কেশিয়াড়ি: পঞ্চায়েত সমিতির বোর্ড গঠনের মুখেই দুই বিজেপি সদস্য তৃণমূলে যোগ দিলেন। শুক্রবার গভীর রাতে অভিজিৎ দাস ও ঝর্ণা শিট নাম বিজেপির ওই দুই সদস্য জেলা তৃণমূল সভাপতি সুজয় হাজরার হাত থেকে পতাকা তুলে নেন। জেলা তৃণমূল অফিসে ওতো রাতেও বেশ ভিড় ছিল।সদ্য বিজেপিত্যাগী পঞ্চায়েত সমিতির দুই সদস্যের সঙ্গে আগাগোড়া ছিলেন মহিলা তৃণমূলের রাজ্য সম্পাদক কল্পনা শিট-সহ জেলার একাধিক নেতানেত্রী।
অভিজিৎ ও ঝর্ণার দাবি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উন্নয়নের যজ্ঞে শামিল হতেই তাঁরা তৃণমূলে যোগ দিলেন। বিজেপির অভিযোগ, তৃণমূল ভয় দেখিয়ে ওই দুই সদস্যকে দল বদল করিয়েছে। যদিও ওই দুজন জানান, যেও জোর করেনি তাঁরা স্বেচ্ছায় তৃণমূলে যোগ দিয়েছেন। শাসক দলের জেলা সভাপতি সুজয় হাজরাও বলেন, এঁরা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকারের উন্নয়নের সঙ্গী হতে চেয়েছিলেন। বেশ কয়েকদিন ধরেই আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছিলেন তাঁরা। সেপ্টেম্বর মাসে অনুষ্ঠিতব্য দুয়ারে সরকারের শিবিরে থাকার কথাও জানিয়েছিলেন।তাই প্রাকৃতিক দুর্যোগ উপেক্ষা করে রাতেই তাঁদের যোগদান করানো হল।
২৩-৪ বিশাল ব্যবধানে কেশিয়াড়ি পঞ্চায়েত সমিতি দখল করলেও প্রবল গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কারণে বোর্ড গঠন করতে পারেনি তৃণমূল। দলের তরফে দলের তরফে কেশিয়াড়ি পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি হিসেবে উত্তম শিটের নাম প্রস্তাব করা হলেও, সেখানকার দাপুটে নেতা ফটিক রঞ্জন পাহাড়ি ও তাঁর অনুগামীরা বেঁকে বসেন।দলীয় ‘নির্দেশ’ উপেক্ষা করেই এবার পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি হতে চেয়েছিলেন ফটিক। কিন্তু তাঁর সেই চেষ্টা সফল হয়নি। দলীয় নেতৃত্বের বিরুদ্ধে গিয়ে ফটিক পঞ্চায়েত সমিতির ২৩ জন তৃণমূল সদস্যের মধ্যে কার্তিক এবং রামপদ সহ ১৪ জনকে সঙ্গে নিয়ে কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়ের করেন জেলা শাসক, পুলিশ সুপার, বিডিও এবং থানার আইসি-র বিরুদ্ধে। ফটিকদের অভিযোগ ছিল, দলীয় নেতৃত্বের নির্দেশে পুলিশ ও প্রশাসনের একটা বড় অংশ পঞ্চায়েত সমিতি গঠনে বাধা দিয়েছে। ১৪ অগাস্ট কলকাতা হাইকোর্টে মামলা দায়েরের পরের দিনই ফটিককে দল থেকে বহিষ্কার করে জেলা তৃণমূল নেতৃত্ব।
এই পরিস্থিতিতে কেশিয়াড়িতে এবারও তৃণমূলের বোর্ড গঠন ঘিরে অনিশ্চয়তা দেখা দেয়। অন্যদিকে, আগামী ৪ সেপ্টেম্বর পুনরায় কেশিয়াড়িতে বোর্ড গঠনের বা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি নির্বাচনের দিন ধার্য করেছে প্রশাসন। সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে, বোর্ড গঠনের জন্য তৃণমূলের প্রয়োজন অন্তত ১৪ জন পঞ্চায়েত সমিতির সদস্য। এই পরিস্থিতিতেই বিজেপির ৪ জন জয়ী সদস্যের মধ্যে ২ জন যোগ দিলেন তৃণমূলে। ‘বিদ্রোহী’ ও ‘বহিষ্কৃত’ নেতা ফটিক পাহাড়ির শিবিরে থাকা অন্তত ৫-৬ জনও নাকি পিছু হটেছে ইতিমধ্যে। তাঁরা নিজেদের ভুল স্বীকার করে, দলের মনোনীত উত্তম শিট-কেই পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি হিসেবে মেনে নিয়েছেন বলে জেলা তৃণমূল সূত্রে খবর।