কলকাতা: কয়লা কাণ্ডে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে (Abhishek Banerjee) ফের তলব ইডির। এই নিয়ে তৃতীয়বার তৃণমূল (TMC) কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদককে ডাকল এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট (ইডি)। ২১ সেপ্টেম্বর দিল্লিতে ইডির সদর দফতরে তাঁকে ডাকা হয়েছে।
ইডি সূত্রে খবর, অভিষেককে জিজ্ঞাসাবাদ করে কয়লা কেলেঙ্কারি সংক্রান্ত অনেক প্রশ্নের উত্তর পাননি তদন্তকারী আধিকারিকেরা। ৯ ঘণ্টার জিজ্ঞাসাবাদে উঠে আসেনি সমাধানসূত্র। বেশ কয়েকটি প্রশ্নের উত্তর এড়িয়ে গিয়েছেন তৃণমূল সাংসদ। কয়েকটি প্রশ্নের উত্তরে অভিষেক যা বলেছেন, তাতে সন্তুষ্ট নয় ইডি। তাই ফের তলব করে প্রশ্ন করতে চান আধিকারিকেরা।
আরও পড়ুন: ৯ ঘণ্টার ম্যারাথন জেরা, কয়লা পাচার কাণ্ডে ইডির প্রশ্নের লিখিত জবাব দিলেন অভিষেক
৬ সেপ্টেম্বর নয়াদিল্লিতে জামনগরে ইডি অফিসে যান অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়। সকাল ১১টায় অফিসে প্রবেশ করেন তিনি। আর রাত ৮টা নাগাদ বেরোন সেখান থেকে। এর পর সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে অভিষেক বলেন, আমাকে ডাকা হয়েছিল। টানা নয় ঘণ্টা তাঁদের প্রশ্নের লিখিত উত্তর দিয়েছি। তাঁদের বিরুদ্ধে আমার কোনও অভিযোগ নেই। এরপরই তিনি বিজেপি নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সরব হন তিনি।
হুঁশিয়ারির সুরে তিনি বলেন, ‘ভয় দেখিয়ে মাথা নত করা যাবে না। আপনি যাই করুন না কেন, সামনের ভোটে তৃণমূল জিতবেই। জীবন দিয়ে দেব, কিন্তু মাথা নোয়াব না। কাপুরুষরা আমাদের হারাতে পারেনি বলে প্রতিহিংসার রাজনীতি করছে।’ ২০২৪-এ বিজেপিকে হারাবোই। বাংলায় ৭০ আসন পেয়েই থামতে হয়েছে বিজেপিকে। ইডি-সিবিআই-আয়কর, যা কিছু আছে, ব্যবহার করতে পারেন। আমরা যে যে রাজ্যে যাব, সেখানেই বিজেপিকে হারাব।’
আরও পড়ুন: ‘শিরদাঁড়া বিক্রি করব না’, দিল্লিতে যাওয়ার আগে হুঙ্কার অভিষেকের
অভিষেক আরও বলেন, ‘১০ পয়সার দুর্নীতিও ধরা পড়লে তথ্য সামনে আনুন। ইডি-সিবিআই লাগানোর দরকার নেই। যাঁদের টাকা নিতে দেখা গিয়েছে, তাঁদের দেখতে পাচ্ছেন না কেন? রাজনৈতিক কারণেই কি তাঁদের ছাড় দেওয়া হচ্ছে? অন্য দলে যোগ দেওয়ার জন্যই কি তাঁদের দেখতে পাচ্ছে না ইডি-সিবিআই? আমার বিরুদ্ধে কোনও তথ্য-প্রমাণ থাকলে প্রকাশ্যে আনুন।
এর ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তাঁকে ফের দিল্লিতে ডেকে পাঠানো হয়। কিন্তু সে দিন যেতে পারেননি অভিষেক। তৃণমূল সাংসদ ইডিকে জানিয়ে দেন মাত্র ২৪ ঘণ্টার নোটিসে তাঁর পক্ষে কলকাতা থেকে দিল্লিতে গিয়ে হাজিরা দেওয়া সম্ভব নয়। অভিষেকের স্ত্রী রুজিরাকে একই কারণে ১ সেপ্টেম্বর দিল্লিতে ডেকে পাঠানো হয়েছিল। তবে তিনি যাননি। রুজিরার দু’টি শিশু সন্তান রয়েছে। করোনা পরিস্থিতিতে তাঁর পক্ষে সন্তানদের রেখে দিল্লি যাওয়া সম্ভব নয় বলে ইতিমধ্যেই ইডিকে চিঠি দিয়ে জানান তিনি।
আরও পড়ুন: রাজনৈতিক প্রতিহিংসা’র তরজা অব্যাহত, কয়লা পাচার কাণ্ডে এবার নোটিস অভিষেককে
কয়লা পাচার কাণ্ড নিয়ে গত বিধানসভা ভোটের আগে বিজেপি নেতারা রাজ্যজুড়ে প্রচারে সময় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়কে নানাভাবে আক্রমণ করেছিলেন। কিন্তু কোনও সময় অভিষেকের বিরুদ্ধে কোনও প্রমাণ সামনে আনতে পারেননি।