়ার। পুলিশের এই ধরনের সংস্কার কোনও রানৈতিক দলই চায় না। মমতাও চান না।

সিবিআই-এর দায়িত্ব যত বেড়েছে, সুনামে আঘাত লেগেছে তার থেকে অনেক বেশি দ্রুত গতিতে। শীর্ষ আদালত এই প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে মন্তব্য করেছে ‘কেজড প্যারট’। খাঁচা বন্দি তোতা পাখি। যে পাখি শুধু মালিকের শেখানো গান গায়। মালিকের শেখানো পথে চলে। যদিও, ‘গায়’, ‘চলে’, এই শব্দগুলোর ব্যবহার ঠিক নয়। আসলে, ‘গাইতে বাধ্য হয়’। ‘চলতে বাধ্য হয়’। আইনে সেরকমই বলা আছে। সংসদীয় স্ট্যান্ডিং কমিটি, মিনিস্ট্রি অফ পার্সোনেল, পাবলিক গ্রিভান্সেস, ল অ্যান্ড জাস্টিস, তাদের পঞ্চম, চতুর্দশ এবং ঊনবিংশ প্রতিবেদনে বার বার বলেছে, ব্রিটিশ আমলের আইনের উপর ভিত্তি করে তৈরি সিবিআই-এর খোল-নলচে বদলে নতুন আইনের আওতায় আনা হোক সিবিআইকে।

আরও পড়ুন- পলিটিকালবিট: ‘রাজভবন নবান্ন বিরোধ’ ছড়িয়ে পড়ছে রাজ্যে রাজ্যে

সিবিআইকে সিএজি বা নির্বাচন কমিশনের মতো স্বাধীন সংস্থায় পরিণত করার পক্ষে বিভিন্ন সময় মত দিয়েছেন অনেকেই। কিন্তু কোনো সরকারই এই কাজটা করেনি। করতে চায়ও না। বর্তমান আইনে সিবিআই সম্পূর্ণ ভাবে কেন্দ্রীয় সরকারের অধীন একটি সংস্থা। ‘সিবিআই ইনসাইডার স্পিকস: বিড়লা টু শীলা দীক্ষিত’ বইয়ের লেখক, সিবিআইএর প্রাক্তন জয়েন্ট ডিরেক্টর শান্তনু সেন (যে বইয়ে শান্তনু সেন নরসীমা রাওয়ের কাছে সুটকেস বোঝাই টাকা নিয়ে হর্ষদ মেহতার যাওয়ার কথা লিখেছেন) একটি সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন ‘বিভিন্ন কেন্দ্রীয় সরকারের সিবিআইকে অপব্যবহারের দীর্ঘ ইতিহাস আছে। সিবিআইয়ের আলমারিতে রাখা অসংখ্য ফাইলে পাওয়া যাবে সেই সব ইতিহাসের কঙ্কাল।

পুরনো খবরের আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০ ১১
১২ ১৩ ১৪ ১৫ ১৬ ১৭ ১৮
১৯ ২০ ২১ ২২ ২৩ ২৪ ২৫
২৬ ২৭ ২৮ ২৯ ৩০ ৩১  
আর্কাইভ

এই মুহূর্তে

দামোদরের বুকে অবৈধ বালি খাদানের রমরমা
শুক্রবার, ৩ মে, ২০২৪
আলিপুরদুয়ারের জয়গাঁ সড়কে ট্রাকে অতিষ্ঠ জনজীবন
শুক্রবার, ৩ মে, ২০২৪
ছাত্র ছাত্রীদের স্বস্তি, কৃত্রিম বৃষ্টি স্কুলে!
শুক্রবার, ৩ মে, ২০২৪
রায়বরেলি থেকে প্রার্থী রাহুল, জানাল কংগ্রেস
শুক্রবার, ৩ মে, ২০২৪
শুক্রবার, ৩ মে, ২০২৪
রাজ্যপালের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ, রাজভবনে মোদি
শুক্রবার, ৩ মে, ২০২৪
শ্লীলতাহানির অভিযোগের পিছনে চক্রান্ত দেখছে রাজভবন
শুক্রবার, ৩ মে, ২০২৪
কয়েক মিনিটের ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্থ সুন্দরবনের কয়েকটি ব্লক
শুক্রবার, ৩ মে, ২০২৪
অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমাকে বয়কটের সিদ্ধান্ত রাজ্যপালের
শুক্রবার, ৩ মে, ২০২৪
বানানো ঘটনা নিয়ে মাথা ঘামাতে রাজি নই: রাজ্যপাল
বৃহস্পতিবার, ২ মে, ২০২৪
বৃহস্পতিবার, ২ মে, ২০২৪
কোভিশিল্ড বিতর্কের মধ্যেই ভ্যাক্সিন সার্টিফিকেট থেকে উধাও মোদির ছবি
বৃহস্পতিবার, ২ মে, ২০২৪
রাজ্যপালের বিরুদ্ধে শ্লীলতাহানির অভিযোগ রাজভবনের অস্থায়ী কর্মীর
বৃহস্পতিবার, ২ মে, ২০২৪
বিজেপির সুভাষের বিরুদ্ধে নির্দলে মনোনয়ন পেশ দলীয় নেতার
বৃহস্পতিবার, ২ মে, ২০২৪
আইএএস, আইপিএস অফিসারদের বিজেপির হয়ে কাজ করতে চাপ, অভিযোগ মমতার
বৃহস্পতিবার, ২ মে, ২০২৪
© R.P. Techvision India Pvt Ltd, All rights reserved.   Privacy Policy
Developed By KolkataTV Team