Placeholder canvas
কলকাতা শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪ |
K:T:V Clock

Placeholder canvas
Fourth Pillar | ইলেক্টোরাল বন্ড ইস্যুতেই বিজেপি ২৫০ আসনের তলায় চলে যাবে?
কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক Published By:  রাতুল বন্দ্যোপাধ্যায়
  • প্রকাশের সময় : বুধবার, ২০ মার্চ, ২০২৪, ০৪:৪৫:৪৭ পিএম
  • / ২৪ বার খবরটি পড়া হয়েছে
  • রাতুল বন্দ্যোপাধ্যায়

এরকম লুঠতরাজ দেশে আর কখনও হয়নি। এত দুর্নীতি আর দুর্নীতির এই ঘৃণ্য চেহারা এর আগে কখনও দেখেনি মানুষ। কখনও না। বহু আগে অটল বিহারী বাজপেয়ীর সময়ে কার্গিলে সৈন্যদের জন্য কফিনের দাম নিয়ে একটা বড় অভিযোগ পাওয়া গিয়েছিল, সেনাবাহিনীর ব্যাপার, পরে তা চাপা পড়ে যায়। কিন্তু আমরা ভেবেছিলাম এর থেকেও জঘন্য কিছু হতে পারে? সৈনিকদের কফিনেও কাটমনি? এবারে যা সামনে এসেছে তা আরও মারাত্মক। জানা গেল হেলথ সেক্টরে আছে, মানে কারও ওষুধের কারখানা, কারও নার্সিং হোম আর ডায়গনস্টিক সেন্টার, এদের ১৪টা কোম্পানি মিলে মোট ৫৩৪ কোটি টাকার বন্ড কিনেছে এবং তা বিজেপির ফান্ডে গেছে। যে ওষুধের কোম্পানি করোনার সময়েও লাভের কড়ি থেকে এক টাকা ছাড় দিতে রাজি হয়নি, যে নার্সিং হোম ডায়াগনস্টিক সেন্টারগুলো পুরো টাকা না পেলে ডেডবডি ছাড়ে না, তারা ৫৩৪ কোটি টাকা দান করল দেশের গণতন্ত্রকে বাঁচাতে এবং তাদের মনে হল ওই বিজেপিই পারবে দেশের গণতন্ত্রকে রক্ষা করতে। কী সাংঘাতিক ব্যাপার, তাই না! আরও একটু তথ্য দিয়ে বোঝা যাক। সিপলা কোম্পানি, যারা রেমডিসিভির তৈরি করে, যে ওষুধের কালোবাজারি হয়েছিল করোনার সময়ে, তাদের ওষুধ পরীক্ষা করে দেখা গিয়েছিল ওষুধের উপাদানে বড় গরমিল আছে, রেমডিসিভির যথেষ্ট পরিমাণে ছিল না। নোটিস দেওয়া হয় ২০২১-এর জুলাইয়ে মামলা ওঠে, ২০২২ নভেম্বরে সিপলা ২৫.২ কোটি টাকার বন্ড কেনে। এর আগেও ওই সিপলার কাফসিরাপ ল্যাব টেস্টে ফেল করেছিল ২০১৮ সালে, কয়েক মাস পরে তখনও ১৪ কোটি টাকার বন্ড কিনেছিল সিপলা। ২০১৭ থেকে আজ পর্যন্ত সিপলার ওষুধের দাম বেড়েছে গড়ে ২৩ শতাংশ। মানে আপনি ওষুধ খাচ্ছেন, নরেন্দ্র মোদির পোস্টার ছাপা হচ্ছে।

জাইডাস হেলথ কেয়ার, এরাও রেমডিসিভির তৈরি করে, এদের ওষুধে ল্যাব টেস্টে অতিরিক্ত পরিমাণে এন্ডোটক্সিন ধরা পড়ে, এরা গুজরাতের কোম্পানি, না রাজ্য, না কেন্দ্র কোনও সরকারই কিচ্ছু করেনি, এঁরা ২৯ কোটি টাকার বন্ড কিনেছেন। এঁদের ওষুধের দাম বেড়েছে ৩১ শতাংশ। কেন বেড়েছে বুঝে নিন। গ্লেনমার্ক, এদের ওষুধ ব্লাড প্রেশারের টেলমা, বারবার ল্যাব টেস্টে ফেল করে, এসব টেস্ট হয়েছিল ২০২২–২০২৩ এর মধ্যে পাঁচবার, নোটিসও ধরানো হয়েছিল, ওনারা নোটিসের মানে বুঝেছিলেন, ২০২২-এর নভেম্বরে এনারা ৯.৭৫ কোটি টাকার নির্বাচনী বন্ড কিনেছেন, নোটিস ঝুলে আছে। টোরেন্ট ফার্মা, বিরাট কোম্পানি, মোট ৭৭.৫ কোটি টাকার বন্ড কিনেছেন, স্যালিসাইলিক অ্যাসিড টেস্টে ওদের ওষুধ ফেল করে, মহারাষ্ট্র ড্রাগ অ্যাডিমিনিস্ট্রেশন এই ওষুধ ডেপ্ল্যাটকে অত্যন্ত নিম্নমানের বলে ঘোষণা করেছে। জানেন এই ওষুধ কাদের দেওয়া হয়? এটা অ্যান্টিপ্লেটলেট ড্রাগ, রক্ত জমে হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোক সামাল দিতে এই ওষুধ ব্যবহার হয়। আপনার প্রিয়জন সংকটজনক মুহূর্তে এই ডেপ্ল্যাট খেলেন, কাজ করল না, মারা গেলেন, কিন্তু মোদিজির ছবি ঝোলানো হচ্ছে সেই পয়সায়। নরকের দৈত্যদের কথা শুনেছি, তারাও শিউরে উঠবে। প্রতিটা সেক্টরেই এরকম হয়েছে, খুলে আম তোলাবাজি, হফতা উসুলি। এবং তা মানুষের সামনে পরিষ্কার। এইসব তথ্য নিয়ে মানুষের কাছে গেলে মানুষ তা শুনবে না? মানুষ বুঝবে না? এবং মজার ব্যাপার হল এই চুরিকে, এই লুঠতরাজকে ঢাকা দেওয়ার জন্য যা যা করা হল তাও ভারতের ইতিহাসে নেই।

আরও পড়ুন: Fourth Pillar | ২০২৪ নয় মোদিজির লক্ষ্য ২০২৫, সেটার কারণটা বুঝুন

বাম দলেরা সবাই শুরু থেকেই নির্বাচনী বন্ডের বিরোধিতা করেছে, কিন্তু আইনি লড়াইয়ে নামে গণতন্ত্র রক্ষা সমিতি, বা কিছু ব্যক্তিবিশেষ, প্রশান্ত ভূষণের মতো কিছু নামকরা উকিল, কমোদর লোকেশ বাটরার মতো কিছু হুইসল ব্লোয়ার। শেষ পর্যন্ত তাঁদের একরোখা মনোভাবের কাছে মাথা নোয়াল ক্ষমতা এবং অবশ্যই আমাদের বিচার ব্যবস্থা অন্তত এই বিষয়ে এরকম অনমনীয় স্ট্যান্ড না নিলে কিছুই হত না। তাঁরা প্রথমেই এই নির্বাচনী বন্ডকে অসাংবিধানিক বলে ঘোষণা করে দিলেন। এরপরে স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়াকে বললেন সাতদিনের মধ্যে সমস্ত তথ্য জমা করুন। নির্বাচনের আগে সমস্ত তথ্য বের হয়ে যাবে? এসবিআই আদালতে জানাল অসম্ভব, এত তথ্য দেওয়া সম্ভব নয়। সপাটে জবাব এল প্রধান বিচারপতির কাছ থেকে, তিনদিনের মধ্যে সুড়সুড় করে বহু তথ্য জমা হল। এরপরে দেখা গেল, এসবিআই ওই ইউনিক নম্বর বা কোডটা দেয়নি যা দিলে বোঝা যাবে যে কোন দলকে কোন কর্পোরেট হাউস বা কে এই চাঁদাটা দিয়েছে। ঝোলা থেকে বেড়াল আধখানা বেরিয়েছিল, সুপ্রিম কোর্ট আবার সাফ জানিয়েছে আগামিকালের মধ্যেই বার করতে হব সব তথ্য, সব মানে সব, ওই কোড নম্বর সহ সব তথ্য, কারণ এখনও বহু এন্ট্রি নেই, বহু বন্ডের হদিশ নেই। মজার কথা হল, এই বন্ড ইস্যুর ১৫ দিনের মধ্যে ভাঙানোর জন্য ব্যাঙ্কে জমা দিতে হবে, কিন্তু বিজেপি কর্নাটকে ১৫ দিনের বহু পরেও বন্ড জমা করেছে আর টাকাও তুলে নিয়েছে। তার মানে হল ইডি, সিবিআই বা ইনকাম ট্যাক্স দফতরের মতো আমার আপনার টাকাতে চলা এসবিআইও কিন্তু আসলে চলছে বিজেপির নির্দেশে। সে সব বের হবে, এই কোটি কোটি টাকার লুঠতরাজের কথা বেরিয়ে আসবে। এবারে আপনারা ভাবছেন, এবার তো সোজা হয়ে গেল, মানুষ বুঝতে পেরে গেল বিজেপির আসল চেহারা। কিন্তু এখানেই আরেকটা সমস্যা আছে।

এই নির্বাচনী বন্ডের সিংহভাগ টাকা যে বিজেপিই পেয়েছে, তারা যে এই টাকা পাওয়ার জন্য যা খুশি যতটা খুশি তাদের ক্ষমতাকে ব্যবহার করেছে এ নিয়েও কোনও সন্দেহ নেই। কিন্তু তাদের চেয়ে অনেক কম হলেও বিরোধীরা কি এই টাকা পায়নি? পশ্চিমবঙ্গে বসেই ব্যবসা করেন এম কে জালান, জানি না ইনিও আমাদের দিদির সভাতে রবীন্দ্রসঙ্গীত গেয়েছিলেন কি না, কিন্তু ইনিও যে তৃণমূলকে যথেষ্ট ডোনেশন দিয়েছেন, তা নিয়েও তো কারও সন্দেহ থাকার কথা নয়। আগে জানা যাচ্ছিল তৃণমূল দ্বিতীয় স্থানে আছে, এখন জানা যাচ্ছে অল্পের জন্য তৃণমূল তৃতীয় স্থান অধিকার করেছে। কেবল পশ্চিমবঙ্গের ৫০টা কোম্পানি ১৬০০ কোটি টাকার বন্ড কিনেছে, সবই তো বিজেপি পেয়েছে এমন নয়, তৃণমূলও পেয়েছে। ওদিকে সুপ্রিম কোর্ট বলেছিল রাজনৈতিক দলগুলো তাদের বন্ডের হিসেব নিজেরাই দিন। তাতে বাকি সবাই কিছু না কিছু হিসেব দিয়েছেন, যদিও সমাজবাদী দলের অখিলেশ যাদব দু’ লাখ চার লাখ, হাজার পঞ্চাশ হাজার যাঁরা দিয়েছেন তাঁদের কথা তো বলেছেন, কিন্তু কোটি টাকার তালিকা দেননি, উনি বলেছেন সে তালিকা ওনার কাছে নেই। তেজস্বী যাদব হিসেব দিয়েছেন। তামিলনাড়ুর স্তালিন মোটামুটি সব হিসেব দিয়েছেন এবং জানা যাচ্ছে ওই লটারি কিং তাঁর দল ডিএমকে-কে ৪০০ কোটি টাকার মতো দান করেছে? কেন? কারণ তো বুঝতে অসুবিধে হয় না। বিজেপি কংগ্রেস আর তৃণমূল কোনও হিসেবই দেয়নি। বিজেপি জানিয়েছে, এত লক্ষ লক্ষ বন্ডের হিসেব দেওয়া সম্ভব নয়, এসবিআই হিসেব দিক। কংগ্রেস বলেছে, বেনামী মানুষজন এসে দিয়ে গেছেন, তার হিসেব কী করে দেব? আর তৃণমূল বলেছে লেটার বক্সে এসে বন্ড ফেলে ছুট্টে চলে গেছে, আমরা কী জানি? আপনারা এসবিআইকে বলুন জানিয়ে দিতে। পুরো রত্নাকর কেস, কেউ চুরির দায় নিতে চায় না। হ্যাঁ, নিশ্চিতভাবেই বামেরা বলতেই পারে আমরা নিইনি, তাঁরা এই লুঠতরাজের বিরুদ্ধে মানুষের কাছে যেতেই পারেন। কিন্তু সেখানেও তো সমস্যা আছে, সমস্যা হল এই বাংলায় বামেরা বলবে তৃণমূল নির্বাচনী বন্ড পেয়েছে তোলাবাজি করে বা জালান বা গোয়েঙ্কাকে সুবিধে পাইয়ে দিয়ে। একদম মিথ্যে বলবে কি? কিন্তু তারা কংগ্রেস নিয়ে কী বলবে? কংগ্রেসের নির্বাচনী বন্ডের টাকা তো গঙ্গাজলে ভেসে আসেনি।

ডিএমকে তো নিজেই স্বীকার করেছে যে তারা ওই কুখ্যাত লটারি কিংয়ের কাছ থেকে ৪০০ কোটি টাকার বন্ড পেয়েছে। সেই ডিএমকে-র সঙ্গে তো বামেদের আঁতাঁত, নির্বাচনী বোঝাপড়া, ইনফ্যাক্ট ডিএমকের সমর্থন না পেলে তামিলনাড়ু থেকে দু’ দু’জন সাংসদ তো ছেড়েই দিন সিকিখানা সাংসদও জেতাতে পারবেন না। তাহলে কী দাঁড়াল? এমন কোনও বড় রাজনৈতিক দল বা গ্রুপ নেই, যারা নির্বাচনে অংশগ্রহণ করছে এবং তাদের একজনও নির্দ্বিধায় মানুষের কাছে গিয়ে এই বন্ডের লুঠতরাজের সার্বিক বিরোধিতা করতে পারবেন না। আংশিক কথা বলাতে বিষয়টা আরও গোলাবে এবং সেই ফাঁকে বিজেপি, নরেন্দ্র মোদি, অমিত শাহের প্রচার রথ থেকে জানানো হবে বিরোধীরাও তো টাকা নিয়েছে, আমরা কি একলা নাকি? নির্বাচনের আগে এতবড় অস্ত্র, এতবড় ইস্যু বিজেপিকে কাঁপিয়ে দিতে পারত, নড়িয়ে দিতে পারত, কেবল এই ইস্যুতেই বিজেপি ২৫০ কেন, তারও তলায় নেমে যেত। কিন্তু সংসদীয় রাজনীতির মজা হল তা আপনাকেও পাঁকে নামিয়ে নিয়ে গিয়ে তবে ছাড়বে। আর প্রত্যেকের গায়ে লেগে থাকা পাঁক দেখে, সে পাঁকের পচা গন্ধ শুঁকে আমজনতা বলবে, ও তো হবেই, রাজনীতিতে কালো টাকা, দুর্নীতি থাকবে না তাই হয় নাকি?

পুরনো খবরের আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০ ১১ ১২ ১৩
১৪ ১৫ ১৬ ১৭ ১৮ ১৯ ২০
২১ ২২ ২৩ ২৪ ২৫ ২৬২৭
২৮ ২৯ ৩০  
আর্কাইভ

এই মুহূর্তে

মুর্শিদাবাদে আক্রান্ত ছয় তৃণমূল কর্মী
শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪
বিজেপি কর্মীর রহস্য মৃত্যুতে তৃণমূলকে হুঁশিয়ারি প্রাক্তন বিচারপতির
শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪
সন্দেশখালিতে সিবিআই তল্লাশি, কমিশনে নালিশ তৃণমূলের
শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪
খেলা হবে গানে নাচ, কটাক্ষ বিজেপির
শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪
শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪
নাম না করে বিজেপির দেবাশিসকে খোঁচা তৃণমূলের শতাব্দীর
শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪
আজ থেকে আরও বাড়বে শহরের তাপমাত্রা, দক্ষিণবঙ্গে লাল সতর্কতা জারি
শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪
শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪
শনিবার ভাগ্য খুলবে ৫ রাশির জাতকের
শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪
পশ্চিমবঙ্গে এনএসজি কমান্ডো ও রোবট দিয়ে সার্চ করা উচিৎ’ সন্দেশখালি নিয়ে সরব মিঠুন থেকে সুকান্ত
শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪
সন্দেশখালিতে দিনভর তল্লাশি, গুলি-বন্দুক, উদ্ধার শাহজাহানের নথিপত্র
শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪
দ্বিতীয় দফায় কোন কোন হেভিওয়েটদের ‘ভাগ্য পরীক্ষা’ ?
শনিবার, ২৭ এপ্রিল, ২০২৪
২৬১ রান করেও লজ্জার হার কলকাতার
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪
পাপারাজ্জিদের উপর রেগে লাল জুনিয়ার এনটিআর, কিন্তু কেন?
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪
বাংলার তিন কেন্দ্রে বিকেল ৫টা পর্যন্ত ভোটের হার ৭০ শতাংশ
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল, ২০২৪
© R.P. Techvision India Pvt Ltd, All rights reserved.   Privacy Policy
Developed By KolkataTV Team