নয়াদিল্লি: অ্যালোপ্যাথি চিকিৎসা নিয়ে যোগগুরু বাবা রামদেবের মন্তব্যে বিতর্কের ঝড় উঠেছিল। তার রেশ না কাটতেই চিকিৎসক দিবসে নতুন যোগ নিয়ে নতুন মাত্রা যোগ করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি৷ ভারতীয় যোগ ও প্রাণায়মের প্রচার এবং প্রসারে আইএমএ-এ অর্থাৎ ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের সাহায্য চাইলেন তিনি৷ বৃহস্পতিবার দেশ জুড়ে পালিত হচ্ছে চিকিৎসক দিবস৷ এ রকম দিনে দেশের চিকিৎসকদের কাছে প্রধানমন্ত্রীর এই বিশেষ অনুরোধ সাড়া ফেলে দিয়েছে৷ চিকিৎসকদের কাছে তাঁর অনুরোধ, ‘আপনারা কি পারেন না যোগকে বিশ্বস্তরে নিয়ে যেতে?’
আরও পড়ুন: ‘তৃতীয় ঢেউই শেষ, শক্তি হারাচ্ছে কোভিড’
বৃহস্পতি বার ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের একটি অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রী৷ করোনাকালে গত দেড় বছরে চিকিৎসকরা যেভাবে দেশবাসীর সেবা করেছেন তা ‘দৃষ্টান্ত’ হয়ে থাকবে বলে মন্তব্য করেন মোদী৷ তিনি বলেন, ‘আমি ১৩০ কোটি ভারতীয়ের তরফে দেশের সব চিকিৎসকদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি৷’
চিকিৎসকদের কাজের প্রশংসা শোনা যায় প্রধানমন্ত্রীর গলায়৷ তিনি জানান, ডাক্তারদের ঈশ্বরের দ্বিতীয় রূপ বলা হয়৷ অসুস্থতা বা দুর্ঘটনার সময় অথবা কাছের মানুষদের জীবন বাঁচানোর সময় দেবদূতের মতো হাজির হন তাঁরা৷ নতুন জীবন দেন চিকিৎসকরা৷ মহামারীর সময় প্রাণ হারানো চিকিৎসকদের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধাঞ্জলি ও তাঁদের পরিবারের প্রতি সমবেদনা জানান প্রধানমন্ত্রী৷ তিনি বলেন, ‘ভাইরাসটা নতুন৷ নতুন নতুন মিউটেশন হচ্ছে৷ কিন্তু চিকিৎসকদের জ্ঞান, অভিজ্ঞতা ও অনুভব এই চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করছে৷’
আরও পড়ুন: কোভিশিল্ডকে ছাড়পত্র ইউরোপীয় ইউনিয়নের
যোগ-ব্যায়াম নিয়েও সাধারণ মানুষকে সচেতন করার কাজে চিকিৎসকরা এগিয়ে এসেছেন বলে মন্তব্য করেন নরেন্দ্র মোদি৷ তিনি বলেন, ‘যোগের প্রচার-প্রসার করার যে কাজ স্বাধীনতার পর হওয়া উচিত ছিল তা এখন হচ্ছে৷ করোনাকালে যোগ ও প্রাণায়মের ইতিবাচক প্রভাব মানুষের স্বাস্থ্যে পড়েছে৷ পোস্ট কোভিড জটিলতা সারিয়ে তুলতে যোগা কতটা কার্যকরী এ জন্য আধুনিক মেডিক্যাল সায়েন্সের সঙ্গে যুক্ত সংস্থা প্রমাণভিত্তিক গবেষণা চালাচ্ছে৷ আপনারা এ কাজে অভিজ্ঞ এবং ভারতীয় হিসাবে খুব সহজেই যোগের গুরুত্ব বুঝতে পারেন৷ যোগ নিয়ে আপনারা গবেষণা চালালে গোটা বিশ্ব এই বিষয়কে আরও গুরুত্ব দেবে৷ আইএমএ-কে কি পারে না যোগাকে বিশ্বস্তরে নিয়ে যেতে? এটাও হতে পারে যোগা সংক্রান্ত গবেষণা আন্তর্জাতিক জার্নালে প্রকাশিত করা যেতে পারে৷ এই গবেষণা বিশ্বের চিকিৎসকদেরও সাহায্য করবে৷’
কিছুদিন আগে অ্যালোপথি চিকিৎসা পদ্ধতিকে ‘স্টুপিড সায়েন্স’ বলেছিলেন যোগগুরু বাবা রামদেব৷ পাশাপাশি আয়ুর্বেদ এবং যোগার মাধ্যমে রোগ নিরাময়ে বেশি আস্থা রেখেছিলেন তিনি৷ পতঞ্জলি কর্ণধারের এই মন্তব্যে চরম ক্ষুব্ধ হন অ্যালোপথি চিকিৎসকরা৷ তাঁদের মতে, অ্যালোপথি চিকিৎসাকে অপমান করেছেন যোগগুরু৷ তাঁকে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাইতে হবে বলেও দাবি জানান চিকিৎসকরা৷ সেই বিতর্কের রেশের মধ্যে এদিনের অনুষ্ঠানে যোগার উপকারিতা নিয়ে মোদির বক্তব্য আলাদা মাত্রা এনে দিয়েছে৷