কলকাতা: স্কুলশিক্ষায় আলাদা কমিশন গড়তে চলেছে রাজ্য সরকার। সোমবার রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ ব্যাপারে প্রাথমিক আলোচনা হয়েছে। শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু জানান, বিষয়টি ভাবনাচিন্তার স্তরে রয়েছে। এখনও চূড়ান্ত রূপরেখা তৈরি হয়নি। খুব শীঘ্রই এ সম্পর্কে বিস্তারিত সরকার জানিয়ে দেবে।
এর আগেই মুখ্যমন্ত্রীকে সমস্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের আচার্য পদে বসানোর ব্যাপারে রাজ্য মন্ত্রিসভার সিলমোহর পড়েছে। রাজ্যে শিক্ষা দফতর ছাড়াও আরও কয়েকটি দফতরের অধীনে কিছু বিশ্ববিদ্যালয় আছে। যেমন, প্রাণী সম্পদ বিশ্ববিদ্যালয়, কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, স্বাস্থ্য বিশ্ববিদ্যালয়। সেগুলির আচার্য পদেও বসানো হবে মুখ্যমন্ত্রীকে। সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে সে ব্যাপারেও চূড়ান্ত সিলমোহর দেওয়া হয়েছে। এছাড়া বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে ভিজিটর হবেন শিক্ষামন্ত্রী। ব্রাত্য বলেন, ভিজিটরের বিষয়টি রুলেই রয়েছে। তাতেও মন্ত্রিসভা সম্মতি দিয়েছে।
রাজ্য সরকারের এই সিদ্ধান্তের কড়া সমালোচনা করেছেন বিরোধী নেতারা। তাঁদের অভিযোগ, শিক্ষা ব্যবস্থাকে একেবারে কুক্ষিগত করার জ্ন্য রাজ্য সরকার উঠেপড়ে লেগেছে। তার জন্যই এই পদক্ষেপ। স্কুল, কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয়, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়, সর্বত্রই ছড়ি ঘোরাতে চায় তৃণমূল। তাই এই সিদ্ধান্ত।
আরও পড়ুন: AIIMS: কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর সুপারিশে চাকরি, বাঁকুড়ায় বিজেপি বিধায়কের দোকান ঘিরে বিক্ষোভ তৃণমূলের
শিক্ষার প্রশ্নে রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের সঙ্গে নবান্নের সংঘাত অনেকদিন ধরেই চলছে। বাবুল সুপ্রিয় যখন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ছিলেন, তখন তাঁকে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ুয়ারা ঘেরাও করেন। তখনকার কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে ঘেরাওমুক্ত করার জন্য রাজ্যপাল নবান্নের কর্তাদের ব্যবস্থা নিতে বলেন। তিনি পুলিস পাঠানোর কথাও বলেছিলেন। কিন্তু রাজ্য সরকার তাঁর কথা কানেই তোলেনি। শেষে রাজ্যপাল নিজেই যাদবপুরে চলে যান বাবুলকে উদ্ধার করতে। তখন থেকেই রাজ্যপাল রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে সুর চড়াতে শুরু করেন।
তার পরে যত দিন গড়িয়েছে, ততই রাজ্যপালের সঙ্গে নবান্নের সংঘাত বেড়েছে। রাজ্যপাল উপাচার্যদের বৈঠক ডাকলেও রাজ্যের আপত্তি থাকায় উপাচার্যরা কখনও রাজভবনের বৈঠকে অংশ নেননি। শুধু সরকারি নয়, বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যরাও রাজ্যপালের ডাকা বৈঠক বয়কট করেন। রাজ্যপালের আরও অভিযোগ ছিল, তাঁর সম্মতি ছাড়াই রাজ্য সরকার একতরফাভাবে বহু বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়োগ করেছে।
এসবের পরিপ্রেক্ষিতেই রাজ্য সরকার রাজ্যপালকে আচার্য পদ থেকে সরানোর জন্য উদ্যেগী হয়। কিছুদিন আগে শিক্ষামন্ত্রী বলেন, রাজ্যপালের বদলে মুখ্যমন্ত্রীকে আচার্য করার ব্যাপারে চিন্তাভাবনা চলছে। মুখ্যম্ন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে বিষয়টি চূড়ান্ত করা হবে। তারপরই মন্ত্রিসভার বৈঠকে সেই প্রশ্তাব আনা হয়। তাতে সিলমোহরও পড়ে।