কুলপি : নিহত আইনজীবীর পরিবারকে প্রাণে মেরে ফেলার হুমকি। তাঁর পরিবারকে আদালত পুলিশি নিরাপত্তার নির্দেশ দেওয়ার পরেও হুমকির মুখে পড়তে হচ্ছে। পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলল আদালত।
সম্প্রতি নিশ্চিন্দাপুরে বাসবেন্দ্র মাইতির পরিবারের ১৫৩ একর জমি এবং সোনার গয়না উধাও হওয়ার ঘটনা কিছু দিন আগে সামনে আসে। পেশায় চিকিৎসক বাসবেন্দ্র দীর্ঘদিন কলকাতায় থাকতেন সরকারি চাকরির জন্য। অবসর নেওয়ার পর দেশের বাড়ি ফিরে গিয়েছিলেন তিনি। দেশের বাড়িতে থাকাকালীন ওই সম্পত্তি দখলদারির ঘটনা জানতে পারেন তিনি। সম্পত্তি ফিরে পেতে নিম্ন আদালতে মামলা করেন তাঁর স্ত্রী আইনজীবী কৃষ্ণা দাস মাইতি। অভিযোগ, গোটা অপরাধের পিছনে স্থানীয় প্রভাবশালীদের হাত ছিল। মামলা তুলে নেওয়ার জন্য কৃষ্ণা দাস মাইতিকে লাগাতার হুমকির সম্মুখীন হতে হয়। গত ১২ অক্টোবর পুলিশে অভিযোগও দায়ের করেন তিনি। কিন্তু পুলিশ বিষয়টিকে পাত্তা দেয়নি। গত বছর ২৯ অক্টোবর তাঁর বাড়িতে ঢুকে হামলা চালায় দুষ্কৃতীরা। কৃষ্ণাকে বেধড়ক মারধরও করা হয়। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।
নিহত কৃষ্ণার মেয়ে পিয়ালিও আইনজীবী। তাঁর অভিযোগ, পুলিশ ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০৪ ধারায় অর্থাৎ অনিচ্ছাকৃত মৃত্যু ঘটানোর অভিযোগে মামলা দায়ের করেছিল। অথচ ময়নাতদন্তের রিপোর্ট বলছে, মাথায়, বুকে ও পেটে আঘাত ও দেহে অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণের ফলে তাঁর মায়ের মৃত্যু হয়েছে। তাঁরা ৩০২ ধারায় খুনের অভিযোগ দায়ের করার আবেদন জানালেও ডায়মন্ড হারবার আদালত তা খারিজ করে দেয়। তাঁর আরও অভিযোগ, বিচারক এজলাসে বসে পক্ষপাতমূলক মন্তব্যও করেন।
হাইকোর্টের বিচারপতি জয় সেনগুপ্তর নির্দেশ ছিল, সুন্দরবন পুলিশ জেলার এসপিকে তদন্তে নজরদারি চালাতে হবে। পরবর্তী শুনানিতে ডায়মন্ড হারবারের এসিজেএম আদালতের ওই রায়ের কপি আদালতে পেশ করতে হবে। পিয়ালির পরিবারকে পুলিশি নিরাপত্তা দিতেও বলা হয়।
কেন পুলিশ নিজে খুনের ধারা প্রয়োগ করল না, কেন হাইকোর্ট হস্তক্ষেপ করার পরে খুনের ধারা দেওয়া হল, তা নিয়ে তদন্তকারীদের ভূমিকায় উষ্মা প্রকাশ করেছে আদালত।
আদালত আরও বলে, একজন বিচার চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হওয়ার পরে খুন হয়েছেন। পেশায় তিনি আইনজীবী ছিলেন। আর এখন তাঁর আইনজীবী মেয়ে মায়ের খুনের অভিযোগের বিচার চেয়ে আদালতে এসে হুমকির মুখে পড়ছেন। তাঁর বাড়ির ছবি তুলে নিয়ে যাচ্ছে দুষ্কৃতীরা। ডায়মন্ড হারবার কোর্টে যাওয়ার সময় তাঁর উপরে নজরদারি চলছে। এটা কী হচ্ছে! পিয়ালির যদি কিছু হয়, তার দায় কে নেবে? আপনার পুলিশ নেবে সেই দায়িত্ব? পুলিশকে নির্দেশ দেওয়ার পরেও তাঁরা হুমকির মুখে পড়েছেন। ফলে পুলিশ কেমন নিরাপত্তা দিয়েছে সেটা স্পষ্ট। ৫ ফেব্রুয়ারি মামলার পরবর্তী শুনানি।
আরও অন্য খবর দেখুন
https://kolkatatvonline.in/kolkata/police-commissioner-of-barrackpore-in-the-face-of-justice-kolkatatv-online/