কলকাতা: অবশেষে নিজের ভবিষ্যতের স্বপ্ন ভুলে পড়াশোনা শেষ করে এখন ফুচকা স্টল দিয়েছেন বিএড পাস শ্রেয়সী ঘোষ। স্বপ্ন ছিল বড় হয়ে শিক্ষিকা হওয়ার। বছরের পর বছর বন্ধ রয়েছে শিক্ষক নিয়োগ চাকরির পরীক্ষা। অবশেষে নিজের ভবিষ্যতের স্বপ্ন ভুলে পড়াশোনা শেষ করে এখন ফুচকা স্টল দিয়েছেন বিএড পাস শ্রেয়সী ঘোষ (B.ED Phuchka Didi) ।
ছোট থেকেই দারিদ্রতার মধ্যে দিয়ে বড় হয়েছেন বিএড ফুচকা দিদি। রানাঘাটের শালবাগান এলাকায় মামার বাড়ি। ছোট থেকে মামার বাড়িতেই থাকতেন। অভাব অনটনের মধ্যে দিয়ে পড়াশোনা চালিয়েছেন। এখনও পড়াশোনার সঙ্গে যুক্ত বর্তমানে ডি.এল.এড করছেন। মামা তাঁর ক্লাস এইট পর্যন্ত পড়াশোনার দায়িত্ব নেয়। এরপর নিজের পড়াশোনা করে এগিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে নিজেকেই দায়িত্ব নিতে হয়েছিল।
আরও পড়ুন: গুলিতে মৃত্যু সিআইএসএফ কর্মীর
শ্রেয়সী ছোট থেকে নৃত্য শিল্পের সঙ্গে যুক্ত থাকায় তিনি ছোটদের নাচ শিখিয়ে অর্থ উপার্জন করতেন। কলেজে সংস্কৃত অনার্স নিয়ে গ্রাজুয়েশন কমপ্লিট করার পর তিনি বিএড পাস করেন ২০১৮-২০২০ বর্ষে। রাজ্যে যখন শিক্ষক নিয়োগের কোনও চাকরি নেই তখন তিনি নিরুপায়। নাচ শিখিয়ে সামান্য অর্থ দিয়ে সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছিল। তারপর তিনি ঠিক করেন তার কপালে যখন চাকরি নেই, যখন কোন ডিগ্রির মূল্য নেই, তখন তিনি অভিনব এক ফুচকা দোকান স্টল দেবেন। ভাবনা অনুযায়ী কাজও করলেন। আর দোকানের নামকরণ করলেন বিএড ফুচকা দিদি।
ফুচকার দোকান দেওয়াতে তাকে অনেকে ব্যঙ্গ করেছেন। অবশেষে, বিএড করে ফুচকা বিক্রি করছে শ্রেয়সী! ফুচকার দোকানের পাশাপাশি, তিনি একটি সামাজিক সমাজসেবার কাজেও যুক্ত আছেন। সাধারণ মানুষজন থেকে শুরু করে নিত্যযাত্রীরা যখন তার ফুচকার দোকানে ফুচকা খেতে এসে অনেক দুঃখপ্রকাশ করে। যে কিনা শিক্ষিকা হওয়ার কথা সে আজ রাস্তার ধারে ফুচকার দোকান দিয়েছে। তখনই আক্ষেপের সুরে শ্রেয়সী বুঝিয়ে দেয় তার ভাগ্য নির্ধারণের কথা। অন্যদিকে, শ্রেয়সীর স্টলের ফুচকা জনপ্রিয় হলেও ফুচকা প্রেমীদের কাছে এখন যথেষ্টই স্নেহময় শ্রেয়সী। মানুষের মনের অন্তরে নিজের জন্য জায়গা করে নিয়েছেন তিনি।
দেখুন আরও খবর: