কলকাতা: ভোট পরবর্তী ‘অশান্তি’ মামলার তদন্তভার সিবিআই (CBI) এবং সিটের উপর দিয়েছিল কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। ১৯ জুলাই হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল, ভোট পরবর্তী খুন, ধর্ষণ, অস্বাভাবিক মৃত্যুর মতো গুরুতর ঘটনার তদন্ত করবে সিবিআই। বাড়ি ভাঙচুর করা-আগুন লাগানো, মারধর করা, ঘরছাড়া করার মতো অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার তদন্ত করবে সিট (SIT)। ছ’সপ্তাহের মধ্যে জমা দিতে হবে রিপোর্ট।
সেই নির্দেশের কয়েকদিনের মধ্যে তদন্ত শুরু করে দিয়েছে সিবিআই। জেলায় জেলায় ঘুরে আক্রান্ত ও মৃতদের পরিবারের সঙ্গে কথা বলা ছাড়াও ২৭টি মামলা রুজু করেছে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। নদিয়া থেকে ২ জনকে গ্রেফতারও করেছে সিবিআই। প্রতিদিনই রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় যাচ্ছেন তদন্তকারীরা। কিন্তু ভোট পরবর্তী অশান্তি মামলার নির্দেশের ১০ দিন পেরিয়ে গেলেও তদন্ত শুরু করেনি সিট, এমনটাই অভিযোগ মামলাকারীদের একাংশের।
ভোট পরবর্তী অশান্তি মামলার নির্দেশের পরপরই সিবিআই তদন্তে নামলেও, সিট কোথায়? এই অভিযোগ তুলে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হচ্ছেন মামলাকারীদের একাংশ। তাঁদের প্রশ্ন, ১৯ অগস্টের রায়কে কেন মান্যতা দিচ্ছে না সরকার? আদালতের নির্দেশ মোতাবেক কিভাবে ৬ সপ্তাহের মধ্যে রিপোর্ট জমা দেবে সিট, সেই প্রশ্নও তুলছেন তাঁরা। মঙ্গলবার ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতির এজলাসে তাঁরা আবেদন জানাতে পারেন।
আরও পড়ুন: ভোট পরবর্তী হিংসা মামলায় সিবিআই তদন্তের নির্দেশ হাইকোর্টের
হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল, সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির নজরদারিতে কাজ করবে সিট (SIT)। তিন আইপিএস আধিকারিক সুমনবালা সাহু, সৌমেন মিত্র এবং রণবীর কুমারের নেতৃত্বে সিট গঠিত হবে। বাড়ি ভাঙচুর করা-আগুন লাগানো, মারধর করা, ঘরছাড়া করার মতো অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার তদন্ত করবে সিট। আইপিএস রশিদ মুনির খানের বিরুদ্ধে সিবিআই এবং সিট- উভয়ই তদন্ত করবে।
সিবিআইয়ের তরফে রাজ্যের ভোট পরবর্তী অশান্তি মামলা তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে ডিআইজি অখিলেশ সিংহকে। রাজ্যের গরু-কয়লা পাচার মামলার তদন্তের দায়িত্বও পেয়েছিলেন তিনি। পোর্ট ট্রাস্টের অফিসে বেস ক্যাম্প তৈরি করে তদন্তের কাজ চালানো হচ্ছে।
আরও পড়ুন: ভোট-পরবর্তী অশান্তির তদন্তে কলকাতায় সিবিআইয়ের ৪ জয়েন্ট ডিরেক্টর
তদন্তের স্বার্থে এবং তদন্তের কাজ দ্রুত শেষ করার জন্য রাজ্যকে ৪টি জোনে ভাগ করেছে সিবিআই। সেগুলি হল কলকাতা, উত্তরবঙ্গ, দক্ষিণবঙ্গ এবং পশ্চিমাঞ্চল। ৪টি জোনের তদন্তের দায়িত্বে রয়েছেন একজন করে জয়েন্ট ডিরেক্টর। তদন্তের গতি প্রকৃতি প্রতিনিয়ত দিল্লিতে পাঠাচ্ছেন তাঁরা। আগামী ৬ মাসের মধ্যে তদন্তের রিপোর্ট জমা দিতে বলেছে হাইকোর্ট। সেই কারণে দ্রুততার সঙ্গে তদন্তের কাজ শেষ করতে চান সিবিআই কর্তারা।