নয়াদিল্লি: আইনজীবী সঞ্জয় বসুর (Advocate Sanjay Basu) মামলায় কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) অন্তর্বর্তীকালীন নির্দেশের উপর কোনও স্থগিতাদেশ জারি করল না দেশের শীর্ষ আদলত (Supreme Court)।
সোমবার এই মামলার শুনানির শুরুতেই ইডির আবেদনের প্রেক্ষিতে কলকাতা হাইকোর্টের অন্তর্বর্তীকালীন স্থগিতাদেশের সমালোচনা করেন বিচারপতি। তখনই সঞ্জয় বসুর আইনজীবী কপিল সিব্বল দাবি করেন, উপযুক্ত নথির উপর ভিত্তি করে হাইকোর্ট ওই নির্দেশিকা জারি করেছে। তাই সেই নথি পেশের জন্য উপযুক্ত সময়-সুযোগ দিক আদালত। মামলার পরবর্তী শুনানি ১১ এপ্রিল। কেন ইডির আবেদন গ্রহনযোগ্য নয়, সঞ্জয় বসুর আইনজীবীকে উপযুক্ত নথি ও সওয়ালের মাধ্যমে আদালতকে সন্তুষ্ট করতে হবে পরের শুনানিতে।
উল্লেখ্য, আগেই আইনজীবী সঞ্জয় বসুকে (Advocate Sanjay Basu) পাঠানো ইডি তলবের উপর অন্তর্বর্তী স্থগিতাদেশ দেয় কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। আদালতের পরবর্তী নির্দেশ ছাড়া ইডির তলবে হাজিরা দিতে হবে না সঞ্জয় বসুকে। হাইকোর্টের আরও নির্দেশ দেয়, আদালতের অনুমতি ছাড়া ওই আইনজীবীর অফিস এবং বাড়িতে কোনও তল্লাশি চালাতে পারবে না ইডি।
আরও পড়ুন: National Education Policy | জাতীয় শিক্ষানীতি খতিয়ে দেখতে ছয় সদস্যের কমিটি গঠন রাজ্যের
পর্যবেক্ষণে আদালত আরও জানায়, প্রাথমিকভাবে তারা মনে করছে, সঞ্জয় বসুর বিরুদ্ধে ইডির এই সক্রিয়তা ভুয়ো অর্থলগ্নি সংস্থার তদন্তের সঙ্গে জড়িত। এই মামলা শোনার এক্তিয়ার এই এজলাসের রয়েছে। এর আগে ইডির আইনজীবী ধীরাজ ত্রিবেদী দাবি করেন, এই এজলাসের মামলাটি শোনার কোনও এক্তিয়ার নেই। আদালত বলেছে, এই মামলার সমস্ত নথি আগামী সোমবারের মধ্যে ইডিকে পেশ করতে হবে। তারপর এই এজলাস মামলা শুনবে কি না সে বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। ইডি অবশ্য হাইকোর্টের এই নির্দেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টে যায়।
ইডির আইনজীবী আদালতে জানান, এটা কোনও ভুয়ো অর্থলগ্নি সংস্থার মামলা নয়। এটা অর্থ তছরুপ প্রতিরোধ আইনের (Prevention of Money Laundering Act) অধীনস্ত মামলা। মামলাকারীর কাছে বিকল্প আইনি পন্থা রয়েছে। তিনি এফআইআর খারিজের আবেদন জানাতে পারেন। চাইলে আগাম জামিনের আবেদনও জানাতে পারেন। আদালতে ইডির আরও আইনজীবীর প্রস্ন, নিয়ম অনুযায়ী এই আবেদন একক বেঞ্চের কাছে জানাতে হয়। ডিভিশন বেঞ্চে কেন এসেছেন?
ইডির আইনজাবী আদালতে আরও বলেন, ২০১৪ সালে পিনকন (PINCON) সংস্থা সঞ্জয় বসুকে তাদের আইনি বিষয় দেখার জন্য অগ্রিম হিসাবে ৮৩ লাখ টাকা দিয়েছিল। ২০২১ সালে তিনি ৭০ লাখ টাকা ফেরত দিয়েছিলেন। এই যুক্তিতে যে, তিনি ওই অঙ্কের টাকার কোনও আইনি পরিষেবা দেননি। তিনি খাতায় কলমে পিনকন (PINCON)-এর আইনজীবী ছিলেন না। সংস্থার ডিরেক্টরদের সাজা হওয়ার পর টাকার গতিপথ খুঁজতে গিয়ে সঞ্জয় বসুকে ২০২১ সালে আমরা প্রথম সমন পাঠিয়েছিলাম।
এই পরিপ্রক্ষিতে ইডিকে উদ্দেশ্য করে বিচারপতির মন্তব্য, গান্ধীজিকে যখন ব্রিটিশরা গ্রেফতার করতে এসেছিল, তখনও তিনি একটাই প্রশ্ন করেছিলেন, কোন অভিযোগের ভিত্তিতে তারা গ্রেফতার করতে এসেছে? এখানে আপনাদের অভিযোগ কী? এটা আমাদের বিচার্য বিষয় কি না সেটা স্থির করতে হলে আমাদের নথি দেখতে হবে।সঞ্জয় বসুর আইনজীবী জয়ন্ত মিত্রর বক্তব্য, ইডি নিজেই জানিয়েছে আমার মক্কেল ভুয়ো অর্থলগ্নি সংস্থার সুবিধাভোগী। তাহলে এই মামলা কেন এই এজলাসের বিচার্য বিষয় হবে না। আমার মক্কেলের যদি এখন হার্ট অ্যাটাক হয় এবং তাঁকে যদি কোনও বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়, তাহলে তাঁকে অগ্রিম ৩ লক্ষ টাকা জমা করতে হবে। তিনি যদি সেই টাকা অসাধু উপায়ে নিয়ে আসেন, তার জন্য কি হাসপাতাল দায়ী থাকবে?