বসিরহাট: ফের বাড়ছে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা। উত্তর ২৪ পরগনায় ডেঙ্গিতে আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে হল ৮। এখনও পর্যন্ত জ্বর-সর্দি-কাশি নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি ২১ জন। এমনকী জ্বর নিয়ে বহিঃবিভাগে লম্বা লাইন। বসিরহাট মহকুমার বর্ষা প্রত্যেকেই জ্বরের আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হচ্ছে। বাদুড়িয়া রুদ্রপুর গ্রামীণ হাসপাতালে ৭ জন ডেঙ্গির উপসর্গ নিয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। অন্যদিকে বসিরহাট স্বাস্থ্য জেলা হাসপাতালে ১ জন ডেঙ্গি আক্রন্ত ও ১২ জন জ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। তাঁদের রক্তের নমুনা সংগ্রহ করে কলকাতা ট্রাপিকালে পাঠানো হয়েছে।
বেলেঘাটার হাসপাতালে শুক্রবার রাতে ডেঙ্গিতে প্রাণ হারিয়েছেন ৪৫ বছর বয়সি এক প্রৌঢ়া। নদিয়ার রানাঘাটের ধানতলার বাসিন্দা তিনি। হাসপাতাল সূত্রে খবর, জ্বর নিয়ে প্রথমে প্রৌঢ়াকে রানাঘাটের এক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। জ্বর না কমায় সেখান থেকে তাঁকে কল্যাণীর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। কিন্তু সেখানেও কোনও লাভ হয়নি। পরে কলকাতার বেলেঘাটা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। আইসিইউ-তে চিকিৎসা চলাকালীন শুক্রবার রাতে মৃত্যু হয় ওই প্রৌঢ়ার। হাসপাতাল সূত্রে খবর, ডেঙ্গিতে আক্রান্ত হয়ে মারা গিয়েছেন তিনি।
গত ২৪ ঘণ্টায় ২১ জন জ্বরে আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন। হাড়োয়া গ্রামীণ হাসপাতালের বাইরে জ্বরে আক্রান্ত হয়ে লম্বা লাইন। লাফিয়ে লাফিয়ে আক্রান্তের সংখ্যা বাড়ছে। বর্ষার জল, নোংড়া আবর্জনার স্তূপ তৈরি হয়েছে এলাকাজুড়ে। সে কারণে সেখান থেকেই মশার লার্ভা তৈরি হচ্ছে। এ কারণে স্বাস্থ্য দফতরের কাছে নতুন চিন্তার ভাঁজ। বসিরহাট স্বাস্থ্য জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক অনুপম ভট্টাচার্য বলেন, আক্রান্তদের মধ্যে বেশিরভাগ ছোট শিশু। ইতিমধ্যে ডেঙ্গি সর্তকতা নিয়ে সাধারণ মানুষকে সচেতনতার বার্তা দিচ্ছে গ্রামে গ্রামে স্বাস্থ্যকর্মীরা। বাড়ি বাড়ি গিয়ে জ্বরে আক্রান্ত রোগীদের যাতে কোনও অসুবিধা নয় দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়ার আবেদন করছেন। অন্যদিকে দ্রুত হাসপাতালে গিয়ে বিনামূল্যে রক্ত পরীক্ষা করানোর পরামর্শও দেওয়া হচ্ছে।
আরও পড়ুন: Bogtui Incident | ফের অগ্নিকাণ্ড বগটুই গ্রামে
অন্যদিকে নদিয়ার রানাঘাটে ক্রমশ ভয়ানক রূপ নিচ্ছে ডেঙ্গি। আর তার মধ্যে রানাঘাট মহকুমা ও চাকদহের একটা অংশ সব থেকে বেশি ডেঙ্গি প্রভাবিত এলাকা। আর একথা জানালেন নদিয়া জেলা স্বাস্থ্য আধিকারিক জ্যোতিষচন্দ্র দাস। প্রসঙ্গত, গত কয়েক সপ্তাহে রানাঘাট ও তার পার্শবর্তী এলাকায় ব্যাপক হারে বেড়েছে ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা। বর্তমানে এলাকার সমস্ত সরকারি এবং বেসরকারি হাসপাতালে বহু ডেঙ্গি রোগী চিকিৎসাধীন। সরকারিভাবে এখনও পর্যন্ত তেমন কোনও কোনও প্রাণহানীর ঘটনা না ঘটলেও সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে ক্রমশ বাড়তে থাকা ডেঙ্গি আক্রান্তের সংখ্যা চিন্তা বাড়াচ্ছে স্বাস্থ্য দফতরের। ডেঙ্গু নিয়ে সচেতনতা প্রচার করেও কোনও লাভ না হওয়ায় এবার বিভিন্ন জায়গায় গাপ্পি মাছ ছাড়ার পরিকল্পনা করছে স্বাস্থ্য দফতর।