নানুর: ছাত্র জীবনে পঞ্চায়েত প্রধান। একবারের বিধায়ক। দুবার পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি। একবার জেলা পরিষদের কর্মাধ্যক্ষ, বহু ক্ষমতাবান পদে থাকা সত্ত্বেও জীবনটা অতি সাধারণ। এখনও বসবাস করেন মাটির কুঁড়ে ঘরে। এবারেও ত্রিস্তর পঞ্চায়েত নির্বাচনের লড়াইয়ের ময়দানে সিপিএম প্রার্থী শ্যামলী প্রধান।
বীরভূম জেলা পরিষদের নানুর ব্লকের ১৮ নম্বর আসনের সিপিএম প্রার্থী শ্যামলী। দলের আদর্শ, নীতির পাশাপাশি বর্তমান শাসকদলের অপশাসন, দুর্নীতিকে ইস্যু করে বাড়ি বাড়ি প্রচারে চালিয়ে যাচ্ছেন। সুষ্ঠভাবে যদি মানুষ ভোট দিতে পারেন, তাহলে জয়ের পক্ষে আশাবাদী তিনি।
এ রাজ্যে শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি মামলা থেকে শুরু করে গরু পাচার, কয়লা চুরি একাধিক মামলার ঘটনায় কেন্দ্রীয় এজেন্সি তদন্ত করছে। শাসকদলের নেতাদের বাড়ি থেকে কোটি কোটি টাকা উদ্ধার হয়েছে। গ্রেফতার হয়েছে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী এবং একাধিক বিধায়ক। এক এক করে কেন্দ্রীয় এজেন্সির ডাক পেয়েছে বিধায়ক, মন্ত্রীরাও। বীরভূমের তৃণমূল জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডল গরু পাচার কাণ্ডে এখন তিহার জেলে। এই অবস্থায় সততার অন্যতম নিদর্শন সিপিএমের রাজ্য কমিটির সদস্য শ্যামলী। তাঁর বাড়ি বীরভূমের নানুর ব্লকের কুমিরা নামে এক অঁচপাড়া গ্রামে। তাঁর দুই ভাই পরিযায়ী শ্রমিকের কাজে ভিন রাজ্যে। প্রাক্তন বিধায়ক, দু’বার নানুর পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি। বীরভূম জেলা পরিষদের স্বাস্থ্য কর্মাধ্যক্ষও তিনি।
আরও পড়ুন: Panchayat Election 2023 | মেদিনীপুরের মাতকাতপুরে ভোটে পাট্টাই হাতিয়ার তৃণমূলের
তিনি বহু বছর একগুচ্ছ সরকারি পদের ক্ষমতায় ছিলেন। তাঁর হাত ধরে বহু মানুষ সরকারি প্রকল্পের বাড়ি পেয়েছেন। অথচ তাঁর নিজের বাড়িটিই মাটির। ঘরের দেওয়াল মাটির। বাড়ির ছাদ বলতে টিন এবং খড়ের। তিনি যখন বিধায়ক পদে ছিলেন, তখন চাইলেই দামি গাড়িতে চড়তে পারতেন। বোলপুর অথবা কলকাতায় বিলাসবহুল ফ্ল্যাট ও নিতে পারতেন। কিন্তু না। তাঁর নীতি আদর্শ আর পাঁচটা দলের নেতাদের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা।
কলকাতা টিভির মুখোমুখি হয়ে শ্যামলী জানান, ১৯৮৯ সালে গ্রামের কুমিরা স্কুল থেকে মাধ্যমিক পাশ তিনি। তারপর নানুর স্কুলে উচ্চ মাধ্যমিক এবং খুজিটিপাড়া কলেজ থেকে স্নাতক পাস করেন। তিনি আরও জানান, ছাত্র জীবন থেকেই বামফ্রন্টের নানান সমাজ সংস্কারমূলক কাজ দেখে আসছেন। তাঁর মতে, ক্ষেতমজুর, শ্রমিক, দিনমজুরি মানুষদের কথা ভাবেন একমাত্র কমিউনিস্টরা। ছোটবেলা থেকেই এধরনের কাজ তাঁর মনকে ভাবিয়ে তুলেছিল। তাই তিনি উপলব্ধি করেছিলেন মানুষের হয়ে কাজ করতে গেলে বামফ্রন্ট একমাত্র সঠিকপথ। তারপর থেকেই রাজনীতিতে আসা। শ্যামলী এবারের নির্বাচনে বীরভূম জেলা পরিষদের সিপিআইএম প্রার্থী। মানুষ সুষ্ঠভাবে ভোট দিতে পারলে তিনিই ফের জয়ী হবেন বলে আশা তাঁর।