দিনহাটা: লক্ষ্মীর ভাণ্ডার (Lakshmi Bhandar), ১০০ দিনের টাকা, চাই না। রাজ্য সরকারের কাছে স্থায়ী নদী বাঁধের (Permanent River Dam) দাবি জারিধরলা ও ভারবান্দা গ্রামের বাসিন্দাদের। ঘটনাটি দিনহাটা (Dinhata) ১ নং ব্লকের গীতালদাহ 2 নং গ্রাম পঞ্চায়েতের দরীবস, দড়িবস কলোনি, জারিধরলা ও ভারবান্দা গ্রামের। বাসিন্দাদের দাবি, লক্ষীর ভান্ডার, ১০০ দিনের কাজের টাকা চাই না,একটি স্থায়ী নদী বাঁধ হলে তাদের সমস্যা সমাধান হবে। বাসিন্দারা জানান প্রত্যেক বছর ধরলা নদী তার পাড় ভাঙলেও এবছর ভাঙনের জেরে এলাকার চিত্রটা ভয়াবহ হয়ে ওঠে।
বিগত এক সপ্তাহের ভাঙনে ইতিমধ্যেই নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গিয়েছে ৭০-৮০ বিঘা জমি সেই সঙ্গে তিন চারটি বসতবাড়িও। অপরদিকে বিলীন হওয়ার অপেক্ষায় প্রহর গুনছে আরো বেশ কিছু চাষের জমি এবং কয়েকটি বাড়ি। বাসিন্দারা আশঙ্কা প্রকাশ করছেন আর দুই একদিনের মধ্যে সেই সব বাড়ি এবং চাষের জমিও নদী গর্ভে বিলীন হয়ে যাবে। এই চারটি গ্রামের বাসিন্দাদের অভিযোগ দুই বছর আগে ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পের আওতায় নদী ভাঙ্গন প্রতিরোধে যে নদী বাঁধ নির্মাণ করা হয়েছিল তার কাজ ছিল অত্যন্ত নিম্নমানের। খুব ছোট ছোট আকারের পাথর এবং বালি দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছিল সেই বাঁধ। আর তার ফলে এবারের বর্ষায় ধরলার প্রখর স্রোতে নিমিষেই ভেঙে গিয়েছে সেই বালির বাঁধ। বাঁধ ভেঙে নদীর গ্রাসে পড়েছে স্থানীয় বসতবাড়ি সহ চাষের জমি।
আরও পড়ুন: ফের ব়্যাগিয়ের অভিযোগ, এবার গুরুদাস কলেজ
ভোটের সময় স্থানীয় বিধায়ক জগদীশ বসুনিয়া এবং তৃণমূল কংগ্রেসের নেতৃত্ব এসে স্থায়ী নদী বাঁধের প্রতিশ্রুতি দিলেও ভোট পর্ব মিটে যাওয়ার তাদের দেখা মেলেনি। এখন বাসিন্দাদের একটাই দাবি, আর ১০০ দিনের প্রকল্পের আওতায় কোন বালির বাঁধ নয়, গ্রাম রক্ষা করতে এবার প্রয়োজন সেচ দফতরের নির্মাণ করা স্থায়ী নদীবাঁধের। যদিও এ বিষয়ে সিতাই বিধানসভার বিধায়ক জগদীশ বসুনিয়াকে ফোন মারফত প্রতিক্রিয়া চাওয়া হলে তিনি জানান, নদীবাঁধের বিষয়ে যাবতীয় অফিশিয়াল কাজের প্রসেস শেষ হয়েছে বর্ষার পরেই বাঁধের কাজ শুরু হবে। অপরদিকে বাসিন্দাদের অভিযোগের সত্যতা স্বীকার করে গীতালদহ ২ নং গ্রাম পঞ্চায়েতের সদ্য দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রধান আনোয়ারা বিবি জানান নদী ভাঙ্গন গিতালদহ ২ নং গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান সমস্যা। তিনিও প্রশাসনকে অনুরোধ করেন প্রশাসন যেন দ্রুত নদীবাঁধ নির্মাণের বিষয়ে সচেষ্ট হয়।
উল্লেখ্য উত্তরবঙ্গের অন্যতম প্রধান নদী জলঢাকা কোথাও ধরলা কোথাও শিঙ্গিমারি আবার কোথাও মানসাই নামে পরিচিত। গীতালদহ দুই নং গ্রাম পঞ্চায়েতের এলাকায় এই নদী ধল্লা নামে পরিচিত হয়ে ভারতীয় ভূখণ্ড অতিক্রম করে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। হিমালয়ের বরফগুলা জলে পুষ্ট এই নদী বরাবরই প্রচন্ড খরস্রোতা। বর্ষার সময় জলের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় আরো ভয়াবহ আকার ধারণ করে এই নদী। আর সেই কারণেই বারে নদী ভাঙ্গন।