কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক : দাবি আদায়ের ১৪ ঘণ্টা । শেষ পর্যন্ত অবরোধ উঠল ঠাকুরনগরে । শুরুটা হয়েছিল ভোর পাঁচটা নাগাদ । রেলের পর বিকেলের দিকে সড়ক অবরোধও করা হয় । শেষ পর্যন্ত সন্ধ্যা সাতটা নাগাদ অবরোধ ওঠে ।
নৈশ কার্ফুতে মাঝরাতের দিকে ছাড়া প্রথম ও দ্বিতীয় ট্রেন বাতিলের প্রতিবাদে রেল অবরোধে যাত্রী পরিষেবা বিঘ্নিত হল শিয়ালদহের উত্তর ও দক্ষিণ শাখায়। উত্তরের বনগাঁ শাখা ও দক্ষিণের ক্যানিং শাখায় ঘণ্টা পর ঘণ্টা ট্রেন অবরোধ করে রাখেন ক্ষুব্ধ যাত্রীরা। কিন্তু তার জেরে চরম দুর্ভোগে নাকাল হন শহরমুখী অফিসযাত্রীরা। দক্ষিণের তালদি স্টেশনে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে অফিসযাত্রীদের ব্যাপক বচসা ও হাতাহাতিও বাধে। দুটি ক্ষেত্রেই সমস্যার মূল কারণ হল রেল চলাচল সম্পর্কে নিত্যযাত্রীদের মধ্যে চূড়ান্ত বিভ্রান্তি ও ধোঁয়াশা। করোনার কারণে রাতে ট্রেন বন্ধ থাকায় বহু যাত্রী আর্থিক কারণে বিপদে পড়েছেন বলে তাঁদের দাবি।
করোনার তৃতীয় ঢেউয়ে জেরবার রাজ্য সরকার নৈশ কার্ফু জারি করেছে। তার জেরে রাত ১০টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত জরুরি পরিষেবা ছাড়া যান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা রয়েছে। সেই মতো রেল পরিষেবাতেও কিছু পরিবর্তন আনা হয়েছে। যাতে বিপাকে পড়েছেন বেশ কিছু ছোট ব্যবসায়ী ও রুজিরুটির খোঁজে নিত্য শহরে আসা মানুষজন।এই সমস্ত মানুষের মধ্যে রয়েছেন ছোট ব্যবসায়ী, শহরে আসা পরিচারিকা ও দিন আনা দিন খাওয়া লোকজন। যাঁরা ভোররাতের ওই ট্রেনগুলিতে কলকাতায় আসেন। এবং বিকেল- সন্ধের দিকে ঘরে ফিরে যান।
প্রথম দুটি ট্রেন বন্ধ থাকায় তাঁদের কলকাতায় ঢুকতে দেরি হয়ে যাচ্ছে। ফলত শহুরে গৃহস্থ বাড়িতে কাজ করা পরিচারিকাদের দেরি হয়ে যাচ্ছে। তাঁরা কাজ হারানোর আশঙ্কায় ভুগছেন। এছাড়াও ক্যানিং থেকে বহু মাছ ব্যবসায়ী প্রতিদিন কলকাতায় আসেন ভোররাতের ওই ট্রেনগুলিতে। শহরে সকালের বাজারে ঢুকতে তাঁদেরও দেরি হয়ে যাচ্ছে। ফলে লোকসানের মুখে পড়ছেন মাছ ব্যবসায়ীরাও। বনগাঁ লাইনের ঠাকুরনগর থেকে কলকাতায় আসেন ছোট-বড় বহু ফুল ব্যবসায়ী।ট্রেন বাতিলের কারণে তাঁদেরও ফুল ব্যবসা মার খাচ্ছে বলে অভিযোগ। এইসব অভিযোগ ও প্রতিবাদে এদিন উত্তর ও দক্ষিণের জোড়া রেল অবরোধের বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে শিয়ালদহের ট্রেন পরিষেবা।
আরও পড়ুন- Train blocked: ঠাকুরনগরে রেল অবরোধ ফুল ব্যবসায়ীদের, নাকাল নিত্যযাত্রীরা
নিত্যযাত্রী ও অফিসযাত্রীদের অভিযোগ, অবরোধের কারণে হাজার হাজার মানুষ এদিন কর্মক্ষেত্রে পৌঁছতে পারেননি। মাঝপথ থেকেই তাঁদের ঘরে ফিরে যেতে হয়েছে। আংশিক লকডাউনের কারণে অনেককেই এখন সাত তাড়াতাড়ি ঘর থেকে বেরিয়ে ১০টার মধ্যে ঢুকে পড়তে হচ্ছে। দু’একজন এও বললেন, কাজে না যেতে পারায় অনেকেরই একদিনের বেতন কাটা যাবে। দেরিতে পৌঁছনোর জন্য বহু কর্মীর ছুটি কাটা যাবে। তাঁদের অভিযোগ, প্রতিবাদ জানানোর থাকলে রেলকে সেটা বললেই হত। পুলিস প্রশাসনে আবেদন জানানো যেত। কিন্তু এভাবে আচমকা অবরোধে বসে পড়ায় জেরবার হতে হয়েছে তাঁদের। বেলা-দুপুর পর্যন্ত নাস্তানাবুদ হয়ে শেষমেশ ঘরে ফিরে যেতে হয়।