কাঁথি: দিঘার জগন্নাথ মন্দিরে (Jagannath Temple in Digha) পূর্ণাহুতি দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। বুধবার অক্ষয় তৃতীয়াতে দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের উদ্বোধন (Inauguration of Jagannath Temple in Digha) হবে। উদ্বোধনের কয়েক ঘণ্টা আগে শুরু হয়েছে মহাযজ্ঞ। সেখানে উপস্থিত রয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বিকেলে পূর্ণাহুতির কাজ শুরু হয়। মা-মাটি-মানুষ গোত্রে পুজো দিয়েছেন মমতা। নিজেই জানান মুখ্যমন্ত্রী। মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে রয়েছেন পুরীর জগন্নাথ মন্দিরের সেবাইত রাজেশ দ্বৈতাপতি ও ইসকনের কর্মকর্তা রাধারমণ দাস। পূর্ণাহুতির পর আরতি করতে দেখা যায় মুখ্যমন্ত্রীকে। ধ্বজাও ওড়ানো হয় ।
কলিঙ্গ শৈলীতে তৈরি জগন্নাথদেবের মন্দিরটি পুরীর মন্দিরের আদলে তৈরি। বুধবার ভগবান জগন্নাথের প্রাণ প্রতিষ্ঠা এবং মন্দিরের দ্বারোদ্ঘাটনের অনুষ্ঠান হবে। সোমবারের পর মঙ্গলবারও মন্দিরের ভেতরে চলছে ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠান। এদিকে বিপুল জন সমাগম সামলাতে দিঘার সমুদ্র সৈকত জুড়ে পুলিশি নজরদারি চোখে পড়ার মতো। অনুষ্ঠান সূচি জানিয়ে মমতা বলেন, “কালকে বেলা আড়াইটে থেকে অনুষ্ঠান শুরু হবে। তিনটেয় দ্বারোদ্ঘাটন হবে। তারপর সাধারণ মানুষের জন্য মন্দির খুলে দেওয়া হবে। সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও হবে। ডোনা গাঙ্গুলি, অদিতি মুন্সি, নচিকেতা এসেছে। জিৎ গাঙ্গলি, রচনা, দেব, জুন, সায়ন্তিকা, দেবলীনা-সহ আরও অনেকে এসেছে। একইসঙ্গে দিঘার মন্দির থেকে সর্বধর্ম সমন্বয়ের বার্তা মুখ্যমন্ত্রীর।
আরও পড়ুন: কাঁথি সনাতনী সম্মেলনে শর্ত সাপেক্ষে অনুমতি দিল হাইকোর্ট
এদিন পূর্ণাহুতির পর মমতা বলেন, “ইন্টারন্যাশনাল প্লেস অফ ট্যুরিজম হয়েছে দিঘার জগন্নাথধাম। এটা বাংলার জন্য তো বটেই তথা গোটা দেশের গর্ব। আমরা সকলে গর্বিত। এত সুন্দর স্থাপত্যের কাজ হয়েছে। সমস্ত ধর্মের লোকেরা এসেছেন। সবার নাম বলতে না পারলে ক্ষমা চেয়ে নেব। প্রত্যেকেই আমাদের অতিথি। যতটা সম্ভব হৃদয় দিয়ে চেষ্টা করেছি।” এরপরই মমতা বলেন, “ধর্ম তো কখনও মুখে প্রচার করে হয় না, ধর্ম হচ্ছে হৃদয়কে ছুঁয়ে যাওয়া। মানুষের আস্থা ও ভরসা, বিশ্বাস ও ভালোবাসা।” মা-মাটি-মানুষ গোত্রে পুজো দিয়েছেন মমতা। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, “পূর্ণাহুতির সময় পুরোহিতরা গোত্র জিজ্ঞেস করছিলেন। আমার গোত্রে আমি পুজো করি না। মা মাটি মানুষ গোত্রে পুজো করি। মা মাটি মানুষ ভালো থাকলেই সকলের ভালো। তাই সবার হয়ে অর্পণ করা হল।” তবে এবার কি পুরীর পর্যটকদের ভিড় টানবে দিঘা? প্রশ্নে মমতা বলেন, “ধর্মের অধিকার কারও একার নেই। সবার সব জায়গায় যাওয়ার অধিকার রয়েছে।”
প্রসঙ্গত, দিঘার সৈকত সরণির ধারে ২০ একর জায়গায় রাজ্য সরকারের তরফে ২৫০ কোটি টাকা খরচ করে বানানো হয়েছে জগন্নাথ ধাম। অবশেষে ৩০ এপ্রিল অক্ষয় তৃতীয়ার দিন তা মুখ্যমন্ত্রীর হাত ধরে উদ্বোধন হতে চলেছে। বুধবারই জগন্নাথ বলরাম সুভদ্রার বিগ্রহে হবে প্রাণ প্রতিষ্ঠা। পুরীর জগন্নাথ রীতি রেওয়াজ মেনেই হবে দিঘার জগন্নাথ মন্দিরের যাবতীয় অনুষ্ঠান। পুরীর মতোই দিনে ৯ বার ভোগ ও ৫৬ ভোগের রীতি মানা হবে। ভোগের জন্য আলাদা ভোগশালা বানানো হয়েছে। প্রবেশের চারটি দ্বার থাকবে। তবে পুরীর মতো পোশাকবিধি ও অহিন্দুদের প্রবেশে বাধা থাকবে না দিঘার মন্দিরে।
দেখুন ভিডিও