কলকাতা: প্রায় পাঁচ দশক পর বিরল ‘অস্ট্রেলেশিয়ান গ্রাস আউল’ (Australasian Grass Owl) দেখা গেল মালদায়, তাও ক্যামেরাবন্দি অবস্থায়! এই অভূতপূর্ব ঘটনার সাক্ষী হয়েছেন তিন পাখিপ্রেমী—সন্দীপ দাস, সৈকত দাস ও স্বরূপ সরকার। গত ৯ মার্চ, কালিয়াচক ২ নম্বর ব্লকের পঞ্চানন্দপুরে গঙ্গার চরে এই পাখিকে দেখতে পান তাঁরা। জেলা বনাধিকারিকও স্বীকার করেছেন, এবারই প্রথম রাজ্যে এই পাখির ছবি তোলা সম্ভব হয়েছে। তবে নিরাপত্তার স্বার্থে তাদের সঠিক অবস্থান গোপন রাখা হয়েছে।
মূলত অস্ট্রেলিয়া এবং এশিয়ার কিছু অংশে দেখা যায় ‘অস্ট্রেলেশিয়ান গ্রাস আউল’ (Rare Owl Species)। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলিতে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলে এদের উপস্থিতি লক্ষ্য করা গিয়েছে। এই প্রজাতির পাখি মূলত ঘাসজমিতে বাসা বাঁধে এবং সেখানেই ডিম পাড়ে, যা তাদের নামকরণের অন্যতম কারণ। বোম্বে ন্যাচারাল হিস্ট্রি সোসাইটির (Bombay Natural History Society) তথ্য অনুযায়ী, ১৯২০ সালে জলপাইগুড়ির জঙ্গলে এবং তার ৬০ বছর পর, ১৯৮০ সালে বীরভূমের শান্তিনিকেতনে রাজ্যে শেষবার এই পাখির দেখা মেলে। তবে কোনওবারই তাদের ছবি তোলা সম্ভব হয়নি। অবশেষে, ৪৫ বছর পর ২০২৫ সালে মালদার গঙ্গার চরে আবারও এই দুর্লভ প্রজাতির দেখা মিলল, যা এক ঐতিহাসিক ঘটনা।
আরও পড়ুন: ‘আর্থ আওয়ার’-এ অংশ নিন, আর্জি রাজ্যপালের
ফরাক্কা ব্যারেজের উত্তর দিকে রতুয়ার কাটাহা দিয়ারা পর্যন্ত বিস্তৃত এলাকা ‘ইমপরট্যান্ট বার্ড এরিয়া’ (Important Bird Area) বা আইবিএ (IBA) নামে পরিচিত। বছরের বেশিরভাগ সময় এই অঞ্চলে বিভিন্ন প্রজাতির পাখির দেখা মেলে। বিশেষত শীতকালে প্রচুর পরিযায়ী পাখি এখানে আসে। বনবিভাগের সমীক্ষক দল জানাচ্ছে, চলতি বছর এই এলাকায় প্রায় ১৫০ প্রজাতির পাখি দেখা গিয়েছে। গত ডিসেম্বর থেকে শুরু হওয়া চার দফার সমীক্ষার কাজ এখনও চলছে।
গঙ্গার একাধিক চর এই আইবিএ-র অন্তর্ভুক্ত। কিছু চরে মানুষের বসতি থাকলেও অনেক চর এখনও জনমানবশূন্য। মূলত সেই চরগুলিতেই বিরল প্রজাতির পাখির দেখা মেলে। বিশেষজ্ঞদের মতে, এই অঞ্চলের সুরক্ষা বাড়ালে আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ প্রজাতির সন্ধান মিলতে পারে।
দেখুন আরও খবর: