নদিয়া: প্রতিবছর জগদ্ধাত্রী পুজো ( Jagaddhatri Puja) এলেই উৎসবের আলোয় সেজে ওঠে কৃষ্ণনগর শহর। কৃষ্ণনগরে শতাব্দী প্রাচীন বুড়ির মার পুজো (Krishnanagar Buri Maa Puja 2025)। পুজোয় ভক্তদের উপচে পড়া ভিড়। শুরু হয়েছে শহরের ঐতিহ্যবাহী ও শতাব্দী প্রাচীন চাষাপাড়ার বুড়িমা পুজো। যা ভক্তদের কাছে এক আবেগ।
বাংলায় জগদ্ধাত্রী পুজো শুরু হয় কৃষ্ণনগরের রাজা কৃষ্ণচন্দ্রের হাত ধরে! তার আগে বঙ্গে দেবীর পুজো হত কি না, তা নিয়ে রয়েছে সংশয়। তবে রাজবাড়িতে পুজো শুরু হওয়ার পর ধীরে ধীরে তা ছড়িয়ে পড়ে এই শহর-সহ বঙ্গে। চাষাপাড়ার বুড়িমার পুজো শুরু হয় ১৭৭২ সালে। এবার পুজোর ২৫৩তম বর্ষ। ভক্তদের বিশ্বাস, মায়ের কাছে কিছু চাইলে তিনি ফেরান না। পুজো দিতে হাজার হাজার ভক্ত ভিড় জমান সকাল থেকেই । কৃষ্ণনগর ও তার পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে ছড়িয়ে রয়েছে বুড়িমার একাধিক গল্প।
চাষাপাড়া সর্বজনীনের এই পুজো শুরুর ইতিহাস নিয়ে রয়েছে দ্বিমত। কেউ বলেন, রাজা স্বপ্নাদেশ পেয়ে চাষাপাড়ার তৎকালীন লেঠেলদের এই পুজোর দায়িত্ব দেন। আবার অনেকের মতে, মায়ের পুজো রাজবাড়ির বাইরে ছড়িয়ে দিতে রাজা এই পুজো শুরু করেন। তবে পুজোর শুরু নিয়ে দ্বিমত থাকলেও ভক্তদের কাছে বুড়িমার মাহাত্ম্য নিয়ে কোনও সংশয় নেই। কৃষ্ণচন্দ্রের শহরে মূল পুজো হয় নবমীর দিনে। বুড়িমাকে সাজানো হয়েছে গতকাল সন্ধ্যায়। দেবী সেজে উঠেছেন ১০ কেজি সোনার অলংকারে। ভোররাতে প্রায় ৪টা নাগাদ মঙ্গলঘটে জল ভরে শুরু হয়েছে পুজো। বুধবার বেলা ১২ থেকে নেওয়া হয়েছে মানসিক দ্রব্যাদি।
আরও পড়ুন: সুন্দরবনের নামখানায় জগদ্ধাত্রী পুজোয় ‘কল্পলোক’
আজ বৃহস্পতিবার ভোর ৫টা ৪৪ মিনিটে শুরু হয়েছে সপ্তমী পুজো। ৯টা ৩০ মিনিটে হয়েছে পুষ্পাঞ্জলি। সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে শুরু হবে অষ্টমী পুজো। বেলা ১২টায় শুরু হয়েছে অষ্টমীর পুষ্পাঞ্জলি। দুপুর ১টা নাগাদ হবে নবমী পুজো। ২টো ৩০ মিনিটে নবমীর পুষ্পাঞ্জলি। বেলা ৩টেয় বলিদান। ৪টা নাগাদ পুজোর আরতি ও হোম। সন্ধ্যা আরতির সময় সন্ধ্যা ৬টায়। পরের দিন অর্থাৎ ৩১ অক্টোবর শুক্রবার সকাল ৮টা ৩০ মিনিটে শুরু হবে দশমীর পুজো। বিকেল ৪টেয় দেবীকে আসন থেকে নামানো হবে। পুজোর দিন সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টে পর্যন্ত নির্দিষ্ট স্থান থেকেই ভোগপ্রসাদ বিতরণ করা হবে বলেই জানানো হয়েছে পুজো কমিটির তরফে।
কৃষ্ণনগরে সবার শেষে বুড়িমার বিসর্জন হয়। মাকে রাজবাড়িতে নিয়ে গিয়ে তার পর কাঁধে করে জলঙ্গিতে বিসর্জন দেওয়া হয়। সেই বিসর্জন দেখতে রাস্তার ধারে ভিড় জমান ভক্তরা। এবারও কয়েক লক্ষ ভক্তের সমাগম হবে বলে মনে করছে পুজো কমিটি। পুজো শেষে নির্ধারিত নিয়ম অনুযায়ী বেহারারা দেবীকে কাঁধে তুলে নিয়ে যাবেন কৃষ্ণনগরের কদমতলা ঘাটে। যেখানে বিসর্জনের আগে খুলে নেওয়া হবে সেই সোনার গয়না। এরপর কড়া নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে গয়নাগুলি সংরক্ষণ করা হবে পরের বছরের পুজোর জন্য।
অন্য খবর দেখুন