মুর্শিদাবাদ: ব্রিটিশ আমলের এক শিরীষ গাছের হাজার হাজার টিয়া পাখি (Parrot) আগলে রেখেছেন গ্রামেরই এক বৃদ্ধ। বছরের পর বছর ধরে টিয়া পাখি পাহাড়া দিচ্ছেন বৃদ্ধ চাঁদ মিয়া। পাখি যাতে চুরি না হয়, সেদিকেও ভাল ভাবে নজর রেখেছেন নওদা ব্লকের কুঠিপাড়া গ্রামের চাঁদ মিয়া।
চোরাশিকারীদের হাত থেকে টিয়া পাখি বাঁচিয়ে রাখার উৎসাহ দেখে চাঁদ মিয়ার পাশে দাঁড়াল এবার বন দফতর। ভারতীয় বন্য প্রাণ সংরক্ষনের নোটিস বোর্ড টাঙিয়ে দেওয়া হল গাছের দু’পাশে। ‘টিয়া পাখি ধরা বা বিক্রি করা দণ্ডনীয় অপরাধ’ বলে ঘোষণা করল বন দফতর। যা দেখে স্বাভাবিকভাবেই ভীষণ খুশি চাঁদ মিয়া।
আরও পড়ুন: Jalpaiguri Incident | লাটাগুড়িতে পানীয় জলের দাবিতে সরব স্থানীয়রা
নওদা ব্লকের চাঁদপাড়া পঞ্চায়েতের কুঠিপাড়া গ্রামের বৃদ্ধ বাসিন্দা চাঁদ মিয়ার চায়ের দোকানের পাশেই রয়েছে বিশাল কড়ই বা শিরীষ গাছ। সূর্যের অতি বেগুনি রশ্মি থেকে রক্ষা করে যে কড়ই গাছ সেই গাছেই হাজার হাজার টিয়া পাখি বাসা বেঁধেছে। যে টিয়াপাখি দেখতে এবং তাদের কলকাকলি শুনতে, পথ চলতি মানুষ দাঁড়িয়ে পড়েন গাছের সামনে। বিকেলে ভিড় করেন বিভিন্ন এলাকার মানুষ।
বছরের পর বছর ধরে সেই টিয়া পাখি পাহারা দিচ্ছেন চাঁদ মিয়া। বয়সের ভারে চায়ের দোকানে আর বসেন না তিনি। কিন্তু বাড়ির পাশে দিন-রাত চোখে চোখে রাখেন কড়ই বা শিরীষ গাছটিকে। চাঁদ মিয়ার সেই পাখির প্রেম দেখে এগিয়ে এল বহরমপুর দক্ষিণ রেঞ্জ নদীয়া মুর্শিদাবাদ বনবিভাগ। টিয়া পাখির বিশাল ছবি সাটিয়ে ‘পাখি ধরা নিষিদ্ধ’ ঘোষণা করল বন দফতর।
বহরমপুর ফরেস্ট রেঞ্জ অফিসার অমিতাভ পাল বলেন, চাঁদ মিয়া বছরের পর বছর ধরে ওই গাছে টিয়া পাখিগুলোকে পাহারা দিচ্ছেন। সেই খবর পেয়ে গাছের পাশে নোটিস বোর্ড লাগানো হয়েছে। সেই টিয়া পাখি যাতে কেউ চুরি না করে বা বিক্রি না করে, তার কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। চাঁদ মিঞাকে সাহায্য করার জন্য ওই বোর্ড লাগানো হয়েছে। তাঁর মতো পাখি প্রেমীকে অভিনন্দন জানাচ্ছে বন দপ্তর।
এদিকে চাঁদ মিয়া বলেন, ২০০০ সাল থেকে টিয়া পাখি গুলি তিনি আগলে রয়েছেন। বর্তমানে প্রায় দু’হাজার টিয়া রয়েছে ওই গাছে। তিনি সামান্য একজন মানুষ, তাঁর পাশে বন দফতর দাঁড়িয়েছে দেখে তিনি ভীষণই খুশি। এছাড়াও দূর দুরান্ত থেকে মানুষ এসে গাছের নীচে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে পাখি দেখেন। শোনেন পাখিদের কিচির-মিচির। খুব ভালো লাগে। আজীবন তিনি ওই গাছ আগলে থাকবেন বলে জানান চাঁদ মিয়া।