কলকাতা: পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে মামলার গেরো আর কাটছেই না। একের পর এক মামলা হয়েই চলেছে। একক বেঞ্চ থেকে মামলা যাচ্ছে ডিভিশন বেঞ্চে। ভোটের বাকি আর মাত্র নয়দিন। একাধিক মামলায় জেরবার হতে হচ্ছে রাজ্য সরকারকে। এবার জাতীয় মানবাধিকার কমিশন একক বেঞ্চের একটি রায়কে চ্যালেঞ্জ করে কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি টি এস শিভগননমের ডিভিশন বেঞ্চে গেল। সেই মামলা গ্রহণ করেছে ডিভিশন বেঞ্চ।
এর আগে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন পঞ্চায়েত ভোটে তাদের তরফে পর্যবেক্ষক নিয়োগ করতে চেয়েছিল। তাদের বক্তব্য ছিল, পঞ্চায়েত ভোটের মনোনয়ন পর্ব থেকেই রাজ্যে হিংসার ঘটনা ঘটছে। তাই তারা জেলায় জেলায় পর্যবেক্ষক পাঠাতে চায়। রাজ্য নির্বাচন কমিশন তা নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা করে। মামলার আবেদনে বলা হয়, রাজ্যের পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন এভাবে নাক গলাতে পারে না। কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি সব্যসাচী ভট্টাচার্য জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের মামলা খারিজ করে দিয়ে জানায়, তারা পর্যবেক্ষক নিয়োগ করতে পারবে না। বিচারপতি ভট্টাচার্যের সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ করেই কমিশন ডিভিশন বেঞ্চে গিয়েছে।
আরও পড়ুন: Panchayat Election | তৃণমূলকে না জেতালে কোনও উন্নয়ন হবে না, হঁশিয়ারি তৃণমূল নেতার
এর আগে ২০২১ সালে বিধানসভা ভোটের পর রাজ্যে ব্যাপক হিংসা ছড়ায়। ফল প্রকাশের দিনই কলকাতার বেলেঘাটায় বিজেপি কর্মী অভিজিত সরকারকে শাসকদলের লোকজন বাড়ি থেকে টেনে এনে খুন করে বলে অভিযোগ। সেই খুনের সিবিআই তদন্ত এখনও চলছে। সেই সময় রাজ্যে আরও বেশ কয়েকটি হিংসার ঘটনা ঘটে। বিজেপি তা নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হয়। হাইকোর্ট হয়ে সেই জল গড়ায় সুপ্রিম কোর্ট পর্যন্ত। আদালতের নির্দেশে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন হিংসার তদন্তে প্রতিনিধিদল পাঠায় রাজ্যে। তা নিয়ে তীব্র প্রতিবাদ করে রাজ্য সরকার। মুখ খোলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, এখানে কিছু হলেই কেন্দ্র প্রতিনিধিদল পাঠায়। জাতীয় মানবাধিকার কমিশন ছুটে আসে। বিজেপি শাসিত রাজ্যে তো তাদের যেতে দেখি না। মুখ্যমন্ত্রী আরও বলেছিলেন, যেই সময় হিংসার কথা বলা হচ্ছিল, তখন আইনশৃঙ্খলার দায়িত্ব ছিল জাতীয় নির্বাচন কমিশনের হাতে। নতুন সরকার শপথ নেওয়ার পর কড়া হাতে পরিস্থিতি মোকাবিলা করা হয়।
এবার পঞ্চায়েত ভোটেও জাতীয় মানবাধিকার কমিশন পর্যবেক্ষক পাঠাতে চেয়েছে। তা নিয়ে আপত্তি রয়েছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন এবং রাজ্য সরকারের। একক বেঞ্চের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করেই জাতীয় ওই কমিশন ডিভিশন বেঞ্চে গিয়েছে।