ওয়েবডেস্ক: রাজ্যের কোষাগারে বড় ধাক্কা। এক মাসের মধ্যে জোগাড় করতে হবে অন্তত পক্ষে ১০ হাজার কোটি টাকা। সুপ্রিম কোর্টে (Supreme Court) খোদ রাজ্য সরকারের আইনজীবী অভিষেক মনু সিঙভি (Abhishek Manu Singhvi) শুক্রবার জানালেন একথা। তাঁর বক্তব্য, এতে রাজ্য সরকারের (WB Gov) কোমর ভেঙে যাবে। শুক্রবার শীর্ষ আদালত নির্দেশ দিয়েছে, রাজ্য সরকারি কর্মীদের বকেয়া ২৫ শতাংশ ডিয়ারনেস অ্যালাউয়েন্স বা ডিএ (DA) দিতে হবে। চার সপ্তাহের মধ্যে ওই টাকা দিয়ে দিতে হবে। দাবি দীর্ঘ দিনের। ফলে ১০ লক্ষ রাজ্য সরকারি কর্মীদের মধ্যে খুশির হাওয়া। অন্যদিকে মাথায় হাত রাজ্য সরকারের।
এই টাকার অঙ্ক রাজ্য সরকারের কোষাগারে কীরকম প্রভাব ফেলতে পারে তার একটি হিসেব পাঠকের সামনে তুলে ধরা হল। গত বাজেটে পশ্চিমবঙ্গ সরকার সারা রাজ্যে বাংলার বাড়ি প্রকল্পে ১৬ লক্ষ নতুন বাড়ি তৈরির ঘোষণা করেন। এই বিপুল কর্মযজ্ঞে রাজ্য সরকারের বাজেট বরাদ্দ ধরা হয় ৯ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। গ্রাম বাংলায় রাস্তা বৃদ্ধি, উন্নয়ন সংক্রান্ত বিষয়ের জন্য ১৫০০ কোটি টাকা বাজেট বরাদ্দ ধরা হয়। ২০২৪-২৫ সালে রবি শস্যের জন্য কৃষক বন্ধু প্রকল্পে ২ হাজার ৯৪৩ কোটি টাকা খরচ হয়েছে। ১ কোটি কৃষকের জন্য এই খরচ। আরেকটি হিসেবে বলা যায়, মুখ্যমন্ত্রী মতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২০১৯ সালে সেপ্টেম্বর মাসে ঘোষণা করেছিলেন, রাজ্য সরকার ষষ্ঠ বেতন কমিশনের সুপারিশ বাস্তবায়িত করবে। এর ফলে ১০ হাজার কোটি টাকা অতিরিক্ত খরচ হবে। এমনিতেই ঋণের দায়ে জর্জরিত রাজ্য সরকার। তৃণমূল সরকারের অভিযোগ, বামেদের ঋণের বোঝা বইতে হচ্ছে। কেন্দ্রীয় সরকার বিমাতৃসুলভ আচরণ করে। ১০০ দিনের কাজ সহ পশ্চিমবঙ্গের একাধিক প্রকল্পের বকেয়া টাকা আটকে রেখেছে। ফলে বোঝাই যাচ্ছে কী বিপুল চাপ পড়বে রাজ্যের কোষাগারে।
আরও পড়ুন: বিকেলে গণ কনভেনশনের ডাক চাকরিহারাদের
ডিএ আক্ষরিক অর্থে বাজার দরের প্রেক্ষিতে পরিস্থিতির সঙ্গে মানিয়ে চলার জন্য দেওয়া হয়। বেসিক বেতনের সঙ্গে এটা যুক্ত হয়। রাজ্য সরকারি কর্মী ও পেনশন প্রাপকরা এতদিন ১৪ শতাংশ হারে ডিএ বা মহার্ঘ ভাতা পেতেন। গত বাজেটে ৪ শতাংশ বাড়ানো হয়। ১ এপ্রিল থেকেই ৪ শতাংশ বেড়েছে। মোট ১৮ শতাংশ ডিএ এখন পান। তাঁদের দাবি ছিল, কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীদের হারে ডিএ দিতে হবে। কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মীরা এখন ৫৫ শতাংশ হারে ডিএ পান। রাজ্যের বক্তব্য ছিল, ডিএ সাংবিধানিক অধিকার নয়। রাজ্য পরিস্থিতি অনুযায়ী দেবে। আগামী বছর বিধানভা ভোট। এর ফলে তৃণমূল সরকারের উপর বিপুল চাপ বাড়বে বলে মনে করছে রাজনৈতিক মহল।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালের মে মাসে কলকাতা হাইকোর্ট কেন্দ্রীয় হারে রাজ্য সরকারি কর্মীদের ডিএ দিতে নির্দেশ দিয়েছিল। এরপর রাজ্য সরকার সুপ্রিম কোর্টে যায়। বারবার সুপ্রিম কোর্টে ডিএ মামলার শুনানি পিছিয়েছে। অন্তর্বর্তী কালীন নির্দেশে এদিন বিচারপতি সঞ্জয় করোল ও বিচারপতি মনোজ মিশ্রের ডিভিশন বেঞ্চ এই নির্দেশ দেন। অগাস্ট মাসে ডিএ মামলার পরবর্তী শুনানি।
দেখুন অন্য খবর: