২০১১ তে নতুন করে কলকাতাটিভি শুরু হল। আর সেই সময়ে এক ঘোষের পো এসে হাজির আমাদের দফতরে। তন্ময় ঘোষ, আমাদের নতুন এন্টারটেইনমেন্ট এডিটর। কত নামে যে ডাকা হত তাঁকে। ঘোষের পো বলে ডাকার চল তো ছিলই, ডাকলেই তন্ময় বলতো, আমার বাবাই যে আমার বাবা সেটা নতুন করে বলার কী আছে? এর মধ্যেই নতুন নাম হাজির, ঘোষ ক্যাটারারস, কেন? কারণ ওঁর কাছে গিয়ে আমরা বায়না ধরতাম, বেশি এনো না দুটো মটন পাসিন্দা, দুটো চাপ। আচ্ছা বেশ রয়াল থেকেই এনো। সঙ্গে কয়েকটা রুমালি রুটি। ও প্রথমে জিজ্ঞেস করতো আর কিছু?
তারপর ফোন করতো, ঘোষ ক্যাটারার থেকে বলছি, একটু মাল কম পড়ে গিয়েছে। দু’প্লেট পাসিন্দা আর দু’প্লেট মটন চাপ পাঠিয়ে দিন। আর ৬ টা রুমালি রুটিও দেবেন। ৩০ শতাংশ ডিসকাউন্ট সমেত মাল হাজির কলকাতা টিভির অফিসে। তো এইভাবে ও নিজেই হয়ে উঠল ঘোষ ক্যাটারার। আগে টাইমস অফ ইন্ডিয়াতে কাজ করেছেন, যোগাযোগ ভালো, বিশেষ করে ফিল্মসেলিব্রিটি আর চিকিৎসক। চিকিৎসকদের অর্ধেক আবার তাঁর বন্ধু। কত জনের কত সমস্যা মিটিয়েছে তিনি। জ্যোতি বসু হাসপাতালে প্রতিদিন তাঁর ছক্কা। সবচেয়ে আগে খবর তন্ময় দিত। এরই মধ্যে ওর হার্টেবাইপাস অপারেশন হল। কলকাতাটিভির আমরা কয়েকজন রক্ত দিতে গেলাম। দেওয়ার পরে তন্ময় বলেছিল, আমার সঙ্গে কলকাতাটিভির এখন রক্তের সম্পর্ক। এরপরে ওর কিডনির সমস্যা ধরা পড়ল। আমরা সবাই ছিলাম সঙ্গে। কিডনি ট্রান্সপ্লান্ট করিয়ে কিছুদিন বাড়িতে থেকে আবার দফতরে আসা শুরু করল। কদিন আগেই বলেছিল, জানো খাওয়া আর ঘোরা তো জীবন। আমার একটা গিয়েছে, খাওয়ার রেস্ট্রিকশন আর উঠবে না। কিন্তু ঘুরবো। একটা রাইস কুকার কিনে নিচ্ছি। ভাত, আলু, ডিম সেদ্ধ খেয়ে ওঘুরতে যাবো, স্পেনে যাওয়ার তাল করছিল তন্ময়। সে সুযোগ এসে গেল ভিসা পাসপোর্ট ছাড়াই আমাদের ঘোষের পো। আমাদের ঘোষ ক্যাটারার। তন্ময় ঘোষ এখন পাখি হয়ে উড়ছে। যা তন্ময় উড়ে যা। আর তোর খাবার বাধা ওনেই। প্লেনের টিকিট ও কাটতে হবে না। লোর কার কবিতা আওড়াতে আওড়াতে মাদ্রিদেই চলে যা বরং।