পুরুলিয়া: শান্তিপূর্ণভাবে শুরু হলেও বেলা বাড়তেই ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ল পুরুলিয়া এক নম্বর ব্লকের গাড়াফুসড়ো গ্রামের এক বুথে। ২৩৯/১৬ নং বুথের মধ্যে ঢুকে ভাংচুর চালায় দুস্কৃতীরা। নষ্ট করে দেওয়া হয় ব্যালট। জানা গিয়েছে, কিছু দুষ্কৃতী বুথের মধ্যে ঢুকে আচমকাই ভাংচুর করতে শুরু করে। ঘটনায় আহত হয়েছেন বেশ কয়েকজন ভোট কর্মীরা। নির্দল ও বিজেপি প্রার্থীর দাবি তৃণমূল আশ্রিত দুষ্কৃতীরাই এই ভাঙচুর চালিয়েছে। তাদের বাধা দিতে গিয়ে আহত হয়েছেন দুই বিজেপি কর্মীও। ওই বুথে বেশ কয়েক ঘণ্টা ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া বন্ধ ছিল।
প্রসঙ্গত, ২০১৮ সালে পঞ্চায়েতের তিন স্তরে প্রায় ৩৪ শতাংশ আসনে তৃণমূল বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়ী হয়েছিল। সেবার শাসকদল বিরোধীশূন্য পঞ্চায়েত গড়ার ডাক দিয়েছিল। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী ২০১৮ সালে সেই বিরোধীশূন্য পঞ্চায়েত গড়ার মূল কারিগর ছিলেন। তখনকার দাপুটে তৃণমূল নেতা অধুনা বিজেপি নেতা ঘোষণা করেছিলেন, বিরোধীশূন্য পঞ্চায়েত দিতে পারলে ৫ কোটি টাকা পুরস্কার দেওয়া হবে। গত পঞ্চায়েত ভোটে হাজার হাজার আসনে বিরোধীরা প্রার্থীই দিতে পারেনি। এবার অবশ্য চিত্রটা কিছুটা হলেও বদলেছে। শাসকদলের হুমকি অগ্রাহ্য করে, মারধর খেয়েও বহু আসনে বিরোধীরা প্রার্থী দিতে পেরেছে। শাসকদলের নেতারা বুক বাজিয়ে বলছেন, আমরা চাইলে আরও বেশি ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারতাম। তাঁদের দাবি, গোলমাল হলে বিরোধীরা এত বেশি মনোনয়ন জমাই দিতে পারত না। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, দুতিনটি বুথে বিরোধীরা গোলমাল করেছে। আর কেন্দ্রীয় বাহিনী দিতে হবে বলে লাফাচ্ছে। কেন্দ্রীয় বাহিনী আমাদের কাঁচকলা করবে। এবার শাসকদল ১২ শতাংশের কিছু বেশি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতেছে তিন স্তরের বহ আসনে।
এবারের পঞ্চায়েত ভোটে শাসকদলের বড় হাতিয়ার রাজ্যের প্রতি কেন্দ্রের বঞ্চনা, একশো দিনের কাজের টাকা আটকে রাখা, লক্ষ্মীর ভাণ্ডার থেকে রাজ্য সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের সাফল্য, বিজেপি-বাম-কংগ্রেসের আঁতাঁত প্রভৃতি। এছাড়াও প্রচারের ইস্যু ছিল কেন্দ্রীয় এজেন্সির অতিসক্রিয়তা। বিরোধীদের মূল হাতিয়ার শাসকদলের সন্ত্রাস, দুর্নীতি এবং চুরি। বাম-কংগ্রেস তো স্লোগানই তুলেছে, চোর ধরো, জেল ভরো। বিজেপিও চুরি এবং দুর্নীতিকেই প্রচারে তুলে ধরেছে।