ওয়েব ডেস্ক: বিজ্ঞাপনের টাকা বাবদ সিএবির কাছে ৫১ লক্ষ টাকার বেশি দাবি, ২৯ বছর পরে মামলায় হারতে হল কলকাতা পুরসভাকে। ১৯৯৬ সালে বাম আমলে ইডেন গার্ডেন্সে ক্রিকেট বিশ্বকাপ খেলার বিজ্ঞাপনের কর বাবদ ৫১ লক্ষ টাকার বেশি সিএবির কাছে দাবি করেছিল কলকাতা পুরসভা। ২৯ বছর পরে সিএবির কাছে সেই মামলাতে হারতে হল কলকাতা পুরসভাকে। ১৯৯৬ সালে উইলস ওয়ার্ল্ড কাপের সূচনা অনুষ্ঠান করেছিল সিএবি (ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন অফ বেঙ্গল)। কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে (Eden Gardens)।১৯৯৬ সালের ১১ই ফেব্রুয়ারি বর্ণাঢ্য এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল।
এরপরে বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল খেলা হয়েছিল ওই বছরেরই ১৩ ই মার্চ। ইডেন গার্ডেন্স স্টেডিয়াম এর ভিতরে এবং বাইরে প্রচুর বিজ্ঞাপনের হোর্ডিং ব্যানার লাগানো হয়েছিল। যার জন্য ১৯৯৬ সালের ২৭ মার্চ কলকাতা কর্পোরেশন সিএবির কাছে মোট ৫১ লক্ষ ১৮,৪৫০ টাকা কর বাবদ দাবি করে। পুরসভার তরফে জানানো হয়১৯৮০ সালের কলকাতা পুর আইনের ২০৪ ধারা অনুযায়ী এই কর দাবি করা হয়েছে।
আরও পড়ুন:
সিএবির প্রেসিডেন্ট ও সেক্রেটারি পুরসভার এই দাবীকে অনায্য মনে করে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হন। মলত এই দাবির পেছনে যুক্তি ছিল। সিএবির যুক্তি, বিজ্ঞাপন দেওয়া হয়েছিল স্টেডিয়ামের ভিতরে, সেটা কোন পাবলিক প্লেস নয়। বাইরে থেকে ওই স্থান দেখা যায় না। যার ফলে ১৯৮০ সালের পুরো আইনের ২০৪ ধারা এক্ষেত্রে লাগু করা যায়না। কলকাতা পুরসভা একতরফা ভাবে সিএবির বক্তব্য না শুনে এই কর চাপিয়েছিল। যা স্বাভাবিক ন্যায়ের পরিপন্থী। কিসের ভিত্তিতে এই পরিমাণ অর্থ চাওয়া হল তা জানানো হয়নি। ভারতীয় সংবিধানের ২৮৫ ধারা অনুযায়ী কেন্দ্র সরকার ইডেন গার্ডেন্স স্টেডিয়ামের মা
লিক। কলকাতা পুরসভা তার উপরে ট্যাক্স বা কর চাপাতে পারে না।
কলকাতা হাইকোর্টের একক বিচারপতির বেঞ্চ১৯৯৬ সালের ২৭ শে মার্চ কলকাতা পুরসভার দাবি খারিজ করে দেয়। কিন্তু পুরসভা কলকাতা হাইকোর্টে একক বেঞ্চের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে ডিভিশন বেঞ্চে আপিল জানায়। ২৯ বছর পর সেই আপিল মামলার নিষ্পত্তি হয়েছে।
বিচারপতি অরিজিৎ বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিচারপতি কৌশিক চন্দের ডিভিশন বেঞ্চের নির্দেশ, ইডেন গার্ডেন্স স্টেডিয়ামের ভিতরের অংশ কোন পাবলিক প্লেস নয়। লোকজন সেখানে টিকিট কেটে খেলা দেখতে আসে। ফলে কলকাতা পুরো আইনের ২০৪ নম্বর ধারা এক্ষেত্রে লাগু করা যায় না। ফলে পুরসভা যে কর দাবি করেছে তা আইনের চোখে সঠিক নয়। ইডেন গার্ডেন্সের জমি কেন্দ্র সরকারের।এই পরিপ্রেক্ষিতে ডিভিশন বেঞ্চ কলকাতা হাইকোর্টের আগের দেওয়া নির্দেশের উপর হস্তক্ষেপ করার প্রয়োজন আছে বলে মনে করছে না। ফলে পুরসভার দাবি খারিজ করা হয়েছে।
দেখুন আরও খবর: