কলকাতা: ছাত্রছাত্রীর অভাবে বেশ কিছু স্কুল (School) বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য সরকার। প্রাইমারি, আপার প্রাইমার, মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক স্তরের ৮২o৭ টি স্কুল চিহ্নিত করা হয়েছে, যে স্কুলগুলোতে শিক্ষকের (Teacher) তুলনায় ছাত্র-ছাত্রীর (Student) সংখ্যা খুবই নগণ্য। এর মধ্যে কলকাতায় ৫৩১ টি স্কুল রয়েছে। পাশাপাশি যেসব স্কুলে শিক্ষকদের তুলনায় পড়ুয়া কম সেইসব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে শিক্ষকদের অন্যত্র বদলি করার পরিকল্পনাও রয়েছে সরকারের।
আবার যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা বেশি, কিন্তু শিক্ষকের অভাব রয়েছে, সেগুলিতে ওই শিক্ষকদের বদলি করারও উদ্যোগ নেওয়া হবে। এ নিয়ে শিক্ষক সংগঠনগুলির বক্তব্য, শিক্ষাকে বেসরকারি হাতে তুলে দেওয়ার জন্যই সরকার এ ধরনের উদ্যোগ নিয়েছে।
এমনিতেই সরকারি স্কুলগুলির হাল খুবই খারাপ। শুধু শহরে নয় গ্রামে-গঞ্জেও ব্যাঙের ছাতার মতো ইংরেজি মাধ্যম স্কুল গজিয়ে ওঠায় সরকারি স্কুল বা বাংলা মাধ্যম স্কুলগুলি এখন ধুঁকছে। শাসকবিরোধী বিভিন্ন শিক্ষক সংগঠনের অভিযোগ, সরকারি উদাসীনতা এবং নজরদারির অভাবেই স্কুলগুলির এই দুরবস্থা। তার মধ্যেই বহু স্কুলে পড়ুয়া আছে তো শিক্ষক নেই। আবার অনেক স্কুলে শিক্ষক আছে তো পড়ুয়া নেই। ছাত্র-শিক্ষক অনুপাতে এই বৈষম্য নিয়ে আদালতও উদ্বিগ্ন। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি বিশ্বজিৎ বসু সম্প্রতি একাধিক মামলায় এ ব্যাপারে উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেন, সবাই যদি গ্রাম ছেড়ে শহরে বদলি হতে চান, তাহলে গ্রামের স্কুলগুলি চলবে কী করে। এই কারণে তিনি শিক্ষকদের বদলি নীতিতে পরিবর্তন করারও পরামর্শ দিয়েছে রাজ্য সরকারকে। প্রাক্তন শিক্ষামন্ত্রী, বর্তমানে জেলবন্দি পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের আমলে বদলির জন্য উৎসশ্রী পোর্টাল চালু হয়। সেই পোর্টালেও বদলির ক্ষেত্রে বহু দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগ, মোটা টাকার বিনিময়ে গ্রাম থেকে বহু শিক্ষক শহরে বদলি হচ্ছেন। আদালতের নির্দেশে আপাতত উৎসশ্রী পোর্টালে বদলি বন্ধ রয়েছে। এই আবহে ৮,২০৭টি স্কুল বন্ধ হয়ে গেলে পড়ুয়াদের কী হবে, এইসব স্কুলের শিক্ষকদেরই বা কী হবে, তা নিয়ে শিক্ষা মহলে নানা প্রশ্ন উঠেছে।