কলকাতা: রাজ্য বিজেপির যুব মোর্চার সভাপতি সৌমিত্র খাঁ-কে নিয়ে অসন্তোষ এবার বিদ্রোহের চেহারা নিল৷ সাংসদের নেতৃত্ব দেওয়ার ক্ষমতা নিয়ে প্রশ্ন তুলে দলকে খোলা চিঠি দিলেন কার্যকর্তারা৷ চিঠির ছত্রে ছত্রে বিষ্ণুপুরের সাংসদের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছেন তাঁরা৷ বলা হয়েছে, সৌমিত্রর নেতৃত্বে সংগঠনে ভয়ঙ্কর পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে৷ একনায়কতন্ত্র চালাচ্ছেন তিনি৷ এতে দলের যা ক্ষতি হয়েছে তা পূরণ করতেই অনেক সময় চলে যাবে৷
আরও পড়ুন: দলীয় সাংসদের বাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া ব্যক্তিকে দলে স্বাগত জানাল বিজেপি
মাথার ঘাম পায়ে ফেলে তিল তিল করে দলটাকে দাঁড় করিয়েছিলেন বাজপেয়ি-আদবানিরা৷ কিন্তু তাঁদের দেখানো উল্টো পথে হেঁটে সৌমিত্র নিজের মর্জিমাফিক যুব মোর্চার সংগঠনকে চালাচ্ছেন বলে অভিযোগ৷ যুব মোর্চার সভাপতি হিসাবে সৌমিত্রর ভুলভ্রান্তি বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে চিঠিতে৷ তাতে বলা হয়েছে, ২০২০ সালের ১৭ অগাস্ট বাঁকুড়ায় সৌমিত্র খাঁ ৯০ হাজার ত্রিপল বিলির কথা ঘোষণা করেছিলেন৷ কিন্তু সেটা ঘোষণাই থেকে গিয়েছে৷ বাস্তবায়িত হয়নি৷
সৌমিত্রর জমানায় গুরুত্ব হারিয়েছেন দলের পুরনো কর্মীরা৷ ওই মাসেই যুব মোর্চার রাজ্য কমিটিতে এমন কিছু ব্যক্তিদের তিনি নিয়ে এসেছিলেন যাঁরা সাংসদের সল্টলেকের বাড়িতে অথবা তাঁর সঙ্গে জেলায় জেলায় ঘুরে বেড়াতেন বলে অভিযোগ৷ অথচ যাঁরা নিঃস্বার্থভাবে বছরের পর বছর দলের জন্য কাজ করেছেন তাঁদের তিনি উপেক্ষা করেছেন৷
আরও পড়ুন: নন্দীগ্রামে বিজেপি ছেড়ে তৃণমূলে শতাধিক নেতা-কর্মী
সৌমিত্রর তৈরি ওই তালিকা নিয়ে দলের অন্দরে ক্ষোভ তৈরি হওয়ায় বাধ্য হয়ে দিলীপ ঘোষকে সেই কমিটি বাতিল করে দিতে হয়৷ এমন পদক্ষেপ বঙ্গ বিজেপির ইতিহাসে প্রথম৷ তার পরেও সৌমিত্র খাঁ পদ থেকে ইস্তফা দেননি অথবা নিজের কাজের ধরনও বদলানোর প্রয়োজন মনে করেননি৷
সৌমিত্রর বিরুদ্ধে মহিলাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহারের অভিযোগ করা হয়েছে চিঠিতে৷ এজন্য দলের প্রধান মুখপাত্র সমীক ভট্টাচার্যকে এক মহিলা এবং তাঁর পরিবারের কাছেও ক্ষমা চাইতে হয়েছে৷ তবে যুব মোর্চার সভাপতি হিসাবে সৌমিত্র সবচেয়ে জঘন্য কাজ করেছেন এবছর ২২ জুন৷ ওই দিন তিনি দলের লাইনের বিরুদ্ধে গিয়ে রাঢ় বঙ্গ নামে আলাদা রাজ্য গঠনের দাবি জানান৷ দলের প্রবীণ নেতারা এই প্রস্তাব আগেই নাকচ করে দিয়েছিলেন৷ তাসত্ত্বেও ফেসবুক লাইভে এসে ফের এই দাবি করেন তিনি৷
আরও পড়ুন: বধির কেন্দ্র, রাজ্যের ভ্যাকসিন আকাল নিয়ে ক্ষুব্ধ মমতার চিঠি প্রধানমন্ত্রীকে
সৌমিত্রকে নিয়ে অভিযোগের তালিকা আরও দীর্ঘ৷ তাঁর বিরুদ্ধে রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ এবং বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে অবমাননাকর মন্তব্য এবং মিথ্য অভিযোগ আনার অভিযোগ করা হয়েছে চিঠিতে৷ বলা হয়েছে, যুব মোর্চার সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা ঘোষণার দিন তিনি ফেসবুক লাইভে দিলীপ ঘোষ এবং শুভেন্দু অধিকারীর নামে ভিত্তিহীন অভিযোগ এনেছিলেন৷ সম্প্রতি বিষ্ণুপুরের সাংসদ যুব মোর্চার অফিসিয়াল হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপ থেকে তিন সদস্যকে বের করে দেন৷ কারণ, তাঁরা সৌমিত্রর কাজের বিরোধিতা করেছিলেন৷