পুরুলিয়া: নিহত তপন কান্দুর স্ত্রী পূর্ণিমা কান্দু ঝালদা থানার আই সি সঞ্জীব ঘোষের নামে জেলা পুলিস সুপারের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করলেন। তাতে তিনি লিখেছেন, পুর নির্বাচনের ফল ঘোষণার পর থেকেই ঝালদা থানার আই সি সঞ্জীব ঘোষ নানান ভাবে তাঁকে ও তাঁর স্বামীকে চাপ দিচ্ছিলেন। তৃণমুল কংগ্রেসে যোগদান করার জন্য আমার ও প্রয়াত স্বামী তপন কান্দুকে চাপ দিতে শুরু করেন।
এই ঘটনায় তিনি সরাসরি সঞ্জীব ঘোষ ও নরেন কান্দু, দীপক কান্দু, বিশ্বনাথ কান্দু, শ্যামাপদ সাউ, ভীম তেওয়ারি সহ পুরসভার তৃণমূলের বোর্ড গঠনে যারা মরিয়া ও তৃণমূলের কিছু নেতার সঙ্গে যোগাযোগ করে এই হত্যাকাণ্ডটি সংঘটিত করা হয়েছে বলে অভিযোগ জানিয়েছেন।
সোমবার রাতে লিখিত এই অভিযোগপত্রটি এফআইআর হিসেবে গণ্য করে দোষী ব্যক্তিদের বিরূদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করার অনুরোধ করেছেন পূর্ণিমা। সোমবারই তিনি অভিযোগ করেন, গত ১১ মার্চ রাতে স্বামীকে ঝালদা থানার আইসি তুলে নিয়ে যান৷ থানায় বসিয়ে তৃণমূলে যোগ দিতে হমকি দেন৷ স্বামী তৃণমূলে যোগ দিতে চাননি৷ এ কারণেই তাঁকে খুন করা হতে পারে বলে নিহতের স্ত্রীর দাবি৷ পূর্ণিমা ঝালদা থানার আইসির শাস্তির দাবি করেন৷ ঘটনায় জড়িত অন্যান্য অপরাধীদের খুঁজে বের করে যথাযোগ্য শাস্তির দাবি করেছেন৷ এলাকার তৃণমূল নেতা-নেত্রীদের বিরুদ্ধেও ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি৷
আরও পড়ুন: CPM State Conference: কলকাতায় শুরু সিপিএমের রাজ্য সম্মেলন, হবে আত্মসমীক্ষা
এই ঘটনায় পুলিস দুজনকে আটক করেছে। তাঁদের একজন নিহত তপন কান্দুর ভাই তথা এলাকার তৃণমূল কর্মী নরেন কান্দু। অন্যজন হল সদ্য সমাপ্ত পুরভোটে তপন কান্দুর কাছে পরাজিত তৃণমূল প্রার্থী নরেন কান্দুর ছেলে দীপক কান্দু। এই খুনের ঘটনার প্রতিবাদে মঙ্গলবার ১২ ঘণ্টার পুরুলিয়া বনধের ডাক দিয়েছিল কংগ্রেস। বামফ্রন্টও সেই বনধকে সমর্থন জানিয়েছিল।
যেখানে মূল ঘটনা, সেই ঝালদা শহরের মানুষ বনধকে সমর্থন করে। সকাল থেকেই রাস্তায় কোনও যান দেখতে পাওয়া যায়নি। দোকানপাটও ছিল বন্ধ। শহরের জনপ্রিয় এই নেতাকে খুনের ঘটনা ঝালদার মানুষ ভালোভাবে নেননি। ফলে এই শহরে বন্ধ হয়েছে সর্বাত্মক। খুনের প্রতিবাদে কংগ্রেসের মিছিলে পা মেলাতে দেখা গিয়েছে বাম কর্মীদেরও। শহরের বাসিন্দারা চাইছেন, এই খুনের কিনারা করুক পুলিস।