কলকাতা: অন্য চাকরির ব্যাপারে হাইকোর্টের দেওয়া প্রস্তাব ফিরিয়ে দিলেন ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত এক তরুণী। বীরভূমের নলহাটির বাসিন্দা সোমা দাস নামে ওই তরুণী এসএলএসটির চাকরিপ্রার্থী। চাকরির দাবিতে ধর্মতলায় গান্ধীমূর্তির পাদদেশে এই চাকরিপ্রার্থীরা দীর্ঘদিন ধরে অবস্থান আন্দোলন করছেন। সেই আন্দোলনে সামিল অসুস্থ সোমা দাসও। সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত সেই খবর নজরে আসে হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের। ওই তরুণীকে ডেকে পাঠিয়ে বিচারপতি অন্য চাকরির প্রস্তাব দেন। সোমা তা ফিরিয়ে দিয়ে বলেন, আমি শিক্ষিকার চাকরিই করতে চাই।
স্কুল সার্ভিস কমিশনের স্টেট লেভেল সিলেকশন টেস্টে উত্তীর্ণ হাজার হাজার তরুণ-তরুণী চাকরি পাননি। বেশ কয়েকবছর ধরে তাঁরা আন্দোলন করে চলেছেন। ২০১৯ সালে কলকাতা প্রেস ক্লাবের সামনে এই চাকরিপ্রার্থীরা বেশ কয়েকমাস অনশন আন্দোলন চালান। আন্দোলন চলাকালীন আচমকাই একদিন মুখ্যমন্ত্রী অনশনস্থলে এসে হাজির হন। তিনি আন্দোলনকারীদের চাকরির ব্যাপারে আশ্বাস দিয়ে অবস্থান তুলে নিতে অনুরোধ করেন। তাঁর অনুরোধ মেনে অবস্থান তুলেও নেওয়া হয়। সোমা প্রেস ক্লাবের সামনে ওই আন্দোলনেও অংশ নিয়েছিলেন।
এবার ধর্মতলায় গান্ধীমূর্তির পাদদেশে আবার চাকরিপ্রার্থীরা অবস্থান আন্দোলন শুরু করেছেন। তাও অনেকদিন হয়ে গেল। অন্যরা বারণ করা সত্ত্বেও সোমা অসুস্থ অবস্থায় সেই অবস্থানে অংশ নেন। সেই ছবি এবং খবর সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত হয়। তা দেখে বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় দুই কোর্ট অফিসারকে অবস্থানস্থলে পাঠান সোমার সঙ্গে কথা বলতে। তাঁরা সোমার সঙ্গে কথা বলেন, বেশ কিছু নথি নিয়ে যান, সোমা জানান, আরও কিছু নথি বীরভূমের গ্রামের বাড়িতে আছে। সেগুলি তিনি পরে পাঠিয়ে দেবেন।
বুধবার বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় সোমাকে ডেকে পাঠান। তিনি তাঁকে অন্য কোনও চাকরির প্রস্তাব দেন। সেই প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন সোমা। পরে তিনি বলেন, বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় আমাদের মনে আশা জাগিয়েছেন। আমরা লড়াই চালিয়ে যাব। শিক্ষক পদের জন্যই আমরা পরীক্ষা দিয়ে উত্তীর্ণ হয়েছি। তাই শিক্ষকতাই করতে চাই। নিজে অন্য চাকরি নিয়ে এই আন্দোলন থেকে সরে যাব না।
