বর্ধমান: হাউস ফর অলের (House For All) কিস্তির টাকা না পেয়ে দাঁইহাট পুরসভার চেয়ারম্যানকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখালেন উপভোক্তারা। শুক্রবার বিকালে এমন ঘটনায় উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। মোতায়েন রাখা হয় দাঁইহাট ফাঁড়ির পুলিসকে। বিক্ষোভ এমন পর্যায়ে পৌঁছয় যে এক কাউন্সিলর বোঝাতে গেলে তাঁকে ধরেও চরম বিক্ষোভ দেখান উপভোক্তারা। তাঁদের দাবি, মাসের পর মাস আমরা ঘর ভেঙে ভিত তৈরি করে অন্যের বাড়িতে বাস করছি। এখনও কিস্তির টাকা দেওয়া হচ্ছে না। শেষে চেয়ারম্যান টাকা দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলে বিক্ষোভ ওঠে। ঘটনায় ব্যপক শোরগোল পড়ে দাঁইহাট শহর জুড়ে।
দাঁইহাট পুরসভার চেয়ারম্যান প্রদীপ কুমার রায় বলেন, আমরা পুরো ও নগরন্নোয়ন দপ্তরে বৈঠক করেছি৷ এখনও কেন্দ্রীয় সরকার যে শেয়ার দেয় সেটা তারা দিচ্ছে না। ফলে জটিলতা তৈরি হয়েছে। আগস্ট মাসে আশাকরি উপভোক্তাদের অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকে যাবে৷
আরও পড়ুন: Murshidabad Incident | মুর্শিদাবাদে এক তরুণীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগে গ্রেফতার চিকিৎসক
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন দাঁইহাট পুরসভার বোর্ড অফ কাউন্সিলরের বৈঠক ছিল। সমস্ত ওয়ার্ডের কাউন্সিলররা হাজির ছিলেন এদিনের বৈঠকে। এমন সময় চেয়ারম্যানের ঘরের সামনে উপভোক্তারা জড়ো হয়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। শহরের ১৪ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা লক্ষ্মীকান্ত ঘোষ বলেন, আমি ঘরের জন্য দ্বিতীয় কিস্তির টাকা এখনও পাইনি৷ এদিকে ঘর ভেঙে খুব কষ্টের মধ্যে রয়েছি। বর্ষাকালে বৃষ্টির জন্য একটা ত্রিপলও দেয় না আমাদের। ১২ নম্বর ওয়ার্ডের মসজিদ পাড়ার বাসিন্দা রাজীব শেখ বলেন, আমি জানুয়ারী মাসে ঘরের জন্য ভিত কেটেছি। সেখানে আবার মাটি বুঝে যাচ্ছে। আবার পয়সা খরচ করে ভিত কাটতে হবে। এখনও প্রথম কিস্তির টাকাই দেওয়া হয়নি৷ ১১ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা সন্তু দাস, ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা সেন্টু শেখ বলেন, আমাদের শুধু প্রতিশ্রুতিই দেওয়া হচ্ছে। কিস্তির টাকা দিচ্ছে না পুরসভা। এদিকে আমাদের সরকারি ঘরের জন্য পুরানো ঘর ভাঙতে হয়েছে। এখন কোনওরকমে অন্যের বাড়িতে মাথা গুঁজে রয়েছি। কবে সরকারি ঘর তৈরি সম্পূর্ন হবে তা নিয়েই দুশ্চিন্তায় রয়েছি।
পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, বাড়ি তৈরির জন্য ৫ টি ধাপে উপভোক্তাদের ব্যাঙ্কের অ্যাকউন্টে টাকা আসে। টাকার পরিমান অনুযায়ী ধাপে ধাপে বাড়ি তৈরি করতে হয়। শহরে ২০২০-২১ বর্ষে মোট ৬১৮ টি বাড়ি অনুমোদন হয়৷ তারমধ্যে ৫৩৩ জন উপভোক্তা তাঁদের পুরানো বাড়ি ভেঙে ভিত তৈরি করেছেন। তারমধ্যে ৭৬ জন মাত্র প্রথম কিস্তির টাকা পেয়েছেন। বাকি ৪৫৭ জন উপভোক্তা এখনও টাকা পাননি। সেই কারণে এদিন পুরসভায় বিক্ষোভ দেখান উপভোক্তারা।