ক্যানিং: অশান্তি আর বিতর্ক যেন পিছু ছাড়ছে না বাসন্তীতে। শনিবার রাতে যুব তৃণমূল (TMC) কর্মী জিয়ারুল মোল্লা খুনের ঘটনার পর এবার একাধিক বিজেপি (BJP) প্রার্থীর বাড়িতে হামলার অভিযোগ তৃণমূলের বিরুদ্ধে। দক্ষিণ ২৪ পরগনার বাসন্তীতে ভরতগড় গ্রাম পঞ্চায়েতের ৬ গরানবোস এলাকার ঘটনা। অভিযোগ, ওই এলাকার বিজেপি প্রার্থী লতিকা সর্দার ও সন্ধ্যা রপ্তানের বাড়িতে রাতের অন্ধকারে দুষ্কৃতীরা হামলা চালায়। দুষ্কৃতীরা তৃণমূলের লোক বলে দাবি বিজেপি প্রার্থীদের।
ওই দু’জন বিজেপি প্রার্থী জানিয়েছেন, তাঁরা বিজেপি প্রার্থী হওয়ার পর থেকেই তাঁদের নানা ভাবে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। যদিও এই সমস্ত অভিযোগ অস্বীকার করছে স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্ব। তাঁরা পাল্টা দাবি করেছেন, শনিবার তৃণমূল কর্মীকে লক্ষ্য করে গুলি চালানোর ঘটনাকে ধামা চাপা দেওয়ার জন্য মিথ্যে অভিযোগ করছে বিজেপি।
এ নিয়ে স্থানীয় বিধায়ক শ্যামল মন্ডল জানান বিজেপির পক্ষ থেকে যে অভিযোগ করা হচ্ছে সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন।রাজনৈতিক অভিযোগ ও পাল্টা অভিযোগ যতই হোক না কেন অশান্তি কোন অবস্থাতেই পিছু ছাড়ছে না বাসন্তীতে। আর সেই আতঙ্কে আতঙ্কিত বাসন্তীর মানুষ।
আরও পড়ুন: Panchayat Election 2023 | Basanti | ফের গুলি বাসন্তীতে, জখম তৃণমূল কর্মী
উল্লেখ্য,পঞ্চায়েত ভোটের প্রাক্কাল থেকেই রাজ্যজুড়ে অশান্তি ছড়িয়েছে। গত ২৪ দিনে রাজ্যে ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে। প্রথম থেকেই হিংসার ঘটনায় সরব রাজ্যপাল। তিনি একাধিক জানিয়েছেন, কোনও ভাবে রাজ্যে হিংসা বরদাস্ত নয়। এদিনও তাঁকে ফের সরব হতে দেখা যায়। তিনি বলেন, রক্তের হোলি খেলা বন্ধ হওয়া দরকার। মানুষের রক্ত দিয়ে রাজনৈতিক হোলি খেলা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। এলাকায় গিয়ে আমি পরিস্থিতি দেখেছি। কারা অশান্তির পিছনে তার তথ্য আমার কাছে রয়েছে। হিংসার যে আগুন রাজ্যের জেলায় জেলায় ছড়িয়েছে সেই দুঃখজনক অধ্যায় শেষ হওয়া উচিত। কে হিংসা ছড়াচ্ছে, তা আমার কাছে বড় কথা নয়। হিংসায় সাধারণ মানুষের ক্ষতি হচ্ছে, এটাই বড় কথা।আইনশৃঙ্খলা নিয়ে কড়া মন্তব্য করার পাশাপাশি রাজ্য নির্বাচন কমিশনে ভূমিকা নিয়ে তিনি বলেন, রাজ্য নির্বাচন কমিশনারের উচিত সুষ্ঠু ও অবাধ ভোট করান। ৪৮ ঘণ্টা আমি অপেক্ষা করব। তার মধ্যে কী ব্যবস্থা নেওয়া হয় দেখব।
পঞ্চায়েত নির্বাচনের আবহে অশান্ত ভাঙড়, ক্যানিং পরিদর্শনে আগেই গিয়েছিলেন রাজ্যপাল। এমন কি উত্তরবঙ্গের সফরে গিয়েও কোচবিহারের দিনহাটার অশান্ত এলাকা পরিদর্শনেও যান। সেখানকার নিহতদের পরিবার ও আক্রান্তদের সঙ্গে কথাও বলেন। তিনি বলেন, গণতন্ত্রের পাহারাদারদের হাতে যেন মৃত্যুঘণ্টা না বাজে। হিংসা পরিবেশ কোনওভাবেই বরদাস্ত নয় সেটা স্পষ্ট বুঝিয়ে দিয়েছেন তিনি সব কিছুর উপর নজর রাখছেন। কোনওরকম অব্যবস্থা ও হিংসার বরদাস্ত করা হবে না। শনিবার তিনি বলেন, রাজভবনকে (Raj Bhavan) ভ্রাম্যমান করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।