কলকাতা: নন্দীগ্রাম বিধানসভায় শুভেন্দুর জয় বৈধভাবে হয়নি, বিস্ফোরক দাবি করলেন প্রাক্তন সিপিএম নেতা লক্ষণ শেঠ। শুক্রবার কলকাতা প্রেস ক্লাবে সাংবাদিক বৈঠকে লক্ষণ বলেন, নন্দীগ্রামের বিধানসবার নির্বাচনের ফলাফল বিচারাধীন বিষয়। এর বেশি আর কিছু বলব না। পাশাপাশি বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারীকে আক্রমণ করে বলেন, অপদার্থ, অকর্মণ্য এবং প্রতিহিংসা পরায়ণ। হলদিয়ার কোনও উন্নয়ন করেননি। নন্দীগ্রামে শুভেন্দুর জয় অপ্রত্যাশিত। নন্দীগ্রাম কৃষক আন্দোলনের মাটি। সেখানে বিজেপির জয় হতে পারে না। নন্দীগ্রামের মানুষ কখনওই বিজেপিকে জয়ী করবে না। এটা দৃঢ় বিশ্বাস ছিল। নন্দীগ্রাম আমার জানা বলেও জানান তিনি।
উল্লেখ্য, ২০১৬ সালে লক্ষ্মণ শেঠের স্ত্রী তথা প্রাক্তন বিধায়ক তমালিকা পণ্ডার মৃত্যু হয়। তাঁদের দুই সন্তান রয়েছে। স্ত্রীর মৃত্যুর পর তিনি একা হাতে সন্তান এবং সংসার সামলেছেন। একইসঙ্গে রাজনীতির ময়দান এবং ব্যবসায়িক ক্ষেত্রেও তিনি সমানভাবে কাজ করে গিয়েছেন। স্ত্রীর মৃত্যুর পর একাকিত্বে ভুগছিলেন তিনি। সেই সময় তাঁর সঙ্গে আলাপ হয় মানসীর।
আরও পড়ুন: Sedition Law | রাষ্ট্রদ্রোহ আইন আরও কঠোর করার সুপারিশ আইন কমিশনের
এদিন নিজের দ্বিতীয় বিয়ে নিয়ে বলেন, এক ইনিংসেই কি খেলা শেষ হয়ে যায়, হয় না। আমি চেয়েছি আমার পাশে একজন থাকুক। তাই বিয়ে করেছি। ১৯৮২ সাল থেকে তিনবার সুতাহাটা কেন্দ্র থেকে সিপিএমের প্রার্থী হয়ে জয়ী হয়েছিলেন লক্ষ্মণ শেঠ। ১৯৯৬ সালে তিনি তমলুক লোকসভা কেন্দ্র থেকে লড়াই করেছিলেন। কিন্তু, সেই বার পরাজিত হন তিনি। ২০১৪ সালে তাঁকে সিপিএম থেকে বহিষ্কার করা হয়। এরপর তিনি নিজে‘ভারত নির্মাণ মঞ্চ’ নামক একটি দল গড়েন। পরবর্তীতে ২০১৬ সালে তিনি BJP-তে যোগদান করলেও তাঁকে বছর দু’য়েকের মাথায় বহিষ্কার করা হয়। এরপর কংগ্রেসে যোগদান করেন তিনি।
এক সময় লক্ষ্মণকে হলদিয়ার শেঠ বলা হত। হলদিয়ার একচ্ছত্র সম্রাট ছিলেন তিনি। তাঁর দাপটও ছিল দারুণ। শিল্প শহরে সমস্ত কারখানার সিটু ইউনিয়ন তিনি নিয়ন্ত্রণ করতেন। হলদিয়ায় তাঁর একাধিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ছিল। বিএড কলেজ, ডেন্টাল কলেজ কী না। ক্রমে তাঁর বিরুদ্ধে নানা দুর্নীতির অভিযোগ উঠতে শুরু করে। নন্দীগ্রামে কেমিক্যাল হাবও তাঁর মাথা থেকেই এসেছিল। পরবর্তীকালে বুদ্ধদেব ভট্টাচার্যের ইচ্ছেতে দল তাঁকে বহিষ্কার করে।