কলকাতা: এবার তৃণমূল সরকারকে সরানোর জন্য তিন মাস সময় বেঁধে দিলেন বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বুধবার পটাশপুরে এক নির্বাচনী সভায় তিনি বলেন, আর মাত্র তিন মাস সময়। তারপরই তৃণমূল সরকারের বিদায়। কথা দিলাম। মিলিয়ে নেবেন। সভায় বিরোধী নেতার অভিযোগ, পঞ্চায়েত ভোটে হারের ভয় পাচ্ছে তৃণমূল। তাই বিরোধীদের নানাভাবে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। পুলিশ পাশে না থাকলে তৃণমূলের অস্তিত্বই থাকবে না।
তৃণমূলকে সরানোর জন্য শুভেন্দুর তিন মাস সময় বেঁধে দেওয়াকে কটাক্ষ করতে ছাড়েনি তৃণমূল। দলের রাজ্য মুখপাত্র এবং সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ বলেন, শুভেন্দু আবার একটা ভাঁওতা দিলেন। এর আগে তিনি বলেছিলেন, ১৩ ডিসেম্বরের পর বড় ঘটনা ঘটবে। কিছুই ঘটেনি। পরে তিনি জানুয়ারি মাসের কথা বললেন। জানুয়ারি মাসেও কিছুই হল না। আসলে বিরোধী দলনেতা প্রচারে থাকতে ভালোবাসেন। তাই নানা গিমিক দিয়ে প্রচারে ভেসে থাকেন। কুণাল বলেন, তাঁর কথায় কোনও বিশ্বাসযোগ্যতা নেই। থাকবেই বা কী করে। তাঁর নাম রয়েছে সিবিআইয়ের এফআইআরে। নারদ-কাণ্ডে তাঁকে হাত পেতে টাকা নিতে দেখা গিয়েছে। সারদা-কাণ্ডে তিনি সুদীপ্ত সেনের কাছ থেকে ৫০ লক্ষ টাকা নিয়েছেন। সুদীপ্ত সেন নিজে সিবিআইকে চিঠি লিখে অভিযোগ করেছেন। ধরা পড়ার ভয়ে শুভেন্দু বিজেপিতে ভিড়েছেন।
আরও পড়ুন: Panchayat Election | কারচুপি করার জন্য ডবল ব্যালট ছাপা হচ্ছে, বিস্ফোরক অভিযোগ অধীরের, পাশে সেলিমও
গত বছর ডিসেম্বর মাসের আগে শুভেন্দু দাবি করেছিলেন, ১৩ ডিসেম্বর রাজ্যে বড় কিছু একটা ঘটবে। কিন্তু সেদিন কিছুই হয়নি। পরে তাঁর দাবি ছিল, জানুয়ারি মাসে রাজ্যে পালা বদল হবে। কিছুই হয়নি। এর জন্য তিনি হাসির খোরাকও হন। শাসকদল তাঁকে বিঁধতে ছাড়েনি। এদিন ফের তিনি তৃণমূল সরকারের অপসারণের জন্য তিন মাস সময় বেঁধে দিয়েছেন। কোন অঙ্কে তিন মাস পর তৃণমূল সরকার সরে যাবে, তার কোনও ব্যাখ্যা মেলেনি বিরোধী নেতার ভাষণে।
মঙ্গলবার জলপাইগুড়ির ক্রান্তিতে তৃণমূলের নির্বাচনী সভায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দাবি করেন, কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের আয়ু আর মাত্র ছয় মাস। আগামী ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাসে লোকসভার ভোট হবে। সেই ভোটে বিজেপি হারবে।
কেন্দ্র এবং রাজ্যের দুইন শাসকদলের শীর্ষ নেতৃত্বের এই দাবি, পাল্টা দাবিকে কটাক্ষ করেছে বামেরা। সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তী বলেন, মুখ্যমন্ত্রী বলছেন, কেন্দ্রীয় সরকারের আয়ু আর মাত্র ছয় মাস। রাজ্যের বিরোধী দলনেতা বলছেন, তৃণমূল সরকারের আয়ু তিন মাস। হচ্ছেটা কী। বাংলায় দুই শাসকের বিরুদ্ধেই মানুষ জাগছে। পঞ্চায়েত ভোট অবাধ হলে মানুষের সেই জাগরণের প্রমাণ মিলবে।