কলকাতা: রাজ্যের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগের জোরালো দাবি উঠল। সোমবার একাধিক প্রাক্তন উপাচার্য, মধ্যশিক্ষা পর্ষদ, উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা সংসদ, জয়েন্ট এন্ট্রান্স বোর্ডের কর্তারা এক যৌথ সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, উচ্চশিক্ষার ক্ষেত্রে এক অদ্ভুত অচলাবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। তাঁরা রাজ্যপাল সি ভি আনন্দ বোসের ভূমিকারও তীব্র সমালোচনা করেন অন্তর্বর্তী উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে। তৃণমূল বিরোধী দলগুলির অভিযোগ, এই শিক্ষাবিদরা প্রায় সকলেই সরকারের অনুগামী।
এদিন কলকাতা প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন অনুরাধা মুখোপাধ্যায়, শিবাজি প্রতিম বসু, গৌতম পাল, আশুতোষ ঘোষ, দেবনারায়ণ বন্দ্যোপাধ্যায়, দেবকুমার মুখোপাধ্যায়, রঞ্জন চক্রবর্তী, ওমপ্রকাশ মিশ্র প্রমুখ। ওমপ্রকাশ উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অস্থায়ী উপাচার্য ছিলেন। গত শনিবার রাজ্যপাল ওমপ্রকাশ এবং আসানসোলের কাজি নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন উপাচার্য সাধন চক্রবর্তীর বিরুদ্ধে তদন্তের নির্দেশ দেন।
আরও পড়ুন: Panchayat Election | ফের ভাঙন শাসকদলে, অধীরের হাত ধরে কংগ্রেসে যোগ তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের
এদিন গৌতম পাল বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে নজিরবিহীন কাণ্ড ঘটছে। রাজ্যপাল কয়েকজনকে বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্ব সামলাতে বলেছেন। আমরা চাই, রাজ্যপাল সরকারের সঙ্গে আলোচনা করুন। মুখ্যমন্ত্রীকে আচার্য করার যে বিল পাশ হয়েছে বিধানসভায়, রাজ্যপাল তাতে সম্মতি দিন। শিবাজি প্রতিম বসু বলেন, উপাচার্যের পদ এখন খানিকটা মিউজিক্যাল চেয়ারের মতো হয়ে যাচ্ছে। যখন যাঁকে পাওয়া যাচ্ছে, তখন তাঁকে উপাচার্য করে বসিয়ে দেওয়া হচ্ছে। মলয়েন্দু বলেন, উচ্চশিক্ষা দফতর এবং আচার্যের মধ্যে একটা ফাঁক থেকে যাচ্ছে। রঞ্জন চক্রবর্তী বলেন, দীর্ঘ সময় যদি স্থায়ী উপাচার্য না থাকে, তবে বিশ্ববিদ্যালয় চালানো মুশকিল হয়ে যাবে। রাজ্যপাল, শিক্ষামন্ত্রী ও মুখ্যমন্ত্রীর কাছে আবেদন, অচলাবস্থা নিরসনের জন্য আপনারা উদ্যোগ নিন। ওমপ্রকাশ বলেন, আচার্যের ভূমিকা সম্মানজনক হওয়া উচিত। দুঃখের বিষয়, সেটা আমরা এখানে দেখতে পাচ্ছি না।
প্রসঙ্গত, এদিন এই সাংবাদিক বৈঠকে যাঁরা উপস্থিত ছিলেন, তাঁদের অনেককেই রাজ্যপাল সরিয়ে দিয়েছেন। সম্প্রতি বেশ কয়েকটি বিশ্ববিদ্যলয়ে তিনি অস্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ করেন। তা নিয়ে রাজ্য সরকারের সঙ্গে সংঘাত দেখা যায় রাজভবনের। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু বলেন, এই উপাচার্যদের রাজ্য সরকার মানবে না। তাঁদের বেতনও দেবে না রাজ্য সরকার। রাজ্যপালের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে একজন মামলা করেন। প্রথমে একক বেঞ্চ এবং পরে ডিভিশন বেঞ্চ রাজ্যপালের সিদ্ধান্তকে বৈধ বলে রায় দেয়। তাতে রাজ্য সরকার বড় ধাক্কা খায়।