কলকাতা: রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ের অপসারণ চেয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চার বার চিঠি দেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শেষ চিঠিটি মমতা দিয়েছিলেন ২৫ জানুয়ারি। গত মঙ্গলবার বিধানসভায় বিআর আম্বেদকরের মূর্তিতে মাল্যদান করার পর রাজ্যের বিরুদ্ধে সরব হন রাজ্যপাল। ভোট পরবর্তী সন্ত্রাস ও রাজ্যের আইন কানুন নিয়ে প্রশ্ন তোলেন। স্পিকারের ভূমিকারও সমালোচনা করেন। গোটা ঘটনার কথা মোদিকে পাঠানো চিঠিতে উল্লেখ করেছিলেন মমতা।
মুখ্যমন্ত্রী লেখেন, রাজ্যপাল বিধানসভায় এসে অসৌজন্যমূলক আচরণ করে গিয়েছেন। সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের সামনে স্পিকারকে অপমান করেছেন। আম্বেদকরের স্মৃতিতে শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করে বিধানসভার সমালোচনা শুরু করে দিয়েছিলেন। এটা অত্যন্ত অসৌজন্যমূলক আচরণ বলে মনে হয়েছে। বিধানসভার মতো জায়গায় এহেন আচরণ অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। দীর্ঘদিন যাবত রাজ্যপাল অসাংবিধানিক আচরণ করে চলেছেন।
মমতা চিঠিতে লিখেছেন, রাজ্যপালকে নিয়মিত সরকারকে আক্রমণ করে আজেবাজে টুইট করেন। অকারণে অপমানজনক মন্তব্য করেন। বিধানসভায় পাস হয়ে যাওয়া বিল আটকে রাখেন রাজ্যপাল। আইন মেনে করা নিয়োগগুলিও তিনি মানতে চান না। লোকায়ুক্ত, রাজ্য মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান-সদস্য, এমনকি বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যদের নিয়োগ নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি। বারংবার অসাংবিধানিক কাজ করে চলা রাজ্যপালকে তাঁর পদ থেকে অপসারণের দাবি জানাচ্ছি।
আরও পড়ুন: Mamata-Dhankhar: শুধু টুইটেই ক্ষান্ত না, এবার মমতাকে হোয়াটসঅ্যাপ ধনখড়ের
রাজ্যপালের সঙ্গে রাজ্য সরকারের সংঘাত চলছে অনেক দিন ধরেই। ধনখড়ের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি রোজ টুইট করে রাজ্য সরকারকে আক্রমণ করেন। তাঁর টুইটের কথা উল্লেখ করে সোমবার নবান্নে মমতা বলেন, ‘রাজ্যপাল সুপার পাহারাদারি চালাচ্ছেন। প্রতিদিন তিনি টুইটে আমাদের কাউকে না কাউকে আক্রমণ করেই চলেছেন। এই পরিস্থিতিতে আমি রাজ্যপালকে আমার টুইট অ্যাকাউন্ট থেকে ব্লক করে দিলাম।’
এদিনই রাষ্ট্রপতির ভাষণের মাধ্যমে সংসদে বাজেট অধিবেশন শুরু হয়েছে। রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের ভাষণ শেষ হওয়া মাত্রই লোকসভায় তৃণমূলের দলনেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁর কাছে রাজ্যপালের অপসারণের আর্জি জানান। এর ঘণ্টা দুয়েকের মধ্যেই নবান্নে সাংবাদিক বৈঠক ডেকে রাজ্যপালকে তাঁর টুইটার অ্যাকাউন্ট থেকে ব্লক করার কথা জানান মুখ্যমন্ত্রী। তিনি যে রাজ্যপালের অপসারণ চেয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চার বার চিঠি দিয়েছেন, সে কথাও জানাতে ভোলেননি মুখ্যমন্ত্রী।