জলপাইগুড়ি: উত্তরবঙ্গের (North Bengal) বিস্তীর্ণ চা বলয়ে এখন শুধুই অপেক্ষা। বহু বছরের আন্দোলন, অসংখ্য দাবি-দাওয়া আর আলোচনার পর অবশেষে শনিবার শিলিগুড়িতে বসতে চলেছে বহুল প্রতীক্ষিত বৈঠক, যেখানে রাজ্যের শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক চা শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি নির্ধারণ নিয়ে আলোচনা করবেন। এই বৈঠক ঘিরে চা বাগানের চার লক্ষেরও বেশি শ্রমিকের চোখে এখন শুধুই আশার ঝিলিক।
এই আলোচনায় শ্রমমন্ত্রী ছাড়াও থাকছেন ঋতব্রত বন্দ্যোপাধ্যায়, মালিকপক্ষ এবং বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠন। ২০১৭ সাল থেকে ‘জয়েন্ট ফোরাম’-সহ একাধিক সংগঠন চা শ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরির দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে আসছে। এর আগেও ২০টির বেশি বৈঠক হলেও এখনও পর্যন্ত কোনও চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হয়নি। ফলে শনিবারের এই বৈঠক হয়ে উঠেছে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
আরও পড়ুন: শিক্ষকের সংকট, প্রভাব পঠনপাঠনে, উপায় বাতলে দিল উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষাসংসদ
২০২২ সালে হাসিমারায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চা শ্রমিকদের অন্তর্বর্তীকালীন ১৫ শতাংশ মজুরি বৃদ্ধির কথা ঘোষণা করেছিলেন। বর্তমানে শ্রমিকেরা দৈনিক ২৫০ টাকা মজুরি পান। কিন্তু বহু শ্রমিক চাইছেন, তা অন্তত ৩৫০ টাকায় উন্নীত হোক। কারণ, উত্তরবঙ্গের দার্জিলিং, জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ার ও উত্তর দিনাজপুর জেলায় প্রায় ৩০০টি চা বাগানে কর্মরত প্রায় চার লক্ষ শ্রমিকের জীবনের মান অনেকটাই নির্ভর করে এই মজুরির উপর।
রাজ্যের শ্রমমন্ত্রী মলয় ঘটক জানিয়ে দিয়েছেন, শনিবারের বৈঠকে সকল পক্ষকে নিয়ে একটি সর্বসম্মত সিদ্ধান্তে পৌঁছনোর চেষ্টা হবে। তাঁর কথায়, “২০১১ সালে চা শ্রমিকদের মজুরি ছিল মাত্র ৬৭ টাকা। আমরা লড়াই করে তা বাড়িয়ে ২৫০ টাকা করেছি। এবার আশা করছি, ন্যূনতম মজুরি নিয়ে একটি ইতিবাচক সিদ্ধান্ত হবে।” পাশাপাশি শনিবারই শিলিগুড়িতে বসবে টি অ্যাডভাইজরি কমিটির বৈঠকও।
চা বলয়ের হাজার হাজার শ্রমিক আজ চেয়ে রয়েছেন এক নতুন ভোরের আশায়। এতদিনের প্রতিশ্রুতি, আলোচনার পর এবার কি মিলবে কাঙ্ক্ষিত ন্যূনতম মজুরি? শনিবারের বৈঠক হতে পারে এক ঐতিহাসিক মোড়বদলের দিন—আশা, উদ্বেগ আর প্রাপ্তির সন্ধিক্ষণে দাঁড়িয়ে উত্তরবঙ্গের চা শ্রমিক সমাজ।
দেখুন আরও খবর: