ভাঙড়: তীব্র গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা। একে দিনে তাপপ্রবাহ, রাতে ভ্যাপসা গরমে প্রাণ ওষ্ঠাগত। তারই মধ্যে অনেক জায়গায় লোডশেডিংয়ের অভিযোগ। ফলে বিদ্যুৎ (Electricity) না থাকায় সমস্যা চরমে। তারই মধ্যে ব্যতিক্রমী ঘটনা দেখা গেল ভাঙড়ে (Bhangar)। যে ভাঙড় রাজনৈতিক সংঘর্ষ, বোমাবাজির জন্য অনেকাংশে পরিচিত। সেখানে বিদ্যুৎ দফতরের কর্মীদের মিষ্টি খাইয়ে শুভেচ্ছা জানালেন কৃষকরা। আনন্দে খেতের ফসল তুলে দিলেন তাঁদের হাতে। ২৪ ঘন্টা বিদ্যুৎ সরবরাহ জন্য বিদ্যুৎ কর্মীদের মিষ্টি, সব্জি উপহার দিলেন ভাঙড়ের চাষিরা ।
তীব্র গরমে পাওয়ার কাট নিয়ে নাজেহাল কলকাতা, নিউ টাউনের মতন শহরের বাসিন্দারাও। এজন্য সমস্ত রাগ গিয়ে পড়ছে বিদ্যুৎ কর্মীদের ওপর। কোথাও সোশ্যাল মিডিয়ায় গালাগালি আবার কোথাও কর্মীদের ঘেরাও করছেন আমজনতা। এরকম পরিস্থিতিতে ব্যতিক্রম ভাঙড়। ভাঙড়ের দুটি ব্লকের ৪টি সাব স্টেশন থেকে চব্বিশ ঘন্টা বিদ্যুৎ পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে ১৯টি গ্রাম পঞ্চায়েত এলাকায়। বানতলা চর্মনগরীতেও অবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ পরিষেবা ২৪ ঘন্টা। এজন্য খুশি হয়ে বিদ্যুৎ কর্মীদের ধন্যবাদ জানাতে তাঁদের হাতে মিষ্টি, খেতের সব্জি তুলে দিলেন কৃষকরা। যা পেয়ে আপ্লুত কর্মচারীরা।
আরও পড়ুন: কেন শেখ শাহজাহানের বিরুদ্ধে চার্জশিট জমা পড়েনি, জানতে চাইল আদালত
পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য বিদ্যুৎ বন্টন পর্ষদ সূত্রে খবর, কয়েকবছর আগেও ভাঙড়ে সাব স্টেশন বলতে শুধুমাত্র নলমুড়ি ৩৩/১১ কেভি সাবস্টেশন ছিল। পরে বানতলা চর্মনগরতীতে একটি সাব স্টেশন তৈরি হয়। বছর চারেক আগে চন্দনেশ্বর ও সাতুলিয়াতে (সিমোকো) আরও দুটি সাব স্টেশন তৈরি হয়। তখন থেকেই পাল্টে যায় ভাঙড়ের বিদ্যুৎ সরবরাহের চিত্র। আগে গ্রাম পিছু একটি ট্রান্সফর্মার দেওয়া হত। এখন প্রতিটি পাড়া পিছু একটি করে ট্রান্সফর্মার কাজ করছে। তাতে তার ছেঁড়া, গাছের ডাল পড়ে পাওয়ার কাট হওয়ার সম্ভাবনা কমছে। অতিরিক্ত গরমে পাড়ায় পাড়ায় একাধিক এসি, এমব্রয়ডারি মেশিন, ধানকল, গমকল, গ্রিল কারখানা চললেও লো ভোল্টেজের সমস্যা থাকছে না। এছাড়া গোটা শীতকাল জুড়ে মেন লাইন ও ৪৪০ ভোল্টের সার্ভিস লাইন, মেন সুইচ, ট্রান্সফর্মার রক্ষণাবেক্ষণের কাজ হয়েছে। তাই ভাঙড়ের লক্ষাধিক গ্রাহক নির্ঝঞ্ঝাট ভাবে বিদ্যুৎ পরিষেবা পাচ্ছেন এই গরমে। বাগজোলা খাল পাড়ের সাতুলিয়াতে কয়েকবছর আগে তৈরি হয় ৩৩/১১কেভি সিমোকো সাব ষ্টেশন। সেখান থেকে লাঙলবেকি, কাশীপুর, মাঝেরহাট, পিঠাপুকুর, সাতুলিয়া, জিরানগাছা এলাকায় বিদ্যুৎ পরিষেবা প্রদান করা হয়।
পোলেরহাটের গ্রামের গৃহবধূ পূজা বলেন, এখন আর স্টেবিলাইজার, ইনভার্টার লাগে না আমাদের বাড়িতে। সারা বছর খুব ভালো বিদ্যুৎ পরিষেবা পাই আমরা। সতুলিয়া,পিঠাপুকুর গ্রামের বাসিন্দা সালাউদ্দিন মোল্লা, নাইমূল ইসলামরা বলেন, লোডশেডিং কী আমরা তা ভুলে গিয়েছি। ছেলেগুলো এত ভালো পরিষেবা দেয় তা ভাষায় প্রকাশ করা যায় না।
আরও খবর দেখুন