কলকাতা: নির্দলে কড়া তৃণমূল (Trinomul)। নির্দল প্রার্থী হয়ে মনোনয়ন জমা দেওয়ার ঘটনায় সারা রাজ্যে এখন পর্যন্ত ১৯০ জন নেতা-কর্মীকে বহিষ্কার করল তৃণমূল কংগ্রেস। ভোট ঘোষণার পরদিন থেকেই শুরু হয় মনোনয়নপত্র পেশের কাজ। দলের টিকিট না পেয়ে বিভিন্ন জেলাতেই তৃণমূলের অনেকেই নির্দল প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র পেশ করেন। বহু জায়গায় দলীয় নির্দেশ থাকা সত্বেও অনেক তৃণমূল নেতা-কর্মী মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করেননি। শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশেই জেলায় জেলায় বহিষ্কার পর্ব শুরু হয়েছে। তৃণমূল সূত্রের খবর, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ১৯০ জনকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এই সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনসংযোগ যাত্রার অন্যতম উদ্দেশ্য ছিল, মানুষের ভোটে পঞ্চায়েতের প্রার্থী বাছাই করা। তাই জনসংযোগ যাত্রা চলাকালীনই জেলায় জেলায় ভোটের ব্যবস্থা করা হয়। যদিও সেই ভোট নিয়েও ব্যাপক বিশৃঙ্খলা দেখা দেয়। কোথাও গোষ্ঠী কোন্দলে ভোট ভেস্তে যায়, কোথাও ব্যালট বাক্স ছিনতাই করা হয়, আবার কোথাও দুই গোষ্ঠীর মধ্যে মারামারির ঘটনাও ঘটে। অভিষেক প্রথম থেকেই বলে এসেছেন, পঞ্চায়েতে প্রার্থী মনোনয়নের ব্যাপারে দলীয় সিদ্ধান্তই চূড়ান্ত। তা অমান্য করে কেউ নির্দল হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলে দল কড়া ব্যবস্থা নেবে। তৃণমূল শীর্ষ নেতৃত্ব দলের বিক্ষুব্ধদের নির্দল প্রার্থী হিসেবে পেশ করা মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করার নির্দেশ দেয়। কিন্তু সেই নর্দেশকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে অনেকেই নির্দল হিসেবে থেকে গিয়েছেন। এবার তাদেরই বহিষ্কার করা শুরু হয়েছে।
আরও পড়ুন: Panchayat Election 2023 | তৃণমূলে ফের দল থেকে বহিষ্কার ৪৩
বেশ কয়েকটি জেলায় তৃণমূলের বিধায়করাও নির্দলদের পাশে দাঁড়িয়েছেন। মুর্শিদাবাদের ভরতপুরের বিধায়ক হুমায়ুন কবীর-সহ আরও চার বিধায়ক দলের বিরুদ্ধে কার্যত বিদ্রোহ ঘোষণা করে নির্দলদের মদত দিচ্ছেন বলে অভিযোগ। হুগলির বলাগড়ের বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্যাপারীও নির্দলদের সমর্থন করছেন। একইভাবে উত্তর দিনাজপুরে ইসলামপুরের বিধায়ক আব্দুল করিম চৌধুরী বিদ্রোহের ধ্বজা উড়িয়েছেন। দল এই বিদ্রোহীদের সতর্ক করেও তাঁদের নিয়ে উদ্বেগে রয়েছে। ভোট পর্ব মিটলে এই বিধায়কদের বিরুদ্ধেও কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে বলে তৃণমূল সূত্রের খবর।
তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, দলবিরোধী কাজ করার জন্য পশ্চিম মেদিনীপুর ৫৮ জন, পূর্ব মেদিনীপুরে ৩৯ ,মুর্শিদাবাদে ২৫, বীরভূমে ১৫, হুগলিতে ২৫, ঝাড়গ্রামে ১৪, উত্তর দিনাজপুরে পাঁচ জনকে বহিষ্কার করা হয়েছে। এছাড়াও মালদহ, দক্ষিণ দিনাজপুর, কোচবিহার, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার প্রভৃতি জেলাতেও বহিষ্কার প্রক্রিয়া চলছে।