কলকাতা: কেন্দ্র-রাজ্য যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো এবং আইএএস (IAS) সংশোধনী প্রসঙ্গে ফের সরব মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। এক সপ্তাহের মধ্যে দ্বিতীয়বার ১৯৫৪ সালে আইএএস (ক্যাডার) আইন সংশোধন প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি দিলেন মমতা। প্রথমবার চিঠি দিয়েছিলেন ১৩ জানুয়ারি। আজ, ২০ জানুয়ারি ফের বিষয়টিতে ক্ষোভ জানিয়ে নরেন্দ্র মোদিকে (Narendra Modi) চিঠি দিলেন মমতা। এদিনের চিঠিতে ফের একবার তাঁর আপত্তির কথা স্পষ্ট করেছেন তিনি।
চিঠিতে মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, আমলারা রাজ্য প্রশাসনের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। রাজ্য সরকারের সঙ্গে আলোচনা করে তাদের প্রতিটি মুহূর্তে সিদ্ধান্ত নিতে হয়। কেন্দ্র তাদের গতিপথ নিয়ন্ত্রণ করলে বহু কাজের ক্ষেত্রে জটিলতা তৈরি হবে। কেন্দ্র ও রাজ্যের বিরোধও আরও বাড়বে। বিষয়টিকে রাজ্যের অধিকারে হস্তক্ষেপ বলে উল্লেখ করে মুখ্যমন্ত্রীর দাবি, রাজ্যকে অন্ধকারে রেখে কোনও আমলাকে কেন্দ্র যদি সরিয়ে নেয়, তাহলে তা নিঃসন্দেহে রাজ্যের অধিকার খর্ব করার সামিল। যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর ক্ষেত্রেও তা বিপদজ্জনক।
বিতর্কটা বোধ হয় শুরু হয়েছিল গত বছর কলাইকুণ্ডার বৈঠককে কেন্দ্র করে। সেখানে প্রধানমন্ত্রীর ডাকা বৈঠকে অনুপস্থিত ছিলেন রাজ্যের তৎকালীন মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায়। আলাপনের সেই অনুপস্থিতি ঘিরে শুরু হয় কেন্দ্র-রাজ্য টানাপোড়েন। আমলা-আইন ভঙ্গ করেছেন, এমন অভিযোগ এনে প্রাক্তন মুখ্যসচিবকে দিল্লিতে ডেকে পাঠায় কেন্দ্র। আবার গত বিধানসভা ভোটের আগে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জেপি নাড্ডার কনভয়ে হামলা প্রসঙ্গে তিন আইপিএসকে ডেপুটেশনে চেয়েছিল কেন্দ্র। তাঁদেরকেও ছাড়েনি তৃণমূল সরকার।
আরও পড়ুন: আলাপন মামলায় হাইকোর্টের পর্যবেক্ষণে ‘রাজনীতির রং’, সুপ্রিম কোর্টে বলল কেন্দ্র
আইএএস এবং আইপিএস অফিসারদের উপর প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ কার, কেন্দ্র না রাজ্য? তা নিয়ে বিতর্ক-জল্পনা বহুদিনের। তৃণমূল কংগ্রেস এবং কেন্দ্রের বিজেপি সরকার ক্ষমতায় আসার পর এই বিরোধ যেন আরও বেড়েছে। একাধিক ইস্যুতে যেমন মোদি-মমতার বিরোধ সামনে এসেছে, তেমনই আমলা ইস্যুও বারবার বিতর্কের কেন্দ্রে উঠে এসেছে। সার্ভিস রুলবুকের ৬ (১) ধারাকে উল্লেখ করে অনেকে বলেছেন, এ প্রসঙ্গে রাজ্যের কিছু করার নেই। যদিও নবান্নের যুক্তি ছিল, রাজ্যের সম্মতি বা ছাড়পত্র না থাকলে আইএএস বা আইপিএস অফিসারদের কেন্দ্র ডেপুটেশনে যোগ দেওয়াতে পারে না।