কলকাতা, ৮ জুলাই: একজন বিধায়ক। রাজ্যের বিরোধী দলনেতাও বটে। অপর জন সাংসদ। রাজ্য বিজেপির সভাপতি। আবেদন জানালেন বিজেপির রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী দ্রৌপদী মুর্মুকে ভোট দেওয়ার জন্য। কিন্তু, সুকান্ত মজুমদার আর শুভেন্দু অধিকারীর সই করা তৃণমূল বিধায়ক-সাংসদদের কাছে পাঠানো সেই চিঠির ছত্রে ছত্রে ফুটে উঠল ঔদ্ধত্য।
এ যেন এক সোনার পাথর বাটি।
এক দিকে চিঠি দিয়ে আবেদন জানাচ্ছেন ভোট দেওয়ার। বলছেন, দ্রৌপদী মুর্মুকে ভোট দিলে দেশ-দশের কী কী উপকার হবে। রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর কী ভাবে দেশের কল্যাণে তিনি কার্যকর ভূমিকা রাখবেন- চিঠিতে সে কথাই উল্লেখ করেছেন শুভেন্দু-সুকান্তরা। মোদ্দা কথা, ভোট দেওয়ার আবেদন। কিন্তু, সেই আবেদন-পত্রতে ছাপার অক্ষরে লেখা, ‘দ্রৌপদীদেবীর বিজয় নিশ্চিত’। এই বাক্যটি নিয়ে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে রাজনৈতিক জল্পনা-চাপানউতোর।
শুভেন্দুদের পাঠানো এই চিঠির বয়ানে ঔদ্ধত্য রয়েছে বলে তৃণমূলের পক্ষ থেকে অভিযোগ করা হয়েছে। আগামী কাল, শনিবারই রাজ্যে প্রচারের জন্য আসছেন দ্রৌপদী মুর্মু। তার আগেই শুভেন্দুদের এই চিঠি তৃণমূল কংগ্রেস ভাল চোখে নিচ্ছে না। চিঠি নিয়ে বলতে গিয়ে দলের সাংসদ সৌগত রায় বলেন, “শুভেন্দু অধিকারী ও সুকান্ত মজুমদার দু’জনে মিলে চিঠি লিখেছেন এনডিএ রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী দ্রৌপদী মুর্মুকে ভোট দেওয়ার জন্য। আমরা দায়বদ্ধ আমাদের প্রার্থী যশবন্ত সিনাকে ভোট দেওয়ার জন্য। ওদের এই চিঠিতে ওরা লিখেছেন দ্রৌপদী মুর্মুর জয় নিশ্চিত। এই চিঠির মধ্যে মধ্যে ঔদ্ধত্য আছে।”
কাল সকাল ১০টায় কলকাতা বিমান বন্দরে নামবেন মুর্মু। সোজা চলে যাবেন নিউ টাউনে। সেখানে এক অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার কথা। তৃণমূল কংগ্রেসের বিধায়ক-সাংসদদের সঙ্গে দেখা করার কথা রয়েছে তাঁর। দেখা করার সম্ভাবনা রয়েছে তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গেও।
কিছু দিন আগেই দ্রৌপদী মুর্মুকে প্রার্থী করা নিয়ে তৃণমূল নেত্রীর এক মন্তব্য ঘিরে রাজনৈতিক জল্পনা শুরু হয়। মমতাই ছিলেন রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বিরোধীদের এক মঞ্চে আনার মূল কাণ্ডারি। তাঁর উদ্যোগেই যশবন্ত সিনহাকে সর্বসম্মতিক্রমে প্রার্থী করে বিরোধীরা। কিন্তু, দ্রৌপদী মুর্মুকে প্রার্থী করার মমতা বলেন, আগে বিজেপি এই নামটা ঘোষণা করলে তাঁকে সমর্থন করার বিষয়টি আলোচনা করা যেত।