কলকাতা: জেলবন্দি পিনকন কর্তা মনোরঞ্জন রায়কে দিয়ে জোর করে তাঁর বিরুদ্ধে অভিযোগ লেখানো হয়েছে বলে দাবি কলকাতা টিভির সম্পাদক কৌস্তুভ রায়ের। একটি চিটফান্ড মামলায় আর্থিক প্রতারণার অভিযোগে কৌস্তুভ রায়কে সোমবার মাঝরাতে ইডি গ্রেফতার করে। মঙ্গলবার তাঁকে বিশেষ সিবিআই আদালতে হাজির করানো হয়। তিনি নিজেই সওয়াল করেন। আদালত কলকাতা টিভির সম্পাদককে দশ দিন ইডি হেফাজতে রাখার নির্দেশ দেয়। একদিন অন্তর তাঁকে মেডিক্যাল চেকআপ করাতে হবে বলেও আদালত জানিয়েছে। দুদিন অন্তর তিনি আইনজীবীদের সঙ্গে দেখা করতে পারবেন। পরবর্তী হাজিরা ২৮ জুলাই।
জেলবন্দি অবস্থাতেই চিটফান্ড সংস্থা পিনকনের কর্তা মনোরঞ্জন অভিযোগ করেন, কৌস্তুভ রায় তাঁকে প্রতারণা করেছেন। ইডির দাবি, মনোরঞ্জনকে শাসকদলের নাম করে হুমকি দিয়েছেন কৌস্তুভ। প্রিভেনশন অফ মানি লন্ডারিং আইনে তাঁকে সোমবার রাতে গ্রেফতার করা হয়েছে।
আরও পড়ুন: NDA Meet | মোদির উপস্থিতিতে এনডিএ-র বৈঠক, নিশানা বিরোধী জোট
মঙ্গলবার শুনানিতে ইডির আইনজীবী জানান, মনোরঞ্জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করে কৌস্তুভের নাম পাওয়া যায়। নগদে ৬৫ লক্ষ টাকারও বেশি লেনদেন হয়েছে। এক খাতের টাকা অন্য খাতে ব্যবহার করা হয়েছে। আরও তদন্তের প্রয়োজন রয়েছে। তাছাড়া আরও কিছু তথ্য মিলেছে। তারও তদন্ত হওয়া দরকার।
সওয়াল করতে গিয়ে কৌস্তুভ বলেন, এই আদালতে আমার আর একটি মামলা রয়েছে। ২০১৯ সালের একটি মামলায় আমাকে হেনস্তা করা হয়েছিল। সে ব্যাপারে আমি এই আদালত থেকেই রক্ষাকবচ পাই। আদালতের নির্দেশেই আমি হাজিরা দিয়েছি। হাইকোর্টে ইডি জামিন বাতিলের আবেদন করে। সেই মামলা এখনও বিচারাধীন। তারপরেও আমার অফিসে টানা ৮০ ঘণ্টা তল্লাশি চালায় আয়কর দফতর। হাইকোর্টে গেলে তারা কড়া পদক্ষেপ করে। আদালত আমার পক্ষে নির্দেশ দেয়।
কৌস্তুভ বলেন, পিনকনের কাছ থেকে বিজ্ঞাপন বাবদ অর্থ নেওয়া হয়েছিল। সব সংবাদমাধ্যমই বিজ্ঞাপনের জন্য অর্থ নেয়। তাঁর অভিযোগ পিনকনের লেজারে অসংগতি রয়েছে। তিনি বলেন, তারা স্টক এক্সচেঞ্জের তালিকাভুক্ত সংস্থা পিনকন। তারা যে চিটফান্ড, তা আমি কী করে জানব। তিনি জানান, মনোরঞ্জন এবং তাঁর স্ত্রী জেলে যাওয়ার পর আমি তাঁদের সাহায্য করার জন্য ৪৪ লক্ষ টাকা দিয়েছিলেন। মনোরঞ্জন জেলে যাওয়ার পর আমি জিএসটি বিল আপলোড করি অগাস্ট এবং সেপ্টেম্বর মাসে। তা ওদের লেজারে নেই।
পিনকন সংস্থার কর্তা ২০০ কোটি টাকা প্রতারণার অভিযোগ এনেছেন। কৌস্তুভ বলেন, ওই টাকা আমি মিটিয়ে দিয়েছি। সেই মামলায় আমার জামিন হয় ২০১৯ সালে। ২০২১ সালে ইডি আবার আমায় ডেকে পাঠায়। ১২ ঘণ্টা বসিয়ে রাখার পর আমাকে ছেড়ে দেওয়া হয়। আমি আদালতে ইডির বিরুদ্ধে হেনস্তার অভিযোগে মামলা করি। ২০২২ সালের সেপ্টেম্বর মাসে হাইকোর্ট নির্দেশ দেয়, আমাকে আর গ্রেফতার করা যাবে না। এরপর ইডি বলে, সপ্তাহে চারদিন একটা নির্দিষ্ট সময়ের জন্য আমাকে হাজিরা দিতে হবে। ইতিমধ্যে আদালতে ফের মামলা হয়। সেই মামলা এখনও বিচারাধীন। তারও পরে গত বছরের অগাস্ট মাসে আমার অফিসে আয়কর হানা হয়। তা নিয়েও মামলা বিচারাধীন রয়েছে। তার মধ্যেই গত রাতে আমাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসিয়ে গ্রেফতার করা হয়।