নদিয়া: বগুলা গ্রামীণ হাসপাতালের (Bogula Rural Hospital) নতুন নামকরণকে কেন্দ্র করে ধুন্ধুমার। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম বর্ষের মৃত ছাত্রের নামে ওই হাসপাতাল হবে বলে সোমবার ঘোষণা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মঙ্গলবার এ ব্যাপারে সরকারি বিজ্ঞপ্তিও জারি হয়। বুধবার ছিল তাঁর উদ্বোধন। কিন্তু স্থানীয় মানুষের বিক্ষোভে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান কার্যত ভেস্তে যায়। ক্ষুব্ধ জনতা উদ্বোধনের জন্য তৈরি করা তোরণ ভেঙে দেয়। তাদের দাবি, হাসপাতালের নাম পরিবর্তন করা যাবে না। নারী পুরুষ নির্বিশেষে প্রচুর মানুষ হাসপাতালের সামনে দীর্ঘ বিক্ষোভ দেখায়। তাদের বক্তব্য, কে কোথায় মারা যাবে, তার জন্য তার নামে হাসপাতাল হবে, এটা কেমন যুক্তি। বগুলা নামের সঙ্গে অনেক ঐতিহ্য জড়িত। সস্তার রাজনীতি করতে যাদবপুরে মৃত ছাত্রের নামে বগুলা হাসপাতালের নামকরণের সিদ্ধান্ত মুখ্যমন্ত্রীর। এই সিদ্ধান্ত বগুলার মানুষ মেনে নেবে না।
স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনও একটি হস্টেল বা ঘরের নামে ওই ছাত্রের নামে রাখা হোক। তাঁরা এদিন হাসপাতালের গেটের সামনে তুমুল বিক্ষোভ দেখান। জেলাশাসক, বিডিও, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে স্লোগানও দেন। ওই ছাত্রের নাম মুছে ফেলা হয় হাসপাতালের ফলক থেকে। এলাকাবাসীর দাবি, নিজের ব্যর্থতা ঢাকতে বগুলার ঐতিহ্যকে ধ্বংস করতে চাইছেন মুখ্যমন্ত্রী। আসল দোষীকে ধরে শাস্তি দেওয়া হোক।
আরও পড়ুন: কলকাতা হাইকোর্টে জামিনের আবেদন করলেন পার্থ
তাঁদের বক্তব্য, যদি বদল করতেই হয় তাহলে মৃত ছাত্রের স্মরণে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম বদলে ফেলা হোক। হাসপাতালের নাম কিছুতেই বদলানো যাবে না। পরিস্থিতি এতটাই জটিল হয়ে ওঠে যে পুলিশ কর্তারা বিশাল বাহিনী নিয়ে ঘটনাস্থলে হাজির হন। তাঁরা বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কথা বলেন। বিক্ষোভকারীদের একটাই দাবি, নাম বদল কোনও মতেই মানা হবে না।
ব্লক মেডিক্যাল অফিসার বীরেন্দ্রনাথ মজুমদার বলেন, এলাকাবাসী নাম বদল চাইছেন না। তারা চান এই হাসপাতালকে আরও উন্নত করা হোক। ১০০ বেডের হাসপাতাল করা হোক। পাশাপাশি পরিষেবার মানও উন্নত করা হোক।
সোমবার নিহত ছাত্রের বাবা-মায়ের সঙ্গে নবান্নে দেখা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। সন্তানহারা বাবা-মায়ের সঙ্গে কিছুক্ষণ কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী। নিহত পড়ুয়ার স্মৃতিতে বগুলা গ্রামীণ হাসপাতালের (Bogula Hospital) নামকরণ করা হবে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি নিহত পড়ুয়ার মাকে চাকরির আশ্বাসও দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। ছোট ভাইয়ের পড়াশোনার খরচ দেবে রাজ্য সরকার। সেফ মতো মঙ্গলবারই সব প্রস্তুতি সেরে ফেলা হয়। এগিন উদ্বোধনের সময় নাম বদলের প্রতিবাদে বিক্ষোভ দেখায় গ্রামবাসীরা।