Placeholder canvas
কলকাতা বৃহস্পতিবার, ০২ মে ২০২৪ |
K:T:V Clock

Placeholder canvas
চতুর্থ স্তম্ভ: নেহরু বনাম মোদি
সম্পাদক Published By:  • | Edited By:
  • প্রকাশের সময় : বুধবার, ৯ ফেব্রুয়ারী, ২০২২, ১২:৪৪:২৬ এম
  • / ২৬৫ বার খবরটি পড়া হয়েছে
  • • | Edited By:

রাজভোগ আর বোঁদের কোনও তুলনা হয়? দেশি মুরগি আর ব্রয়লারের? তুলনা হয় নাকি রবি ঠাকুরের সঙ্গে অনন্ত জানার? গঙ্গার সঙ্গে টালি নালার? হয় না, কিন্তু কখনও কখনও কোনও কোনও মূর্খ এমন তুলনায় নামে, অনেক এমন আহাম্মক আছে বৈকি, যারা নিজেদের অওকাত বোঝেনা, নিজেদের উচ্চতা, ক্ষমতা নিয়ে কোনও ধারণাই নেই, তারা পাহাড়ের সঙ্গে নুড়ি পাথরের তুলনা করে, অনায়াসে করে, সর্বসমক্ষেই করে। আমার এক মামা ছিলেন, আঁকতেন, অ্যাঁকাবেঁকা মুখ, মহিলা না পুরুষ তাও পরিষ্কার হত না, কিন্তু তাঁর মনে হত, তিনি মোনালিসা এঁকে ফেলেছেন, এরকম অনেক মামা আছে, নিজের ছবির সামনে সত্যজিৎ রায় রেখে, নিজেকে সত্যজিৎ রায় মনে করা দাদা আছে, এতদিন এদের দেখে আমরা হেসেছি, তাদের আবালপনা আমাদের আমোদ জুগিয়েছে।

কিন্তু এখন পানি নাক কে উপর চলা গয়া, আমাদের দেশের প্রধানমন্ত্রী তাঁর পারফরম্যান্সের সঙ্গে নেহরুর তুলনা টেনেছেনই শুধু নয়, তিনি যে একটু বেটার তাও বলার চেষ্টা করেছেন, তাও আবার সংসদে। বলেছেন, মূল্যবৃদ্ধি? এ আর এমন কী? এর আগে এরকম মূল্যবৃদ্ধির সমস্যা ঘাড় থেকে নামিয়ে দিয়েছেন আমাদের দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জহরলাল নেহরু, আমি তো তবু সমস্যার সমাধান করার চেষ্টা করছি, ভাবা যায়? পাঁড় মাতালেও বলবে? নেশা করেও এমন কথা বলা যায়? উনি বলেছেন, দেশের প্রধানমন্ত্রী এই কথা বলেছেন, আসুন একটু আলোচনা করে দেখা যাক, বা একটু ইতিহাসে নেহরুর অবস্থান, তাঁর অবদান নিয়ে একটু আলোচনা করা যাক।

জহরলাল নেহরু ৩২৫৯ দিন, প্রায় ৯ বছর ব্রিটিশ আমলে জেলে ছিলেন, কেন? দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে নেতৃত্ব দেবার জন্য, আলমোড়া জেলে ১০৪১ দিন জেলে ছিলেন, একবার একটানা ১০ জুন ১৯৪৫ থেকে ১৫ জানুয়ারি ১৯৪৬ পর্যন্ত ঐ জেলেই ছিলেন, একটা ছোট্ট ঘরে একটা থালা, একটা গ্লাস, একটা মগ আর ছোট্ট বিছানা, একটা হ্যারিকেন। এখনও রাখা আছে। মোদিজীর দেখার সময় নেই, কারণ তিনি সময় পেলে বিদেশে যাবেন, দেশে তাঁর তেমন রুচি নেই।

আরও পড়ুন: চতুর্থ স্তম্ভ : নো ভোট টু বিজেপি

ওদিকে মোদিজীর পূর্বসূরী সাভারকার, ৫ বার ইংরেজদের জেল থেকে বের হবার জন্য মুচলেকা দিয়েছিলেন, আর মোদিজীর নিজের জেলে যাবার কোনও রেকর্ড এখনও পর্যন্ত আমরা জানি না, এমারজেন্সির সময়েও না। নিজের জীবনের ৯ বছর জেলে কাটানো, নেহরুজীর সঙ্গে নিজের তুলনা করছেন, অবিমৃষ্যকারিতা কাকে বলে? জহরলাল নেহরুর পড়াশুনো, আসুন তা নিয়েও কিছু কথা বলা যাক, কেম্ব্রিজের ট্রিনিটি কলেজের ন্যাচারাল সায়েন্সে অনার্স ডিগ্রি নেবার পরে, তিনি আইন নিয়ে পড়াশুনো করেন, ব্যারিস্টার হন, তারপর দেশে ফিরে কংগ্রেসে যোগ দেন, দেশের স্বাধীনতার আন্দোলনে যোগ দেন।

আর আমাদের নরেন্দ্রভাই দামোদরদাস মোদি, কী পড়াশুনো করেছেন, কোথায় করেছেন, কেউ জানে না। এমন একটা বিষয় নিয়ে পড়াশুনো করেছেন বলে দাবি করেন, সেই এন্টায়ার পলিটিকাল সায়েন্স, কোথাও পড়ানো হয় বা আদৌ সেই বিষয়টা কী, সেটাই কেউ জানে না। নেহেরু ঐ জেলে বসেই, ডিসকভারি অফ ইন্ডিয়া, গ্লিম্পসেস ওফ ওয়ার্লড হিস্ট্রি, অ্যান অটোবায়োগ্রাফি আর লেটারস ফ্রম অ্যা ফাদার টু হিস ডটার লিখেছিলেন, যা বিশ্ব সাহিত্যে অমূল্য মর্যাদা পায় তার ভাষা আর তথ্য পরিবেশনার জন্য, তাঁর বিখ্যাত ভাষণ, স্বাধীনতা দিবসের প্রাককালে ১৪ আগস্ট মধ্যরাতে তাঁর ভাষণ অ্যা ট্রিস্ট উইথ ডেসটিনি, ব্রিটিশ নিউজ পেপারের পৃথিবীর বিখ্যাত ভাষণের সংকলনে রাখা হয়েছে, তিনি বলছেন, Long years ago we made a tryst with destiny, and now the time comes when we shall redeem our pledge, not wholly or in full measure, but very substantially. At the stroke of the midnight hour, when the world sleeps, India will awake to life and freedom. A moment comes, which comes but rarely in history, when we step out from the old to the new, when an age ends, and when the soul of a nation, long suppressed, finds utterance. আর আমাদের স্মরণে আছে মোদিজীর ৮ নভেম্বরের সেই বিখ্যাত ভাষণ, মিত্রোঁ…… তারপর থেকে মিত্রোঁ শুনলে বাচ্চারা কান্না থামিয়ে চুপটি করে খেয়ে নেয় মা বলেন, শো যা নঁহি তো মোদী আয়েগা।

মোদিজী কী লিখেছেন? কেউ কেউ বলে ওনার নাকি খান দুয়েক কবিতার বই আছে, কিন্তু তার উল্লেখ উইকিপিডিয়াতে নেই। সেই মোদিজী নিজের সঙ্গে তুলনা করছেন নেহেরুর সঙ্গে, একেই কি অবিমৃষ্যকারিতা বলে?

আরও পড়ুন: চতুর্থ স্তম্ভ: কুমিরের কান্না

নেহরু দেশের প্রধানমন্ত্রী হলেন, দেশ ভাগের পর লক্ষ কোটি শরণার্থীদের দায়, অর্থনীতি বিপর্যস্ত, নেহরু মারা যাচ্ছেন ২৭ মে ১৯৬৪। এরমধ্যে ভাখড়া নাঙ্গল প্রজেক্ট, ভিলাই সমেত আরও কিছু স্টিল প্ল্যান্ট, দামোদর ভ্যালি প্রজেক্ট, অ্যাটমিক রিসার্চ সেন্টার, এইমস, সমেত অজস্র বিশ্ববিদ্যালয়, কলেজ তৈরি করিয়েছেন। হিন্দু বিধবা নারীদের জন্য হিন্দু কোড বিল এনেছেন, কাশ্মীরে যুদ্ধে পাকিস্থানকে হারিয়ে সেখানে নির্বাচিত সরকার তৈরি করেছেন, সারা দেশে নির্বাচন করিয়েছেন। অজশ্র সমস্যার সমাধান করেছেন, তার চেয়েও বেশি সমস্যা রয়ে গেছে এটাও সত্যি কিন্তু চেষ্টার ত্রুটি ছিল না, সবথেকে বড় কথা হল দেশের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা আর সেকুলারিজমকে রক্ষা করেছেন, সুদৃঢ় করেছেন।

এদিকে মোদিজী, বনা বনায়া খেল বিগাড়না জিন কা একমাত্র কাম হ্যায়, একটা বাড়তে থাকা অর্থনীতিকে ডিমনিটাইজেশন করে, তাড়াহুড়ো করে জি এস টি এনে, অপরিকল্পিত লকডাউন ঘোষণা করে তলানিতে নামিয়েছেন। জিডিপি নেমেছে, মুদ্রার অবমূল্যায়ন জারী আছে, গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা নষ্ট করেছেন, সেকুলারিজম তো ছেড়েই দিন, রাষ্ট্র প্রধান নিজেই গিয়ে রাম মন্দিরের শিলান্যাস করে ভোট কুড়নোর ছক কষছেন, সেই তিনি নিজের নামের পাশে নেহেরুর নাম এনে তুলনায় বসাচ্ছেন। একেই তো অবিমৃষ্যকারিতা বলে।

নেহরু সারা পৃথিবীতে নন অ্যালায়েনমেন্ট মুভমেন্টের নেতৃত্ব দিয়েছেন, নাসের, টিটো আর নেহরুর নাম একসঙ্গে উচ্চারিত হত। রাশিয়া আর আমেরিকার বাইরে এক শক্তিশালী গোষ্ঠি নিরপেক্ষ বৈদেশিক নীতি, তিনিই এনেছিলেন। দেশের পড়শিদের সঙ্গে বৈদেশিক সম্পর্ক স্থাপন করেছেন। আর মোদিজীর বৈদেশিক নীতি? দেবা ন জানন্তি কুতো মনুষ্য, কখন যে কী করছেন, কী বলছেন, তা নিজেও জানেন না, কেউ বুঝতেও পারছেন না। কেউ জানে না, হঠাৎ প্রধানমন্ত্রী বিমানে চড়ে বিন বুলায়ে মেহমান হয়ে চলে গেলেন পাকিস্থান, কেন? নওয়াজ শরিফের জন্মদিন, উপহার ইত্যাদি দিয়ে ফেরত আসলেন, বেশ তো। কিন্তু তার কদিন পরেই ৫৬ ইঞ্চ কা সিনা, ঘর মে ঘুসকর মারেঙ্গের পালা শুরু হয়ে গ্যালো। বালাকোটের সেন্টিমেন্ট ভাঙিয়ে ভোট জোগাড়ের পালা। ওদিকে চীন ভারতীয় ভূখন্ডে ব্রিজ তৈরি করছে, এক বিরাট অংশ দখল করে বসে আছে, ৫৬ ইঞ্চ কা সিনা চুপ, চীনা ফৌজ আমাদের ভূখন্ড থেকে একজন যুবককে অপহরণ করে নিয়ে চলে গ্যালো, ৫৬ ইঞ্চ কা সিনার গলায় সাইলেন্সর। সেই তিনি নেহরুর সঙ্গে নিজের তুলনা করতে বসেছেন।

আরও পড়ুন: চতুর্থ স্তম্ভ : ইউ পি মে কা বা?

৪৭ সাল থেকে এ যাবৎ যতজন প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন, পারফরমেন্সের বিচারে সবথেকে নিচুতে থাকা একজন নিজেকে গাড়ির জ্যাক লাগিয়ে তোলার চেষ্টা করছেন, একেই তো অবিমৃষ্যকারিতা বলে।

গান্ধী হত্যার পরে নেহেরু বলেছিলেন, The light has gone out of our lives and there is darkness everywhere. I do not know what to tell you and how to say it. Our beloved leader, Bapu as we called him, the Father of the Nation, is no more. Perhaps I am wrong to say that. Nevertheless, we will never see him again as we have seen him for these many years. We will not run to him for advice and seek solace from him, and that is a terrible blow, not to me only, but to millions and millions in this country. And it is a little difficult to soften the blow by any other advice that I or anyone else can give you. বলেছিলেন, অন্ধকার নেমে এল। আর সেই অন্ধকার যারা নামিয়ে আনল, সেই গান্ধী হত্যাকারী আর এস এস হিন্দুমহাসভার উত্তরসূরী আজ নিজেকে নেহেরুর থেকে বড় বলে প্রমাণ করতে চাইছেন, এ লজ্জা ভারতবাসীর।

মোদিজী মাঝে মধ্যে এ ভাষা সে ভাষা থেকে কটা লাইন ভুল উচ্চারণে পড়ে আমাদের যথেষ্ট আমোদ জুগিয়েছেন, এবার একটু মন দিয়ে পড়ুন, কাঁথির খোকাবাবু এর মানে বুঝিয়ে দিতে পারবেন, সে ভরসা আমাদের নেই, এ বাংলার যে কোনও স্কুলের ক্লাস ফোরের বা ফাইভের ছাত্রের কাছ থেকে বুঝে নেবেন, কবি হরিশ্চন্দ্র মিত্র লিখেছেন,

আপনারে বড় বলে,
বড় সেই নয়
লোকে যারে বড় বলে
বড় সেই হয়।
বড় হওয়া সংসারেতে
কঠিন ব্যাপার
সংসারে সে বড় হয়,
বড় গুণ যার।
হিতাহিত না জানিয়া
মরে অহংকারে ,
নিজে বড় হতে চায়
ছোট বলি তারে।
গুণেতে হইলে বড়,
বড় বলে সবে
বড় যদি হতে চাও,
ছোট হও তবে।

আরও পড়ুন: চতুর্থ স্তম্ভ : সত্যি মিথ্যে, মিথ্যে সত্যি

পুরনো খবরের আর্কাইভ

রবি সোম মঙ্গল বুধ বৃহ শুক্র শনি
 
১০ ১১
১২ ১৩ ১৪ ১৫ ১৬ ১৭ ১৮
১৯ ২০ ২১ ২২ ২৩ ২৪ ২৫
২৬ ২৭ ২৮ ২৯ ৩০ ৩১  
আর্কাইভ

এই মুহূর্তে

বৃহস্পতিবার, ২ মে, ২০২৪
রাজ্যে সপ্তম মাথাভাঙ্গা উচ্চ বিদ্যালয়ের আসিফ কামাল
বৃহস্পতিবার, ২ মে, ২০২৪
রক্তদান করে মনোনয়ন জমা দেবের
বৃহস্পতিবার, ২ মে, ২০২৪
বিশ্বকাপের আগে লঙ্কান বোলারদের ট্রেনিং দেবেন আক্রম
বৃহস্পতিবার, ২ মে, ২০২৪
আগামী বছর কবে মাধ্যমিক, জানুন বিস্তারিত
বৃহস্পতিবার, ২ মে, ২০২৪
মাধ্যেমিকের দশম স্থানে পাণ্ডুয়ার নীলাঙ্কন মণ্ডল
বৃহস্পতিবার, ২ মে, ২০২৪
মাধ্যমিকে জয়জয়কার নরেন্দ্রপুর রামকৃষ্ণ মিশনের
বৃহস্পতিবার, ২ মে, ২০২৪
সন্দেশখালি কাণ্ডে কলকাতা হাইকোর্টে রিপোর্ট সিবিআইয়ের
বৃহস্পতিবার, ২ মে, ২০২৪
রান না নিয়ে তুমুল সমালোচিত হচ্ছেন এম এস ধোনি
বৃহস্পতিবার, ২ মে, ২০২৪
রোগী মৃত্যু, হাসপাতাল ভাঙচুর
বৃহস্পতিবার, ২ মে, ২০২৪
দক্ষিণবঙ্গের সব জেলাতেই সোম ও মঙ্গলবার বৃষ্টির পূর্বাভাস
বৃহস্পতিবার, ২ মে, ২০২৪
গোল পেলেন না এমবাপে, পিএসজিকে ১-০ হারাল ডর্টমুন্ড
বৃহস্পতিবার, ২ মে, ২০২৪
প্রথম স্থানাধিকারী চন্দ্রচূড় চিকিৎসক হতে চায়
বৃহস্পতিবার, ২ মে, ২০২৪
কোচবিহার থেকে মাধ্যমিকে প্রথম চন্দ্রচূড় সেন
বৃহস্পতিবার, ২ মে, ২০২৪
এবছরের মাধ্যমিক পরীক্ষার পাশের হার ৮৬.১৩ শতাংশ
বৃহস্পতিবার, ২ মে, ২০২৪
© R.P. Techvision India Pvt Ltd, All rights reserved.   Privacy Policy
Developed By KolkataTV Team