বর্ধমান: ফের রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিষেবার বেহাল দশার সাক্ষী রইল পূর্ব বর্ধমানের মেমারি। কালনা সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালে সিটি স্ক্যান মেশিন নেই। তাই এক গুরুতর অসুস্থ রোগীকে রাজ্য সড়ক দিয়ে প্রায় দেড় কিমি রাস্তা ট্রলি (Stretchers Patients Streets) করে নিয়ে যাওয়া হল সিটি স্ক্যান করাতে। মহিষপুরের বাসিন্দা সাহার আলি মল্লিক পেশায় দিনমজুর। তিনি বেশ কয়েকদিন ধরে অসুস্থ। কালনার সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে (Kalnar Super Specialty Hospital) ভর্তি করা হয় তাঁকে।
শনিবার কালনা হাসপাতালের ডাক্তার সিটি স্ক্যানের কথা লিখে দেন টিকিটে। সেখানে সিটি স্ক্যানের ব্যবস্থা নেই। তাই অন্যত্র নিয়ে যেতে হয় সাহার আলিকে। পরিবারের লোকেরা টোটো করে নিয়ে যাবে ভেবেছিলেন। কিন্তু সাহার আলির উঠে বসার ক্ষমতা নেই। টাকার অভাবে অ্যাম্বুল্যান্স ভাড়া করতে পারেননি ছেলে। ফলে একটি ট্রলিতে চাপিয়ে রাজ্য সড়ক ধরে সাহারকে নিয়ে যাওয়া হয়।
রাজ্য সড়কে সবসময় গাড়ির যাতায়াত। তার মধ্যেই সাহারকে ট্রলিতে (Stretchers Patients Streets) করে নিয়ে যাওয়া হল অন্যত্র। হাসপাতালের সহকারী সুপার গৌতম দাসের কথায়, অমানবিক ঘটনা। রোগীর পরিবার হাসপাতালের সঙ্গে কথা বললে এই ঘটনা ঘটত না।
আরও পড়ুন: বাংলাদেশি ভোটার, তৃণমূল নেত্রীর বিরুদ্ধে নির্বাচন কমিশনে নালিশ বিজেপির
এদিনই বাঁকুড়ার জয়পুর স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সামনে তোরণ করার জন্য বিশাল গর্ত খোঁড়ার কারণে রাস্তা বন্ধ ছিল। এক প্রসূতিকে তার জন্য প্রায় চার কিমি ঘুরে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা হয়। তাতে হাসপাতালে পৌঁছতে ঘণ্টাখানেক দেরি হয়। পথেই মৃত্যু হয় ওই প্রসূতির। মৃতার পরিজনেরা হাসপাতালের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন। কলকাতা টিভিতে সেই খবর সম্প্রচার হওয়ার পর টনক নড়ে স্থানীয় প্রশাসনের। তড়িঘড়ি সেই গর্ত বুজিয়ে ফেলা হয়। যদিও তৃণমূল পরিচালিত স্থানীয় পঞ্চায়েত তোরণের জন্য রাস্তা বন্ধের অভিযোগ মানতে চায়নি। আবার কয়েকদিন আগেই বাঁকুড়ার গঙ্গাজলঘাঁটিতে বেহাল রাস্তার কারণে ১৯ বছরের এক তরুণী গৃহবধূকে খাটিয়ায় শুইয়ে তা বাঁশে বেঁধে হাসপাতালে নিয়ে যান পরিবারের লোকেরা। পথেই মামণি রায় নাম ওই তরুণী মারা যান। গ্রামের রাস্তা অত্যন্ত খারাপ বলে সেখানে অ্যাম্বুল্যান্স যেতে রাজি হয়নি। এক টোটোচালকও যেতে চাননি।
যদিও রাজ্য সরকার সব সময় দাবি করে, রাজ্যের স্বাস্থ্য পরিষেবা নাকি দেশের সব রাজ্যের থেকে ভালো। সদ্য সমাপ্ত বিশ্ববঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে স্বাস্থ্য নিয়ে প্রায় ৫০টি মউ সই হয়েছে বলে মুখ্যমন্ত্রীর দাবি।
আরও অন্য খবর দেখুন