কলকাতা: বলাগড়ে তৃণমূলের কোন্দল আরও বাড়ল। বুধবার রাতে জিরাটে বলাগড়ের বিধায়ক মনোরঞ্জন ব্যাপারীর একটি অফিসে ব্যাপক ভাংচুর করা হয়েছে। চেয়ার, টেবিল ভাঙা হয়েছে, দলীয় পতাকা ছিঁড়ে ফেলা হয়েছে। সেই ঘটনার কথা জানিয়ে বিধায়ক ফের বৃহস্পতিবার একটি ফেসবুক পোস্ট করেছেন। সেখানে তিনি পাল্টা দেওয়ার হুমকিও দেন। এদিনও তিনি আক্রমণ শানিয়েছেন জেলা পরিষদ সদস্য এবং যুব তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক রুনা খাতুন এবং তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে। বিধায়কের দাবি, দল তাঁর পাশেই আছে। তিনি বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়া আমি আর কাউকে নেতা মানি না। তাঁরা আমাকে যা বলবেন, তাই আমি মেনে নেব।
এদিকে বুধবার ফেসবুকে মনোরঞ্জন রুনার বিরুদ্ধে একটি আপত্তিকর মন্তব্য করেন। পরে তিনি ভুল বুঝতে পেরে ফেসবুকেই ক্ষমাও চান। কিন্তু তাতে বরফ গলেনি।রুনা তাঁর বিরুদ্ধে থানায় অভিযোগ দায়ের করেন এদিন। তিনি বলেন, অসম্মানিত হয়েছি। তাই অভিযোগ দায়ের করেছি। রুনা থানায় অভিযোগ করলেও যে তিনি দমবেন না, এদিন তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন বিধায়ক। সব মিলিয়ে বলাগড়ে তৃণমূলের এই কোন্দল কলতলার ঝগড়ার পর্যায়ে নেমে এসেছে। মনোরঞ্জন এবং রুনা, দুজনেই দলের রাজ্য নেতৃত্বকে সব জানিয়েছেন বলে দাবি করেন।
আরও পড়ুন: স্কুলে আসে না কোনও ‘কন্যাশ্রী’, দাঁতনে বিনাশ্রমে বেতম শিক্ষিকাদের
এদিনও মনোরঞ্জন বলেন, রুনা এবং তাঁর স্বামী অরিজিত যেভাবে জুয়ার বোর্ড চালাতেন, গাঁজা পাচার করতেন, তা আমি বন্ধ করে দিয়েছি বলে আমার বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র চলছে। রুনা আমাকে বলাগড়-ছাড়া করতে চান। তার জন্য আর্থিক প্রলোভন দেখাচ্ছেন। আমাকে বলাগড়ে বহিরাগত বলা হচ্ছে। তাহলে তো নন্দীগ্রামে মমতাদি এবং ডায়মন্ড হারবারে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ও বহিরাগত।
তবে মনোরঞ্জন ফেসবুকে তাঁর বিতর্কিত মন্তব্যের জন্য ক্ষমাও চেয়েছেন। তিনি বলেন, দরকার হলে আমি রুনার কাছেও ক্ষমা চাইতে পিছপা হব না। ওই শব্দ ব্যবহার করা আমার উচিত হয়নি। তার জন্য অনুশোচনা প্রকাশ করছি।
বুধবার ফেসবুকে বিধায়ক লিখেছিলেন, বলাগড়ে কদাকার ঘটনাক্রম চলছে। তিনি দলেরই একাংশের হাতে খুন হওয়ারও আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন। বৃহস্পতিবার ফের ফেসবুকে মনোরঞ্জন লেখেন, আমি এখন এমন এক নোংরা লড়াইয়ে নামতে বাধ্য হয়েছি যা আমার জনপ্রিয়তার পক্ষে শুভ নয়। একদল অসভ্য, অভদ্র বাজে লোকের সঙ্গে লড়তে গিয়ে আমার ভাষা বদলে গিয়েছে। তা মোটেই লেখকসুলভ নয়। গতকাল রাত দশটা নাগাদ সেই পোস্ট লেখার দশ-কুড়ি সেকেন্ডের মধ্যে বুঝতে পারি, একটা মস্ত ভুল হয়ে গিয়েছে। সঙ্গে সঙ্গে তা মুছে দিই। কিন্তু যারা সর্বক্ষণ শকুনের মতো আমার প্রোফাইলে নজর পেতে বসে আছে, তারা সেই পোস্টের স্ক্রিনশট নিয়ে নেয়। সেটাকে তারা আমার বিরুদ্ধে ব্যবহার করতে থাকে। জনে জনে তা পাঠানো হয়। এসব আমি ফোনে জানতে পেরেছি। আমার শুভাকাঙ্খীরা জানতে চান, কেন তা লিখলাম। আমি তাঁদের জানাচ্ছি, এটা মস্ত ভুল হয়ে গিয়েছে। আমি সকলের কাছে ক্ষমা চাইছি।