বাঁকুড়া: পাইপ বসলেও বহু গ্রামে পানীয় জল (Drinking Water) পৌঁছয়নি। অথচ পাইপ লাইনের ত্রুটির কারণে বহু জায়গায় অবাধে অপচয় (Waste) হচ্ছে জলের। অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রীর কড়া হুঁশিয়ারির পরেও নির্বিকার জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর (Public Health Department)। রাজ্যের খরা পীড়িত জেলাগুলির অন্যতম বাঁকুড়া (Bankura)। বর্ষাকাল বাদ দিলে বছরের বাকি সময় সামান্য পানীয় জলের জন্য হাহাকার করতে হয় বিভিন্ন গ্রামের বাসিন্দাদের। বহু গ্রামে জল সরবরাহের জন্য পাইপ লাইন পৌঁছলেও কার্যত জল হীন থেকে গিয়েছে গ্রামগুলি। কিন্তু অন্যদিকে পাইপ লাইন ত্রুটির কারণে প্রতিদিন নষ্ট হচ্ছে হাজার-হাজার গ্যালন পানীয় জল। তৃণণূল বিধায়কের সাফাই, জলের চাপে পাইপ ফেটে যেতে পারে তাই মেরামত হয়নি বলে জানিয়েছে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতর।
কোটি কোটি টাকা খরচ করে বাঁকুড়া জেলায় রূপায়িত হয়েছে একাধিক জল প্রকল্প। যার মধ্যে সব থেকে বড় দুর্গাপুর ব্যারেজের প্রকল্প। সেখান থেকে প্রায় ৪০ কিলোমিটার পাইপ লাইনে জল নিয়ে গিয়ে বাঁকুড়ার একাধিক ব্লকের গ্রামে তা পৌঁছে দেওয়ার উদ্যোগ। সেই কাজ অনেকাংশে সম্পূর্ণ হয়ে গেলেও বিভিন্ন কারণে বহু গ্রাম এখনও থেকে গিয়েছে নির্জলা। জেলায় এমন বহু গ্রাম আছে যেখানে জল সরবরাহের পাইপ লাইন পৌঁছেছে। বাড়ি-বাড়ি দেওয়া হয়েছে জলের সংযোগও। কিন্তু দুই বছরের বেশি সময় পেরিয়ে গেলেও জল পৌঁছয়নি গ্রামে। জেলার বিভিন্ন গ্রামে যখন এমন অবস্থা তখন প্রশাসনের নাকের ডগায় বহু জায়গায় অবাধে পাইপ লাইনের ছিদ্র দিয়ে গড়িয়ে যাচ্ছে হাজার হাজার গ্যালন জল। দুর্গাপুর ব্যারেজ থেকে বাঁকুড়ায় যাওয়া মূল পাইপ লাইনে দিনভর গড়িয়ে যায় বিপুল পরিমাণ জল। এজন্য পাইপ লাইনের যান্ত্রিক ত্রুটিকেই দায়ী করছেন স্থানীয়রা।
আরও পড়ুন: কোর্টের নির্দেশ সত্ত্বেও পুলিশের সহযোগিতা নেই, তৃণমূল নেতার বিরুদ্ধে এসপির দ্বারস্থ কৃষক
স্থানীয়দের দাবি, পাইপলাইনে এই যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে প্রতিদিন যে পরিমাণ জল অপচয় হয় তা দিয়ে বাঁকুড়ার মতো খরাপীড়িত জেলার বহু গ্রামে পানীয় জলের চাহিদা মেটানো সম্ভব হত। বাঁকুড়া-দুর্গাপুর ব্যস্ততম রাজ্য সড়কের ধারে স্থানে-স্থানে এভাবে পাইপ লাইন থেকে জল গড়িয়ে যাওয়ার ঘটনা অজানা থাকার কথা নয় জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরের। মুখ্যমন্ত্রীও জল অপচয়ের বিষয়ে প্রকাশ্যেই হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। কিন্তু তারপরেও কেন ব্যবস্থা নেওয়া হয় না জানেন না কেউই। বিরোধীদের দাবি, একদিকে রাজ্য সরকারের সদিচ্ছার অভাব, আর অন্যদিকে শাসক দলের স্থানীয় নেতা নেত্রীরা সবক্ষেত্রেই কাটমানি খাচ্ছেন। মানুষের প্রয়োজনে তাঁদের নজর নেই। তাই এমন অবস্থা।
বড়জোড়ার তৃণমূল বিধায়ক অলোক মুখোপাধ্যায় অবশ্য অন্য যুক্তি দেখিয়েছেন। তাঁর দাবি, বিষয়টি নিয়ে জনস্বাস্থ্য কারিগরি দফতরকে জানানো হলে তাঁরা যুক্তি দিয়েছেন, পাইপ লাইনের ওই অংশগুলি দিয়ে জল না বেরোলে জলের চাপে ফেটে যেতে পারে পাইপ। তাই সব জেনেশুনেও জল অপচয় বন্ধের চেষ্টা হয়নি।
দেখুন অন্য খবর: