কলকাতা: ভোটের ফল প্রকাশের পর থেকে রবীন্দ্রনাথের মাটিতে হিংসার শিকার হয়েছেন বহু মানুষ। শ্লীলতাহানি, খুন, ধর্ষণের মতো ঘটনা ঘটেছে। প্রচুর মানুষকে ভিটেছাড়া হতে হয়েছে। ভোট পরবর্তী হিংসা নিয়ে হাইকোর্টে জমা পড়া রিপোর্টে এই দাবি করল জাতীয় মানবাধিকার কমিশন।
হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে গঠিত বৃহত্তর বেঞ্চে ৫০ পাতার রিপোর্ট জমা দিয়েছে কমিশন। রিপোর্টে ভোট পরবর্তী হিংসা মোকাবিলায় রাজ্য সরকারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়েছে। কলকাতা হাইকোর্টে জমা পড়া জনস্বার্থ মামলার ভিত্তিতে হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল, ভোট-পরবর্তী হিংসা সংক্রান্ত অভিযোগের তদন্ত করবে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন।
২১ জুন সাত সদস্যের কমিটি গঠন করে কমিশন। কমিশনের সদস্য রাজীব জৈনের নেতৃত্বে ওই দলটি রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরে হিংসায় ক্ষতিগ্রস্তদের সঙ্গে কথা বলে। তারপর চলটি সপ্তাহে হাইকোর্টে রিপোর্ট জমা দেয় কমিশন। ওই রিপোর্টে সিবিআইকে দিয়ে ভোট পরবর্তী হিংসার তদন্ত করানোর সুপারিশ করেছে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন।
‘চিত্ত যেথা ভয় শূন্য উচ্চ যেথা শির…’, রবীন্দ্রনাথের কবিতার এই লাইন উল্লেখ রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে কমিশন। কমিশনের অভিযোগ, ২ মে ভোটের ফল ঘোষণার পর থেকে এ রাজ্যে কয়েক হাজার মানুষ ঘরছাড়াে রবীন্দ্রনাথের মাটিতে শ্লীলতাহানি, খুন, ধর্ষণের মতো ঘটনা ঘটেছে। বিধানসভার ফল ঘোষণার পর বিভিন্ন ঘটনা ঘটেছে, যা এই মাটির সম্মান নষ্ট করেছে।
আদালতের পর্যবেক্ষণে তদন্ত ছাড়াও ফাস্ট ট্র্যাক কোর্ট গঠন করে দ্রুত মামলার বিচারপ্রক্রিয়া শেষ করার দাবি জানিয়েছে। রাজ্যের ভূমিকার নিন্দা করে কমিশন অভিযোগ করেছে, অপরাধীদের গ্রেফতার না করা একটা ভয়ঙ্কর প্রবণতা। যা একেবারেই কাম্য নয়। ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দেওয়ারও সুপারিশ করা হয়েছে।
কমিশনের রিপোর্টের পরই গর্জে ওঠেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ তিনি বলেন, ‘নির্বাচনের আগে হিংসার ঘটনার বিরোধিতা করি৷ ছোটো ছোটো কয়েকটা ঘটনা ঘটেছে৷ ভোটের সময় যখন সন্ত্রাস হয়েছে তখন দায়িত্বে কমিশন৷ আইনশৃঙ্খলা কমিশনের দায়িত্বে ছিল৷ কমিশনের নামে মিথ্যা রিপোর্ট দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করার চেষ্টা চলছে৷’
তাঁর প্রশ্ন, ‘মানবাধিকার কমিশন আদালতে রিপোর্ট জমা দিয়েছে৷ তাহলে সংবাদমাধ্যমের কাছে লিক হল কী করে?’ না থেমে মমতা বলেন, ‘কারা করেছে জানি৷ কিন্তু বলব না৷ যা বলার আদালতে বলব৷’