সিঙ্গুর: ফের সিঙ্গুরে একচেটিয়া আধিপত্য বিস্তার তৃণমূলের। সবুজ ঝড়ে ধুয়ে-মুছে সাফ তাবড় বিরোধীরা। সিঙ্গুরের ১৬টি গ্রাম পঞ্চায়েতের সবকটিতেই জয় পেল শাসকদল। পঞ্চায়েত সমিতির ৪৮ টির মধ্যে ৪৭ টি আসনই পেয়েছে তৃণমূল।মঙ্গলবার বেশি রাত পর্যন্ত খবর, জেলা পরিষদের তিনটি আসনেই এগিয়ে রয়েছে শাসকদল।
নন্দীগ্রামের মতো সিঙ্গুরও মমতা বন্দোপাধ্যায়ের জমি আন্দোলনের অন্যতম ভর কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। ২০০৬ সালে সিঙ্গুরে টাটাদের ন্যানো কারখানা গড়ে তোলাকে ঘিরে তৎকালীন বিরোধী নেত্রী মমতার জমি আন্দোলন শুরু হয়। যার পরিণতিতে টাটারা প্রায় ৮০ শতাংশ কাজ হয়ে যাওয়া সিঙ্গুরের ন্যানো কারখানা থেকে হাত গুটিয়ে নেন। তারপর থেকে অনেক মামলা মোকদ্দমায় জড়ায় সিঙ্গুর। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে বলা হয়, জোর করে কেড়ে নেওয়া ওই কৃষিজমি কৃষকদের ফিরিয়ে দিতে হবে। ২০১১ সালে পালা বদলের পর মুখ্যমন্ত্রী হয়েই মমতা বন্দোপাধ্যায় সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে ওই জমি অনিচ্ছুক কৃষকদের হাতে ফিরিয়ে দেন। ২০০৯ এবং ২০১৪ সালের লোকসভা ভোটে সিঙ্গুর ছিল বড় ইসু। যদিও ওই দু’বারই হুগলি লোকসভা কেন্দ্র থেকে তৃণমূল জয় পায়। দু’বারই তৃণমূল ছিল তৃতীয় স্থানে। ২০১৯ সালের লোকসভা ভোটে হুগলি কেন্দ্রে জয়ী হন বিজেপির লকেট চট্টোপাধ্যায়। ওই কেন্দ্রের অধীনে সিঙ্গুর বিধানসভা এলাকা থেকে লকেট ১০ হাজারেরও বেশি ভোটে লিড পান।
আরও পড়ুন: Panchayat Result 2023 | দক্ষিণ দিনাজপুরে পঞ্চায়েত ভোটের ফল কীরকম হলো জেনে নিন
সিঙ্গুরের তৃণমূল বিধায়ক রবীন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য ২০০৬ সালের গোড়া থেকেই সিঙ্গুর আন্দোলনের মমতার সঙ্গী ছিলেন। পরবর্তীকালে অবশ্য সিঙ্গুরের তৃণমূল নেতা বেচারাম মান্নার সঙ্গে রবীন্দ্রনাথের বিরোধ শুরু হয়। দু’জনের মধ্যে দূরত্বও বাড়ে। শেষে প্রবীণ রবীন্দ্রনাথ তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে যোগ দেন। ২০২১ সালে লোকসভা ভোটে বিজেপির টিকিটে দাঁড়িয়ে রবীন্দ্রনাথ পরাজিত হন। সিঙ্গুর আন্দোলনের পর প্রায় ১৬ বছর কেটে গেলেও সিঙ্গুর আজও তার প্রাসঙ্গিকতা হারায়নি। হুগলি জেলায় তৃণমূল গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জর্জরিত থাকলেও পঞ্চায়েত ভোট সিঙ্গুরে তার কোনও প্রভাব পড়ল না। এদিন ভোটার ফলাফলেই তা স্পষ্ট।