কলকাতা: এই প্রথম কোনও প্রিসাইডিং অফিসার আদালতে হলফনামা দিয়ে পঞ্চায়েত ভোটে রিগিং নিয়ে অভিযোগ পেশ করলেন। মুর্শিদাবাদের বেলডাঙা এলাকার কাশীপুর পঞ্চায়েতের ভোটে (Kashipur Panchayat polls) একগুচ্ছ অনিয়মের অভিযোগ জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট প্রিসাইডিং অফিসার। কলকাতা হাইকোর্ট ওই হলফনামার ভিত্তিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে। কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) (Calcutta High Court) বিচারপতি অমৃতা সিনহা এই নির্দেশ দেন। ১২ সেপ্টেম্বর মামলার পরবর্তী শুনানি।
বিচারপ্রতি সিনহা আগেই জানিয়েছিলেন, এই মামলার ফলাফলের উপর কাশীপুরের ওই পঞ্চায়েতের ভাগ্য নির্ভর করবে। স্থানীয় সূত্রের খবর, ওই প্রিসাইডিং অফিসার একটি কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ের শিক্ষক। এই প্রথম তিনি ভোটের দায়িত্ব পালনের সুযোগ পেয়েছিলেন পঞ্চায়েত নির্বাচনে। হলফনামায় তিনি জানান, ৮ জুলাই ভোটের দিন বেলা সাড়ে ১২টার পর থেকে ওই বুথের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নেয় ২০-৩০ জনের একটি দল। তারা ইচ্ছেমতো ছাপ্পাভোট দিয়েছে সেদিন। সাধারণ ভোটারদের কাউকে ভোট দিতে দেওয়া হয়নি। পরে তাঁকে দিয়ে (ওই প্রিসাইডিং অফিসারকে) লিখিয়ে নেওয়া হয়, ভোট হয়েছে অবাধ ও শান্তিপূর্ণ। হলফনামায় ওই অফিসারের আরও অভিযোগ, বুথের মধ্যে ওই দলটি তাঁর মোবাইল ফোন কেড়ে নিয়েছিল। তার ফলে তিনি কোথাও অভিযোগ করতে পারেননি সেই সময়। শুধু তাই নয় সেদিন পাহারায় থাকা রাজ্য পুলিশকর্মীরা ছিলেন নীরব দর্শকের ভূমিকায়। আইনজীবী শামিম আহমেদের অভিযোগ, স্থানীয় মানুষ হামলা ও রিগিংয়ের অভিযোগ করলেও কাশীপুরের ওই বুথে পুনর্নির্বাচন হয়নি।
আরও পড়ুন: ‘অবৈধ’ বিবাহের সন্তানও বাবা-মায়ের সম্পত্তির ভাগ পাবে, জানাল সুপ্রিম কোর্ট
এবার পঞ্চায়েত ভোটে অনিয়মের বিস্তর অভিযোগ উঠেছে বিভিন্ন জেলায়। ব্যালট বাক্স পুকুরে ফেলে দেওয়া থেকে শুরু করে ব্যালট ছিনন্তাই, ছিঁড়ে ফেলা, পোলিং অফিসারদের মারধর করা, বিরোধী প্রার্থী এবং এজেন্টদের হুমকি দিয়ে বের করে দেওয়ার মতো প্রচুর ঘটনা ঘটেছে। এরই সঙ্গে এবার নতুনত্ব ছিল বিডিও, এসডিওদের সরাসরি শাসকদলের হয়ে কাজ করার অভিযোগ সংক্রান্ত বিষয়। তা নিয়েও একাধিক মামলা হয়েছে। কোনও কোনও মামলায় আদালত সংশ্লিষ্ট বিডিও, এসডিওদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলেছে রাজ্য সরকার এবং রাজ্য নির্বাচন কমিশনকে। তবে কোনও প্রিসাইডিং অফিসারের হলফনামা দিয়ে বুথের সন্ত্রাসের অভিযোগ জানানো নজিরবিহীন বলে মনে করছে রাজনীতির কারবারিরা।