বোলপুর: বিশ্বভারতীর পরিবেশ এখনও স্বাভাবিক হয়নি৷ছাত্র আন্দোলন সংহতি জানাতে শনিবার তৃণমূল ছাত্র পরিষদ মিছিল করেছে৷ সেই মিছিলকে ঐতিহাসিক আখ্যা দিয়ে উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীকে সাবধান হওয়ার বার্তা দিলেন অনুব্রত মণ্ডল৷ তাঁর ভাষায় ‘উপাচার্যের পাগলামি ছাড়াবো আমি’৷
এ দিন তৃণমূলের মিছিলে জেলার বিভিন্ন স্কুল-কলেজের পড়ুয়ারা যোগ দেন। বাসে করে ছাত্র-ছাত্রীরা সকাল সকাল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে পৌছয় তাঁরা। বোলপুরের ডাকবাংলো মাঠ থেকে মিছিল শুরু হয়ে শান্তিনিকেতন রোড, শান্তিনিকেতন থানা হয়ে বিশ্বভারতীর ইন্টারন্যাশনাল গেস্ট হাউস ঘুরে ফের ডাকবাংলো মোড়ে মিছিল শেষ হয়৷ উপাচার্যের বাসভবনের মাত্র ৫০ মিটার দূরে পূর্বপল্লী গেস্ট হাউসের সামনে ধর্না মঞ্চেও কয়েক জনের প্রতিনিধি দল সংহতি জানাতে যায়।
আরও পড়ুন- ভবানীপুর উপনির্বাচনের দিন ঘোষণা, ৩০ সেপ্টেম্বর ভোট
সব মিলিয়ে বিশ্বভারতী নিয়ে শনিবার মুখ খোলেন অনুব্রত। তিনি বলেন, বিশ্বভারতীর উপাচার্য অধ্যাপক বিদ্যুৎ চক্রবর্তী একটা মস্ত বড় পাগল। ওর পাগলামি আমরা ছাড়িয়ে দেবো। এখন শুনলাম, উপাচার্যকে নাকি শিকল দিয়ে বেঁধে রেখেছে উনার পরিবার৷ যদিও আমি সত্য মিথ্যা জানি না”।
অনুব্রত আরও বলেন, শান্তিনিকেতনে মিছিল হয়েছে৷ আগামিদিনে বিশ্বভারতীতে বড়সড় আন্দোলন করবে তৃণমূল। উপাচার্য ভাবছেন? ছাত্র-ছাত্রী, অধ্যাপক, কর্মীদের বহিষ্কার করে পার পেয়ে যাবে! তা আমি হতে দেবো না।’
আরও পড়ুন- পঞ্জশির দখলের দাবিতে তালিবানের উল্লাস, গুলি বৃষ্টিতে কাবুলে মৃত ১৭
বেশ কয়েক বছর আগে বিশ্বভারতীর উপাচার্য পদে যোগ দিয়েছেন অধ্যাপক বিদ্যুৎ চক্রবর্তী। তিনি উপাচার্যের আসনে বসার পর থেকেই বিতর্ক যেন কিছুতেই পিছু ছাড়ছে না রবীন্দ্রনাথের সাধের শান্তিনিকেতনকে। রবীন্দ্রনাথ জীবনের সবচেয়ে বেশি সময় কাটিয়েছেন শান্তিনিকেতনে। বাঙালির প্রিয় জায়গা এই শান্তিনিকেতন। সেই শান্তিনিকেতনেই নাকি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর “বহিরাগত”। এ ধরনের বিভিন্ন মন্তব্য করে একের পর এক বিতর্কে জড়িয়েছেন বিশ্বভারতীর উপাচার্য অধ্যাপক বিদ্যুৎ চক্রবর্তী।
আরও পড়ুন- ‘লক্ষ্মীর ভাণ্ডার’ প্রকল্পের ‘লক্ষ্মী’দের ব্যঙ্গ করে গান বিজেপি বিধায়কের
শুধু বিতর্কিত মন্তব্যই নয় তাঁর কাজকর্মের প্রতিবাদ করায় ১২ জন অধ্যাপক-অধ্যাপিকাকে আগেই সাসপেন্ড করেছিল বিশ্বভারতী। এছাড়াও অর্থনীতি এবং সংগীত বিভাগের মোট ৩ জন পড়ুয়াকে ৬ মাসের জন্য সাসপেন্ড করা হয়। পরবর্তীতে সাসপেনশনের মেয়াদ বর্ধিত করা হয়। সম্প্রতি তিন পড়ুয়াকে ৩ বছরের জন্য বহিষ্কার করে কর্তৃপক্ষ। উপাচার্যের এই স্বৈরাচারী মনোভাবে জন্য পদত্যাগ সহ বিভিন্ন দাবিতে আন্দোলনে নামে ছাত্রছাত্রীরা। পরিস্থিতি সামলাতে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ মামলা করে কলকাতা হাইকোর্টে। সেই মামলা চলছে। নিজেদের দাবিতে অনড় বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা।