কলকাতা: মেঘ ভাঙা বৃষ্টি আর ধসে বিপর্যস্ত সিকিম (Sikkim Landslide)। সিকিমের বন্যা (Sikkim Flood) পরিস্থিতি ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। উত্তর সিকিমকে ‘বিপর্যয় কবলিত’ এলাকা ঘোষণা করা হয়েছে। উত্তর সিকিমের মঙ্গন জেলার লাচেন, চাটেনে ভয়াবহ পরিস্থিতি। হড়পা বান ও ভূমিধসজনিত কারণে উদ্ভুত ওই পরিস্থিতি অত্যন্ত বিপজ্জনক। এখনও নিখোঁজ ছয় সেনা। পর্যটকদের জন্য ইতিমধ্যেই বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে সিকিম প্রশাসন। এখনও আটকে বহু পর্যটক। প্রতিকূল আবহাওয়ার মধ্যেই স্থানীয়রাও উদ্ধারকাজে হাত লাগিয়েছে। সেনাবাহিনীর তরফে চলছে উদ্ধারকাজ।
মেঘ ভাঙা বৃষ্টি আর ধসের জেরে দক্ষিণ সিকিম থেকে উত্তর সিকিমের বিস্তীর্ণ অঞ্চল বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। মূলত মঙ্গল ও লাচেনের উপর প্রবল বৃষ্টির জেরেই এই বিপর্যয়ের সৃষ্টি। উত্তরবঙ্গে টানা ভারী বৃষ্টিপাতের জেরে একাধিক ক্ষয়ক্ষতি। ভারীবৃষ্টির জেরে বেড়েছে তিস্তার জলস্তরও। ইতিমধ্যেই তিস্তার জলোচ্ছ্বাসের কারণে মংগনে নদীর উপর একটি সেতু জলের তোরে ভেসে যাওয়ার কারণে উত্তর সিকিম কার্যত বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে।
ভারীবৃষ্টির জেরে তিস্তার জলস্তর এখন বিপদ সীমার উপর দিয়ে বইছে। তিস্তার জলোচ্ছ্বাসের কারণে নদীর ভাটির এলাকা বিশেষত পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশেও প্রভাব ফেলার আশঙ্কা রয়েছে। সিকিম ও বাংলাদেশ প্রশাসনকেও ইতিমধ্যে সতর্ক বার্তা পাঠানো হয়েছে সিকিম প্রশাসনের পক্ষ থেকে। উত্তর সিকিমের লাচুন, লাচেন সহ একাধিক জনপ্রিয় পর্যটন স্থল গুলিতে এর ফলে কয়েক হাজার পর্যটক আটকে পড়েছেন। উদ্ধারকাজে নেমেছে সিকিম প্রশাসন থেকে শুরু করে সেনাবাহিনী পর্যন্ত।
আরও পড়ুন: পরের কুম্ভ মহারাষ্ট্রে, চলবে টানা ২১ মাস! কবে শুরু পুণ্যস্নান?
উত্তর সিকিম থেকে এখনও পর্যন্ত প্রায় ১৫০ জনেরও বেশি পর্যটককে উদ্ধার করে দজমগুড় ফিডাং এলাকায় নিয়ে যাওয়া হয়েছে। ভূমিধসের কারণে ১৬০০ রও বেশি পর্যটক এখনও আটকে আছে। উদ্ধারকাজে হেলিকপ্টার ব্যবহার করছে সেনা। ৩০ জনকে এয়ারলিফ্ট করে উদ্ধার করা হয়েছে। এর মধ্যে কয়েক জন বিদেশি পর্যটকও রয়েছে। সিকিম প্রশাসনের পক্ষ থেকে নদীর তীরবর্তী ও ভূমিদস প্রবণ এলাকা থেকে সাধারণ মানুষকে দূরে সরে যাওয়ার পরামর্শ দিয়েছে। মঙ্গন জেলায় এখনো লাল সর্তকতা জারি করা রয়েছে। বন্যা ও ভূমিধসের কবলে পড়ে এখনো পর্যন্ত সিকিমে প্রায় ১২ হাজার মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বলে সিকিম প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে।
ভূমিধসের কারণে একাধিক রাস্তা নিশ্চিহ্ন হয়ে পড়েছে। তাই বিকল্প রাস্তা দিয়ে উদ্ধার কাজ চালানো হচ্ছে। মঙ্গন থেকে গ্যাংটক পর্যন্ত রাস্তা যা রাকডুং হয়ে তিনটেক পর্যন্ত গিয়েছে, তা আপাতত পরিষ্কার। ফোডং রোড দিয়ে মঙ্গন থেকে গ্যাংটক পর্যন্ত রাস্তাও পরিষ্কার। তবে বুধবারও এই রুটে কোনও বড় গাড়ি চলাচল করতে দেওয়া হচ্ছে না। বুধবারও বন্ধ রয়েছে মঙ্গন থেকে টুং নাগা হয়ে চুংথাং পর্যন্ত রাস্তা। মঙ্গন থেকে চুংথাং পর্যন্ত ফিডাং দিয়ে যে রাস্তা গিয়েছে, সেটির উপর ফি এবং ডেট ব্রিজে কেবলমাত্র ছোট গাড়ি যাতায়াত করতে দেওয়া হচ্ছে। সঙ্কলং দিয়ে মঙ্গন থেকে চুংথাং পর্যন্ত রাস্তা বন্ধ। চুবোম্বু থেকে চুংথাং হয়ে লাচেন পর্যন্ত রাস্তা বন্ধ। জিমা হয়ে লাচেন থেকে থাংগু পর্যন্ত বন্ধ। চুংথাং থেকে লাচুন অবশ্য পরিষ্কার। লাচুন থেকে ইয়ুমথাং পর্যন্ত রাস্তা বন্ধ। মঙ্গন থেকে ডিকচু পর্যন্ত রাস্তা পরিষ্কার।
দেখুন ভিডিও